শিশুর শরীরে অ্যান্টিবডির অভাব
কোনও সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই তার মধ্যে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা পুরোপুরি থাকে না। কারণ এই ক্ষমতা শিশুর শরীরে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই নিজে থেকে কোনও রোগের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য পুরোপুরি সক্ষম হয় না। এবং পাশাপাশি এ-ও দেখা গেছে, করোনার মতো ভ্যাকসিনে সাড়া দেওয়ার মতো বয়সও তাদের হয় না। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সে রকম পরিস্থিতি দাঁড়ালে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
করোনা রুখতে মাতৃদুগ্ধ
ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখক-গবেষক জোসেফ নিউ বলছেন, এই রকম সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে একমাত্র মা-ই পারেন নিজের সন্তানের শরীরে প্যাসিভ বা পরোক্ষ ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে। এমনিতেই শিশুর জন্মের পরে তার বেড়ে ওঠার সময়ে যত দিন পর্যন্ত সে একাই রোগ প্রতিরোধ করতে পারছে বা প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করতে পারছে, তত দিন মায়ের স্তন্যই তাকে আগলে রাখে, পুষ্টির জোগান দেয়, রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। সে ক্ষেত্রে করোনার প্রতিষেধক নেওয়া মায়েদের ক্ষেত্রে করোনা প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি করা নিঃসন্দেহে নতুন সংযোজন।
প্রসূতি মায়ের উপর সমীক্ষা
আমেরিকায় গত বছর ডিসেম্বর মাস থেকে এ বছর মার্চ মাসের মধ্যে বেশ কিছু প্রসূতি মায়ের ওপর এই সমীক্ষা করা হয়। সমীক্ষাটির জন্য প্রায় ২১টি কেন্দ্রে এমন কিছু প্রসূতি মাকে বেছে নেওয়া হয়, যাঁদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয়নি। এর পর সেই মায়েদের স্তন্য এবং রক্ত পরীক্ষা করা হয় তিনটি পর্যায়ে। প্রথমটি কোনও ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে, দ্বিতীয়টি ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়ার পরে এবং সর্বশেষটি ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে। এই সমীক্ষাটি ফাইজার এবং মোদের্না ভ্যাকসিন দিয়ে করা হয়েছিল।
প্রাথমিক সমাধান মায়ের ভ্যাকসিন
যে গবেষণাগারে সমীক্ষাটি করা হয় সেখানকার তরফে লরেন স্ট্যাফোর্ড জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে মায়ের স্তন্য এবং রক্তে অ্যান্টবডির পরিমাণ প্রায় ১০০% বেড়ে গিয়েছে। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিভিয়ান ভ্যালক্রাস জানাচ্ছেন, করোনা সংক্রমিত হলে এবং সুস্থ হয়ে উঠলে কোনও নতুন মায়ের শরীরে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয়, প্রতিষেধক নেওয়া মায়েদের শরীরে অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হওয়ার পরিমাণ অনেকাংশে বেশি। কোনও মা প্রতিষেধক নিলে তা সঞ্চারিত হয় মাতৃদুগ্ধে এবং তার মাধ্যমে শিশুরও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়া কোনও নতুন ঘটনা নয়। কারণ অন্তঃসত্বা মায়েদের ক্ষেত্রে হুপিং কাশি এবং ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন দিয়ে এ কথা আগেই প্রমাণিত হয়েছে। ভিভিয়ানের বক্তব্য, শিশুরাও করোনা দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এর প্রাথমিক সমাধানটাই হল মায়ের ভ্যাকসিন নেওয়া।
প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ জরুরি
ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং অধ্যাপক জোসেফ লারকিন বলছেন, মায়ের স্তন্য পান করে শিশুর মধ্যে অ্যান্টবডির সঞ্চালন হচ্ছে। কিন্তু তা থেকে শিশুর শরীর নিজে থেকেই অ্যান্টবডি তৈরি করতে পারছে কি না, সে বিষয়ে গবেষণা এখনও বাকি। কিন্তু এ বিষয়ে সত্যিই কোনও সন্দেহ নেই যে, প্রসূতি মা করোনার প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ নিলে আখেরে লাভবান হবেন মা এবং সদ্যোজাত সন্তান দু’জনেই।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-27 15:22:33
Source link
Leave a Reply