হাইলাইটস
- মন চাইছে বিন্দাস ছুটি কাটাতে।
- সি বিচ, ওয়াটার রাইড, প্যারাগ্লাইডিং, নাইট পার্টি, সি ফুড, সান বাথ, প্রচুর দেশি বিদেশি অচেনা বন্ধু সব মিলিয়ে আনন্দের ছুটি কাটাতে চাইছে মন
- এরকম আনন্দ বিদেশে পাওয়া যেতেই পারে। আর দেশের মধ্যে মিলতে পারে গোয়ায়।
গোয়া ভ্রমণ
গোয়া ভ্রমণ মানেই বাগা, ক্যান্ডোলিন, কালাঙ্গুতে সৈকতে সারাদিন কাটানো। বিচে আনন্দ করার পাশাপাশি গ্র্যান্ড আইল্যান্ড, দুধসাগর জলপ্রপাত, অগুয়াদা দুর্গ, টিটো স্ট্রিট সহ প্রায় সমস্ত জনপ্রিয় জায়গাগুলিও তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেন পর্যটকরা। আর বর্তমানে সেই ভিড়ে রয়েছেন দেশি পর্যটকরা। এমনকি মহারাষ্ট্র থেকে সপ্তাহান্তেও গাড়ি চড়ে গোয়া পাড়ি দিচ্ছেন অনেকে। তবে বেশিরভাগ পর্যটকই মুম্বই, দিল্লি, কলকাতা, হায়দরাবাদ এবং চেন্নাইয়ের বাসিন্দা।
পাহাড় ঘেরা সমুদ্র সৈকতগুলির সৌন্দর্য যেমন ভাষায় প্রকাশ করা যায় না তেমনই প্রকাশ করা যায় না সেখানে আনন্দ করার অনুভূতি। আর গোয়ার স্পেশাল পার্টি বা পাবে সময় কাটানোর তো মজাই আলাদা। গোয়ার সামুদ্রিক খাবারের আদর্শ সঙ্গী সেখানকার স্পেশাল অ্যালকোহল। আজ্ঞে হ্যাঁ, স্পেশাল। সাধারণ দোকানের অ্যালকোহল ছাড়াও পর্তুগীজদের প্রাক্তন উপনিবেশে পাওয়া যায় এখানকার বিশেষ অ্যালকোহল। এরই মধ্যে একটি অ্যালকোহলের নাম হল ফেনি। আর এই সাবেকি অ্যালকোহল ফেনিকে উৎসর্গ করে গোয়ায় তৈরি হয়েছে এক অ্যালকোহল মিউজিয়াম।
ফাইন্ডিং ফেনি
ফেনি শব্দটির উৎপত্তি ফেনা থেকে। বোতল থেকে ঢালার সময় গ্লাসে প্রচুর পরিমাণে ফেনা উৎপন্ন হয়। সে কারণেই এর নাম ফেনি। এটি দক্ষিণ গোয়ার সাবেকি পানীয়। ২০১৬ সালে গোয়ার সরকার এই পানীয়কে ঐতিহ্যবাহী বলে ঘোষণা করে। এবং বিশ্বজুড়ে এর রফতানির অনুমতি দেয়। ফেনির ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে দেখা যায় যে গোয়ার পাশাপাশি ব্রাজিলেও পর্তুগীজরা উপনিবেশ তৈরি করেছিল। দুই জায়গাতেই পর্তুগীজদের সংস্কৃতি চলে। বলা হয় যে প্রায় ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগীজদের হাত ধরেই গোয়ায় কাজুর চাষ শুরু হয়। এবং একই সঙ্গে চালু হয় ফেনি পানীয়টিরও।
কাজু ফেনি এবং নারকেলের ফেনিই সবচেয়ে প্রচলিত এবং জনপ্রিয়। অবশ্য বর্তমানে এই ফেনির আরও কিছু প্রকারভেদ রয়েছে। সেগুলির জনপ্রিয়তাও নিছক কম নয়। দক্ষিণ গোয়ার ফেনিতে অ্যালকোহলের মাত্রা বেশি থাকে তুলনায় উত্তর গোয়ার ফেনিতে সেই মাত্রা থাকে খানিকটা কম। কাজুর ফল পাকলে তা ফেনি তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে নামে কোকোনাট ফেনি হলেও এটি কিন্তু আসলে তালের ফেনি। তালের ফাঁপিয়ে তা থেকে এই ফেনি তৈরি হয়। আর কোকোনাট ফেনি শুধুমাত্র তৈরি হয দক্ষিণ গোয়ায়। কাজু ফেনি পাওয়া যায় মোটামুটি ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। কাজুর উৎপাদনের হারের উপর কাজু ফেনির দাম নির্ভর করে। কোকোনাট ফেনি আবার সারা বছরই তৈরি হযে থাকে। বর্ষাকালে ফল বেশি হওয়ায় ফেনি তৈরিও হয় প্রচুর।
ফেনির সম্মান
সাবেকি অ্যালকোহলটিকে সম্মান জানিয়ে গোয়ার ব্যবসায়ী নন্দন কুড়চড়কর খুলে ফেলেছেন একটি সংগ্রহশালা। গোয়ার ক্যাডোলিম গ্রামের একটি ছোট্টো বিচে অবস্থিত এটি। সংগ্রহশালার মালিক অ্যান্টিক কালেক্টর হিসেবে বেশ খ্যাত। সেই কারণেই অ্যান্টিক অ্যালকোহল ফেনির প্রতি তাঁর এত ভালোবাসা। সংগ্রহশালাটিতে রয়েছে ফেনি সংক্রান্ত শতাধিক শিল্পভাবনা, ফেনি তৈরির উপাদান, ফেনি সংক্রান্ত নানা তথ্যের যাবতীয় সম্ভার। এছাড়াও সেখানে রয়েছে গোয়ার নানা সাবেকি পান পাত্রের নিদর্শন। মোটকথা ফেনির ইতিহাস জনসাধারণকে জানানোই সংগ্রহশালার মালিকের প্রধান উদ্দেশ্যে। ব্রাজিল থেকে ফেনির গোয়ায় আসার ঘটনার সুন্দর বিবরণ দিতে তিনি সদা তৎপর। তাছাড়া এই সংগ্রহশালা যেমন পর্যটকদের আকর্ষণ করবে তেমনই স্থানীয়দের অর্থ সংস্থানেও সাহায্য করবে বলে আশা সকলের।
ফেনি-লো রে
গোয়ার প্রায় যে কোনও পাব বা রেস্তোরাঁতে গেলেই ফেনির সন্ধান পাবেন পর্যটকরা। নিট, বরফ, ককটেল বা ফলের রস যেমন খুশিভাবে ফেনি পান করা যায়। আর তার সঙ্গে যদি থাকে সি ফুড তাহলে তো কেয়া বাত। গোয়ার সমুদ্র সৈকত, পাহাড়, গীর্জা, নদীর পাশাপাশি এবার থেকে ফেনি সংগ্রহশালাটিকেও কিন্তু ট্যুর প্ল্যানে রাখতে ভুলবেন না। কোভিড পরবর্তী গোয়ায় গিয়ে আরেকটি নতুন অভিজ্ঞতা হবে সকলের।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-31 16:39:38
Source link
Leave a Reply