অযাচিত গর্ভধারণ রোধের জন্য মহিলাদের ক্ষেত্রে অনেক উপায় আছে। গর্ভনিরোধক ওষুধ, ডায়াফাগ্রামস্ ক্যাপ, ফিমেল কন্ডোম, ভ্যাজাইনাল রিং, প্রজেসটোজেন পিল ইত্যাদি। যদিও এতসব উপায়ের মধ্যে ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট সেবন তুলনামূলক জনপ্রিয়। যদিও এই ট্যাবলেট খেলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেক ক্ষেত্রেই মোটা হয়ে যাওয়া বা গর্ভধারণ ক্ষমতা লোপ পাওয়ার ভয় থাকে বলে অনেক মহিলাই গর্ভোনিরোধক বড়ি খেতে রাজি থাকেন না, বরং তার চেয়ে কন্ডোম ব্যবহারে তাঁরা আগ্রহী।
এদিকে আবার কন্ডোম ব্যবহারে অনিহা থাকে পুরুষদের। এর ব্যবহারের গর্ভনিরোধন হওয়া সম্ভব হলে যৌনসংগমে অনুভূতি কম হয় বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। শহরাঞ্চলে গর্ভনিরোধনের নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও গ্রামাঞ্চলে এসবের চল খুবই কম, এমনকি যৌন ক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কায় পুরুষের মধ্যে জন্মনিরোধক অপারেশন করানোরও অনীহা রয়েছে যথেষ্ট।
তবে অতিসম্প্রতি নতুন এক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির আবিষ্কার করেছেন বৈজ্ঞানিকরা এক পোশাকী নাম চৌম্বকীয় পদ্ধতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যানো লেটার্স পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই চৌম্বকীয় পদ্ধতির কথা। বৈজ্ঞানিকদের নতুন এই আবিষ্কারটি হল পুরুষদের জন্য রিভার্সল চৌম্বকীয় বায়োডিগ্রেডেবল ন্যানোমেটেরিয়লস্। এর ব্যবহারের ফলে কম করে ৩০ দিন জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্ভব। অর্থাৎ যৌনসংগমের ফলে অসাবধান হলেও গর্ভধারণের কোনও ভয় থাকবে না। ইতিমধ্যেই ইঁদুড়ের শরীরের এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে এবং তা সফল হয়েছে।
বৈজ্ঞানিকদের দাবি, উচ্চ তাপমাত্রায় শুক্রাণু তৈরি হতে পারে না। সেই নিয়ম মেনেই পুরুষ ইঁদুড়ের ত্বকের বাইরে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। যদিও এর আগে ন্যানোমেটেরিয়লস্ ইনজেকশেনর মাধ্যমে পুরুষ ইঁদুড়ের শরীরের প্রবেশ করানো হয়। এর ফলে ইঁদুড়ের শরীরে প্রচুর ব্যথা দেখা দেয় এবং তার ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই ন্যানোমেটেরিয়লগুলি বায়োডিগ্রেডেবলও ছিল না। পুরোটাই ছিল রাসায়নিক। নতুন পরীক্ষায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, বৈজ্ঞানিকরা বায়ডিগ্রেডেবল আয়রন অক্সাইড ন্যানোপার্টিকল্সের দুটি রূপের পরীক্ষা করেন। সেগুলিকে চুম্বকের সঙ্গে অনরত গরম করতে থাকেন। গরম করার আগে একটি ন্যানোপার্টিকলে পলিইথাইলিন গ্লাইকল এবং অপরটিতে সাইট্রিক অ্যাসিডের প্রলেপ লাগানো হয়েছিল
পরীক্ষায় দেখা গেছে যে পলিইথাইলিন গ্লাইকন ন্যানোপার্টিকলকে উচ্চ তাপমাত্রায় গরম করা যায়। কিন্তু সাইট্রিক অ্যাসিডের তুলনায় সহজেই তা ভাঙা যায় না।
পরীক্ষার জন্য বৈজ্ঞানিকরা দুই দিন ধরে সাইট্রিক অ্যাসিডের ন্যানোপার্টিকলের ইনজেকশন বেশ কয়েকবার ইঁদুড়ের শরীরের প্রয়োগ করে। এর পর চুম্বকের সঙ্গে তা প্রয়োগ করা হয়। পরীক্ষার পর সমস্ত ন্যানোপার্টিকলের উপর প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চুম্বক লাগানো হয়েছিল। এর পর সেটি ১০৪ ফারেনহাইট তাপমাত্রায় গরম করা হয়। তাপমাত্রা প্রয়োগের পর বৈজ্ঞানিকরা দেখেন যে প্রায় ৩০ দিন পর্যন্ত ইঁদুড়ের শুক্রাণু প্রজনন বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ধীরে ধীরে ইঁদুঁড়ের শুরু হয়ে যায়I এই পরীক্ষার দিন সাতেকের মধ্যে মেয়ে ইঁদুড়ের গর্ভধারণ বন্ধ হয়ে যায়। এবং সাত দিনের পর থেকেই মেয়ে ইঁদুড়ের শরীরে ডিম্বাণু উৎপাদন শুরু হয়ে যায়I অর্থাৎ তার গর্ভধারণ ক্ষমতা বাড়তে থাকে।
বৈজ্ঞানিকদের দাবি, ন্যানোপার্টিকলস্ শরীরের কোষের জন্য হানিকারক নয়। এমনকি এগুলিকে সহজেই শরীর থেকে বের করে দেওয়া সম্ভব। জন্মনিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় এই নতুন পদ্ধতি নিয়ে আশাবাদী তাঁরা।
চৌম্বকীয় পদ্ধতি এখনও পর্যন্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে রয়েছে। যদিও এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষকরা এখনও কোনও তথ্য প্রকাশ করেননি। ক্ষতিকারক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না থাকলে ভবিষ্যতে এই চৌম্বকীয় পদ্ধতির ব্যবহার বাড়তে পারে বলে আশাবাদী সকলে।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-09 12:37:19
Source link
Leave a Reply