হাইলাইটস
- সম্প্রতি ইউনাইটেড স্টেটসের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সিঙ্গাপুর থেকে ভিয়েতনাম যাওয়ার ট্রিপ পিছিয়ে গিয়েছিল।
- এর কারণ অবশ্য নেহাতই এয়ার ট্রাফিক কিংবা কমলা হ্যারিসের অসুস্থতা নয়।
অজানা রোগের অতীত
‘Havana Syndrome’ নামে পরিচিত এই অজানা রোগ প্রথম ধরা পড়েছিল কিউবার হাভানায়। পাঁচ বছর পরেও অবশ্য ‘Havana Syndrome’-এর উৎস উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। সে সময়ে বিভিন্ন গুপ্তচর এবং কূটনীতিবিদ আক্রান্ত হয়েছিলেন ‘হাভানা সিনড্রোম’-এ। কেউ কেউ নাকি অসুস্থতার কারণে চাকরি থেকে ইস্তফাও দিয়েছিলেন বলে শোনা যায়। ২০১৬ সালে হাভানায় আমেরিকান এ্যামবাসিতে আমেরিকার কূটনীতিবিদদের মধ্যে প্রথম এই রোগ ছড়ায়।
পাঁচ বছর পরে কেন ‘Havana Syndrome’ এল শিরোনামে?
সম্প্রতি হঠাৎই জানা যায় যে, ভিয়েতনামের দুই ব্যক্তি এক অজানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে তাঁরা যে ভাইস প্রেসিডেন্ট কিংবা হোয়াইট হাউসের হয়েই কাজ করছেন, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি। তবু কমলা হ্যারিসের জন্য বেশিই সাবধানী হয়ে যাত্রা পিছোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কূটনীতিবিদরা।
শুধু হাভানায় আটকে নেই ‘Havana Syndrome’
‘হাভানা সিনড্রোম’ মানেই যে শুধুমাত্র হাভানায় এই রোগ দেখা গিয়েছে তা নয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, চিনে প্রায় শতাধিক আক্রান্ত হয়েছেন এই ‘হাভানা সিনড্রোম’-এ।
‘Havana Syndrome’ আদতে কী?
‘হাভানা সিনড্রোম’ নিয়ে এক এক জন আক্রান্তের মত এক এক রকম। এক জন আক্রান্তের বক্তব্য, এই রোগে বমি বমি ভাব, কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ, শুনতে না পাওয়া, মাথায় ঝিমঝিমে ভাব, স্মৃতি শক্তি লোপের মতো লক্ষণ দেখা দেয়। কারও আবার বক্তব্য, তিনি কানে তীক্ষ্ণ আওয়াজ শুনতে পান ক্রমাগত। মুখে চাপ বোধও করেন।
আবার কেউ কেউ বলছেন, ‘হাভানা সিনড্রোম’-এ মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা হয়। কানে যন্ত্রণা, দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, পেশির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানো, ব্যালান্স না রাখতে পারা ইত্যাদি সমস্যাও প্রকট হয়েছে।
২০১৬ সালে যখন ‘হাভানা সিনড্রোম’ ধরা পড়ে, তখন আক্রান্তদের মস্তিষ্কে অসহ্য চাপ বোধ হচ্ছিল। পাশাপাশি কারও মনে হয়েছিল তীব্র আলোকরশ্মির মধ্যে তাঁরা আটকে রয়েছেন।
কম-বেশি বেশিরভাগ আক্রান্তই বলেছেন, ‘হাভানা সিনড্রোম’-এ তাঁদের মাথায় অসহনীয় চাপ বোধ হতে থাকে। কারও কারও যন্ত্রণা, চোখ বা কান ধাঁধিয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা তো রয়েছেই। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে সামনে এসেছে একটি তথ্য। ‘হাভানা সিনড্রোম’য় আক্রান্তদের ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে দেখা গেছে যে, তাঁদের মস্তিষ্কের কলা বা টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবং দেখা গেছে যে, গাড়ি দুর্ঘটনা বা বম্ব ব্লাস্টের মতো ঘটনার সম্মুখীন হলে কারও শরীরের টিস্যু যে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এ ক্ষেত্রেও ঠিক একই রকম হয়েছে।
কত দিন ধরে থাকে ‘Havana Syndrome’ লক্ষণ?
এ প্রশ্নের উত্তরও মেলানো মেশানো। কারও ক্ষেত্রে ‘হাভানা সিনড্রোম’-এর লক্ষণ বেশ কিছু দিন ধরে থেকে তার পর আপনা-আপনিই কমে গেছে। কারও ক্ষেত্রে আবার এই রোগের লক্ষণ রয়ে গেছে দীর্ঘ সময় ধরে। ফলে এক সময়ে কাজে ইস্তফা দিতেও বাধ্য হয়েছেন অনেকে।
‘Havana Syndrome’-এর উৎস কী?
এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে জোরকদমে। কেউই স্পষ্ট করে বলতে পারেননি যে, ঠিক কী কারণে এই ‘হাভানা সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত হচ্ছেন কূটনীতিবিদরা। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মনে করা হচ্ছে যে, এই ‘হাভানা সিনড্রোম’-এর কারণ ভীষণ ভাবে কারও মস্তিষ্কপ্রসূত। ‘মানসিক রোগ’ বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে ‘হাভানা সিনড্রোম’কে। কোনও বিশেষ শব্দতরঙ্গের আঘাত বা মাইক্রোওয়েভ থেকে এই সমস্যা হচ্ছে কি না, তা নিয়েও গবেষণা করা হয়েছিল। কিন্তু কোনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য
বেশির ভাগ বিজ্ঞানীই এই মনস্তত্ত্বগত রোগের পিছনে খাড়া করছেন অত্যধিক কাজের চাপকে। কারো বক্তব্য, বিদেশে ঘনঘন যাওয়া এবং দীর্ঘ সময় সেখানে কাজের সূত্রে থেকে যাওয়ার চাপও পড়েছে আক্রান্তদের মধ্যে। আবার আর একটি গবেষণা দায়ী করছে রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সিকে।
‘Havana Syndrome’র সত্যতা ও অপবাদ
ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সফর পিছিয়ে যাওয়ার কারণে ফের নজরে এসেছে ‘হাভানা সিনড্রোম’। তার পর থেকে নেটিজেনরা এই রোগের সত্যতা নিয়ে রীতিমতো সন্দিহান। কেউ বলছেন, এটা আসলে মনগড়া অসুখ। কারও চোখে এটা আসলে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাল। তবে সে সব নস্যাৎ করে জানানো হয়েছে ভিয়েনায় ‘হাভানা সিনড্রোম’ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল এবং তা নিয়ে গবেষণা চলছে।
তবে সত্যিই কি ‘হাভানা সিনড্রোম’ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে দুনিয়ার নানা প্রান্তে? যদি তা_অ হয়, তা হলে এর থেকে মুক্তি কী? এ সব উত্তর হয়তো দেবে সময়।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-29 10:12:12
Source link
Leave a Reply