হাইলাইটস
- বাজারে গেলে সবচেয়ে আগে ঢ্যাঁড়শ ভেঙে তা আদৌ কচি আছে কি না, দেখার প্রবণতা থাকে অনেকেরই।
- কেউ কেউ পটল কিংবা কাঁকরোল রীতিমতো হাত দিয়ে ঘষে দেখে নেন তাতে রং করা আছে কি না।
- আবার আপেল যাতে চকচকে জৌলুসপূর্ণ দেখতে লাগে, তার জন্য তার গায়ে লাগানো থাকে ওয়্যাক্স।
ম্যালাকাইট গ্রিন আসলে কী?
ম্যালাকাইট গ্রিন আসলে এক ধরনের টেক্সটাইল ডাই যা মাছের ক্ষেত্রে অ্যান্টি প্রোটোজোয়াল এবং অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ হিসেবে কাজ করে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ম্যালাকাইট সাধারণত প্যাসাইটাসাইড হিসেবে কাজ করে। খাদ্য, স্বাস্থ্য, টেক্সটাইল এবং অন্যান্য কয়েকটি ইন্ডাস্ট্রিতে এই ম্যালাকাইট ব্যবহার করা হয় বিপুল পরিমাণে। মূলত মাছ এবং বিভিন্ন জলজ উদ্ভিজ্জ দ্রব্যে ম্যালাকাইট ব্যবহার করে ফাঙ্গাল, প্রোটোজোয়াল ইনফেকশন কমানো এবং কিছু রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। পাশাপাশি লঙ্কা, কড়াইশুঁটি, পালং শাকের মতো আনাজ চকচকে সবুজ দেখানোর জন্যও ব্যবহার করা হয় ম্যালাকাইট।
ম্যালাকাইট মানুষের শরীরে জন্য কেন ক্ষতিকর?
এনসিবিআই অর্থাৎ ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনের তরফে জানানো হয়েছে, ম্যালাকাইটের মতো কৃত্রিম ডাই ভীষণ ভাবে টক্সিক। এই ডাই কারসিনোজেনিক, মিঊটাজেনেসিস, ক্রোমোজোমাল ফ্র্যাকচার, টেরাটজেনেসিটি এবং রেসপিরেটরি টক্সিসিটির জন্য দায়ী। এমনকি হিস্টোপ্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা দেখিয়েছে, ম্যালাকাইট ডাইয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গের কলা বা টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয় মারাত্মক ভাবে।
এই ম্যালাকাইট গ্রিন শরীরে রোজ অল্প পরিমাণে প্রবেশ করতে থাকলে তা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি ডেকে আনে। পরিস্থিতি এমন হওয়াও অস্বাভাবিক নয় যে, এর মাধ্যমে ক্যানসার বা মারণদায়ী রোগ হবে না।
ম্যালাকাইট গ্রিন থেকে মুক্তির কী উপায়?
তা হলে আনাজ কেনার আগে কী ভাবে বুঝবেন সেই আনাজ ম্যালাকাইট গ্রিন ডাইয়ে চোবানো কি না বা আনাজের গায়ের রং আসলে কৃত্রিম? এ কথার উত্তর দিতেই এফএসএসএআই অর্থাৎ ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া সম্প্রতি টুইটারে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। সেই ভিডিয়োয় দেখানো হচ্ছে কী ভাবে সহজেই চিনতে পারবেন ম্যালাকাইট গ্রিনে ভেজানো সবজিকে।
- প্রথমে একটু তুলোয় অল্প লিকুইড প্যারাফিন নিন।
- এ বার ঢ্যাঁড়শ কিংবা সবুজ কোনও আনাজের গায়ে সেই তুলো দিয়ে ঘষে নিন কয়েক বার।
- তুলোর রং হালকা সবুজ হতে শুরু করলে বুঝবেন সেই আনাজ ম্যালাকাইট গ্রিনে চুবিয়ে রং করা হয়েছে।
এ তো গেল পরীক্ষার মাধ্যমে ম্যালাকাইট গ্রিন চেনার উপায়। কিন্তু তা বলে কি সত্যিই তুলো আর প্যারাফিনের বোতল হাতে করে বাজার করতে যাওয়া সম্ভব? না কি এই পদ্ধতি স্থিতিশীল?
সে ক্ষেত্রে বেছে নিন নিজের আনাজওয়ালা। এমনিতেই লকডাউন পরবর্তী সময়ে অনেকেই বাড়ির সামনে বিক্রি করতে আসা আনাজের ভ্যানের ওপরে ভরসা করেন। অথবা বাজারে গেলে কেউ বিশেষ বা পরিচিত আনাজ-বিক্রেতার কাছ থেকেই আনাজ কেনেন। সে ক্ষেত্রে যাঁর কাছ থেকে আনাজ কিনছেন, বাড়িতে পর পর কয়েক দিন সেই আনাজের ওপর লিকুইড পায়ারাফিনের পরীক্ষা চালাতে পারেন। ফলে সহজেই বুঝতে পারবেন তাঁর বিক্রি করা আনাজে ম্যালাকাইট গ্রিন আছে কি না।
এ ছাড়া এটাও জেনে রাখা জরুরি যে, কোনও আনাজ সবুজ চকচকে দেখতে মানেই সেটি আদতে ভালো, এই ধারণে একেবারে ভুল। ফলে আনাজ কিনতে গেলে সবচেয়ে আগে চকচকে আনাজের দিকে নজর না দিয়ে বরং সে সব আনাজ কিনতে পারেন, যা দেখতে ছবির মতো সুন্দর বা নিখুঁত নয়।
ম্যালাকাইট গ্রিন শরীরের পক্ষে ভয়ঙ্কর। ফলে ঝাঁ চকচকে আনাজ কেনার এবং খাওয়ার আগে দ্বিতীয় বার ভাবুন। ম্যালাকাইট গ্রিনের প্রভাব তক্ষুনিই বোঝা যায় না। কিন্তু যখন রোগ মারাত্মক হয়ে দাঁড়ায়, তখন আর ফিরে আসার পথ থাক না। সামান্য সচেতন হলেই ম্যালাকাইট গ্রিনের রোজকার জীবনে অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-26 17:54:26
Source link
Leave a Reply