হাইলাইটস
- কাটা, ছড়া, ফাটা যে কারণেই রক্তপাত হোক না কেন তুলো আর ব্যান্ডেজের দরকার পড়বেই।
- তুলো দিয়ে রক্ত বন্ধ করে ব্যান্ডেজের পট্টি বেঁধে দেওয়া প্রাথমিক চিকিৎসার মধ্যেই পড়ে।
- কারও কেটে ছড়ে গেলে দোকান থেকে ব্যান্ডেড কিনে তাড়াতাড়ি জখম জায়গা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
- কিন্তু এই ব্যান্ডেড থেকে যে বিপদ হতে পারে তা জানেন কি?
দোকান থেকে ব্যান্ডেড কেনার সময় কেউ অত শত ভাবেন না। জখম জায়গা মোড়া যাবে কিনা সেই চিন্তাই থাকে। রোগ প্রতিহত করার জিনিসটিই যে নতুন রোগ বাধাতে পারে তা হয়তো কারও মাথাতেই আসে না। শুধু ব্যান্ডেজই নয় রোগ হতে পারে ব্যান্ডেড থেকেও। আর সেই রোগের নাম হল অ্লার্জি। মূলত ত্বকের অ্যালার্জি।
ব্যান্ডেড সহ আধুনিক নানা ব্যান্ডেজে আঠালো পদার্থ থাকে। মূলত সেই আঠালো পদার্থ থেকেই অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ব্যান্ডেড থেকে অ্যালার্জির লক্ষণ
আঠালো ব্যান্ডেডের আঠালো টেপ গুলি রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে তৈরি। একে জখম তার উপর আবার ত্বকের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হওয়ার কারণে অনেকের দেহেই অ্যালার্জি হয়। কী করে বুঝবেন ব্যান্ডেজ থেকে অ্যালার্জি হয়ে? ব্যান্ডেড বাঁধার পর থেকেই সংলগ্ন স্থানের ত্বকে-
– লালচে ভাব
– ফুসকুড়ি
– চুলকানি
– শুষ্ক ফাটা ত্বক
– চুলকানোর পর ফোস্কা পড়া ইত্যাদি।
অনেক সময়ই ব্যান্ডেডের রাসায়নিক আঠালো পদার্থ বিশেষ কিছু বিষাক্ত পদার্থ দিয়ে তৈরি করা হয়। সেই রাসায়নিকই ত্বকে বিক্রিয়া করে অ্যালার্জি হতে পারে। আবার ব্যান্ডেড অতিরিক্ত টাইট হলেও অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ব্যান্ডেড থেকে অ্যালার্জি দেখা দিলে অনেকেই সামান্য কারণ ভেবে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান না। কিন্তু সামান্য এই অ্যালার্জিই কিন্তু ভবিষ্যতে বড় আকার ধারণ করতে পারে। অবশ্যেই ব্যান্ডেড খোলার পর অনেকের এই অ্যালার্জি নিজে থেকেই সেরে যায়। কিন্তু কিছু রোগীর অ্যালার্জি সহজে সারতে চায় না। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ একান্ত কাম্য।
ব্যান্ডেডের অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ার পরীক্ষা
ব্যান্ডেডের আঠালো পদার্থটি বিষাক্ত বা অ্যালার্জেটিক কিনা তা রোগী নিজেই পরীক্ষা করে নিতে পারেন। অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যদি দেখেন বার বার ব্যান্ডেড লাগানোর পর অ্যালার্জি হচ্ছে তাহলে সরাসরি ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত। ব্যান্ডেড আটকানোর পর হয়তো প্রাথমিকভাবে অ্যালার্জি সেরে গেছে বলে মনে হলেও পরে তা মারাত্মক আকার নিতে পারে। ভবিষ্যতে হতে পারে কোনও ভয়াবহ চর্মরোগও।
একেক জনের ত্বকের বৈশিষ্ট্য একেক রকমের হয়। কারও ত্বক প্রচণ্ড সংবেদনশীল হয়। তাঁদের অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতাও থাকে। তেমন হলে ত্বক বিশেষজ্ঞ রোগীর রক্ত, ত্বকের কোষ ইত্যাদি সহ বিভিন্ন রকম পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ব্যান্ডেড অ্যালার্জির চিকিৎসা
– বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যান্ডেড খোলার পর বাতাসের সংস্পর্শে আসার পরই অ্যালার্জি ঠিক হয়ে যায়।
– অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম লাগালেও অ্যালার্জি সেরে যায়।
– চুলকানি কমানোর ক্রিম বা লোশন মাখলেও অ্যালার্জি কমে।
– অ্যালার্জির জায়গায় অ্যালোভেরা জেলও লাগাতে পারেন।
– জায়গাটি শুষ্ক না রেখে ময়শ্চরাইজ করে রাখুন।
– জায়গাটি খুব বেশি হাত দিতে বা চুলকালে অ্যালার্জির সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।
– অ্যালার্জির জায়গাটি গরমে রাখবেন না।
ব্যান্ডেডের পরিবর্তে
– আঠালো ব্যান্ডেডের পরিবর্তে ব্যাবহার করতে পারেন সাধারণ গজ কিংবা পরিষ্কার কাপড়।
– সুতো কিংবা কাপড়ের পাতলা টুকরো দিয়ে জায়গাটি বেঁধে দিন।
– কাটা জায়গায় ব্যান্ডেডের পরিবর্তে লাগাতে পারেন স্কিন ব্যারিয়র ফিল্ম এবং হাইপোলারজেনিক টেপ। ব্যবহার করতে পারেন সার্জিকাল বা পেপার টেপও। এগুলি সবই অনলাইনে কিনতে পারবেন কিংবা ওষুধের দোকানে পেয়ে যাবেন।
আঠালো ব্যান্ডেডে অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে অপারেশন কিংবা কাটা ছেঁড়া স্থানের চিকিৎসার সময়ই জানিয়ে রাখুন।
ব্যান্ডেডের অ্যালার্জির থেকে বাড়াবাড়ি দেখা দিলে নিজে চিকিৎসা করতে যাবেন না বা লোকের জ্ঞান শুনতে যাবেন না। দেরি না করে সোজা ডাক্তারের কাছে যান। সঠিক ওষুধ তিনিই দিতে পারবেন। কারণ একটি ছোটো অ্যালার্জির থেকে সারা শরীরের সংক্রমণ হয়ে গেলে কিন্তু সমস্যা বেড়ে যাবে কয়েক গুণ।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-16 13:45:32
Source link
Leave a Reply