ভাঙা কাঁচ ভাঙা মন যায় না।
যে কোনও জিনিস ভাঙার আগে দু দণ্ড ভেবে নেওয়া ভালো। আচমকা ভেঙে গেলে আলাদা ব্যাপার। মন, কাঁচ ভাঙলে তা জোড়া দেওয়া অসম্ভব। তবে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার আগে কিন্তু একবার তা জোড়া লাগানোর চেষ্টা করা হয়তো প্রয়োজন। আর সবচেয়ে প্রয়োজন সম্পর্ক থাকাকালীনই তার যত্ন আত্তি করা। মনোবিদদের মতে নিয়মিত শরীরের যত্ন নিলে যেমন শরীর সুস্থ থাকে তেমনই সম্পর্কের যত্ন নিলেও সম্পর্ক সুস্থ থাকে। সম্পর্কের যত্ন নিতে কোনও খরচ হয় না। শুধু প্রয়োজন আগ্রহ এবং ভালো থাকার ইচ্ছে।
আর সম্পর্ক ভালো রাখতে গিয়ে যে বিষয়গুলি বেশিরভাগ দম্পতিই ভুলে যান তা হল-
পরস্পরের যোগাযোগ
খুব কম মানুষই আছেন যাঁরা অন্যের মন পড়তে পারেন। এক ছাদের নীচে থেকেও একে অপরের মন বুঝতে পারেন না। মনোবিদরা বলেন অন্যের মন বোঝার প্রধান উপায় হল একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। কথা বলা। প্রতিদিন সময় করে কম করে এক ঘণ্টা নিজেদের মধ্যে। সারা দিন নিজেরা কী কাজ করলেন অফিসে কী হল, সংসারে কী হল, এসব আলোচনা করুন। নিজেদের মধ্যে কথা বলার সময় তৃতীয় ব্যক্তিকে প্রবেশ করতে দেবেন না। একে অপরের কথা মন দিয়ে শুনুন। এবং একে অপরকে সমর্থন করুন। সারাদিন কর্মসূত্রে বাইরে থাকলে ফোনে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ রাখুন। যদি তৃতীয় ব্যক্তির কারণে ভুল বোঝাবুঝি হয় তাহলে সরাসরি কথা বলুন। কোনও কারণে অতিরিক্ত মান অভিমান হতেই পারে। সঙ্গী বা সঙ্গিনী কোনও দুরূহ অপরাধ করে ফেলতেই পারেন সেটিও পারলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করুন। প্রথম ভুল বা দোষ ক্ষমা করে দেওয়া যেতে পারে। এটা মাথায় রাখবেন। মোট কথা একে অপরের সম্পর্কে কী ভাবছেন তা মনের মধ্যে আটকে রাখবেন না।
একে অপরকে গুরুত্ব দিন
একে অপরকে গুরুত্ব দিন। সংসারের চাপে সকলের খেয়াল রাখতে গিয়ে অনেকেই সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে টেকেন ফর গ্রান্টেড বলে ধরে নেন। এটা কিন্তু খুব ভুল। এতে একে অপরের প্রতি সম্মান কমতে থাকে। সঙ্গী বা সঙ্গিনী যদি আপনাকে বিশেষ গুরুত্ব দেন তাহলে আপনিও তাঁকে বিশেষ গুরুত্ব দিন। তাঁর পছন্দর খাবার, ছোটো খাটো উপহার, তাঁর পছন্দের সাজগোজ ইত্যাদি মেনে চলুন। দেখবেন দুজনেরই ভালো লাগবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় স্ত্রীরাই স্বামীর মন জুগিয়ে চলেন। রান্না, বাসন ধোওয়া, চা-কফি বানানো ইত্যাদি করে থাকেন। কিন্তু একই কাজ যদি স্বামীও করেন তাহলে স্ত্রী খুশি হন। এতে দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়ে। সম্পর্ক সুন্দর হয়। দুজনে কাজ ভাগ করে নিলে কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় পাবেন।
একে অপরকে স্পেস দিন
প্রত্যেকেরই একটা ‘Me time’ বা ব্যক্তিগত সময় থাকে। সঙ্গীর বা সঙ্গিনীর সেই সময়টিকে সম্মান করুন। সবসময় এক সঙ্গে থাকলে আবার সমস্যা। একে অপরকে স্পেস দিন। অনেকেই কিছু সময় একা থাকতে ভালোবাসেন। কখনও বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে আবার কখনও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে চান। সেই সময়টি তাঁকে দিন। এমনকি একই অফিসে কাজ করলেও একে যে যার মতো কাজ করুন।
নিজেদের যত্ন নিন
আজকালকার দিনে দর্শনধারীর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যথেষ্ট। তাই সবসময় ফিটফাট থাকার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে রাতের খাবারের সময় দুজনেই ফিটফাট পরিষ্কার পরচ্ছন্ন হয়ে একসঙ্গে খেতে বসুন। দেখবেন দুজনেরই মুড ভালো হয়ে যাবে। নজর রাখতে হবে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার দিকেও।
সততা বজায় রাখুন
চেষ্টা করুন একে অপরের কাছে সৎ থাকার। একে অপরের কাছে বিশেষ কোনও গোপনীয়তা বজায় না রাখাই ভালো। ছোটোখাটো কেনাকাটি, এদিক ওদিক যাতায়াত বা বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার মতো ঘটনা লুকোনোর দরকার নেই। পাশাপাশি সঙ্গী বা সঙ্গিনীর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করাটাও অন্যায়। এবং উভয়েই যেন সম্পর্কের মাত্রা না ছাড়ান। তবে হ্যাঁ এমন কোনও ঘটনা যা দুজনের মধ্যে সম্পর্ক একেবারে ভেঙে ফেলতে সেসব সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মুড বুঝে বলা কিংবা একেবারে না বলাই ভালো। সেক্ষেত্রে উপস্থিত বুদ্ধি থাকা প্রয়োজন।
অতীতের থেকে শিক্ষা নিয়ে তা ভুলে যান
অতীত থেকে শিক্ষা নিন। তবে অতীতের কোনও ভুল নিয়ে অতিরিক্ত আলোচনা বা ঘ্যান ঘ্যান করা অনুচিত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অতীত ভুলে যাওয়াই ভালো। অতীতের ভুলের জন্য সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে বারবার খোটা দেওয়াটাও ঠিক নয়। যেখানে সঙ্গী বা সঙ্গিনী যদি অনুতপ্ত হন তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়াই উচিত। এমনকি শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কোনও অন্যায় বা দোষের জন্য সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে দোষারোপ করাটাও অন্যায়।
নিজের ভুল স্বীকার করুন
কোনও কাজে ভুল হয়ে থাকলে ভুল স্বীকার করুন। বিপরীত জন যদি ঠিক হন তাহলে তো তা মেনে নেওয়াই ভালো। তবে হ্যাঁ, সঙ্গী ভুল করলে বকাবকি যেমন করবেন তেমনই তা মাত্রা না ছাড়ানোই ভালো।
একে অপরকে সমর্থন করুন
দম্পতিদের মধ্যে এক জনের বিচক্ষণতা এক এক দিকে থাকে। সেক্ষেত্রে একে অপরকে সমর্থন করুন। একজন হয়তো বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করতে ওস্তাদ। অপরজন অর্থনৈতিক ব্যপার যেন বিনিয়োগ, জমানো ইত্যাদিতে তুখোড়। তাই যে যে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ সেক্ষেত্রে তাঁকে সমর্থন করাই বুদ্ধিমানের।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-16 18:07:32
Source link
Leave a Reply