হাইলাইটস
- গত কয়েক বছরে নামজাদা তারকাদের কল্যাণে
- বয়সে বড় সঙ্গিনীর সঙ্গে বয়সে ছোটো সঙ্গীর সম্পর্কটা এতটাই প্রচার হয়ে গেছে যে
- আজকের প্রজন্মের অনেকেই বয়স নিয়ে অত ভাবেন না
সে সব অবশ্য ইতিহাস। লোকজনের ঠাট্টায় প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো আন্তর্জাতিক তারকার কিছু যায় আসে না। বরং দিন দিন তিনি নিজের কেরিয়ারের উন্নতি করে চলেছে। দু হাতে রোজগার করে অর্থে, অলঙ্কার, বাড়ি, গাড়িতে ফুলে ফেঁপে উঠছেন। কিন্তু এটাই যদি হয় আমার আপনার বাড়ির ছেলে-মেয়ে তখনই হয়ে যায় বিপদ। বিশেষ করে ছেলের বাড়ি থেকেই আপত্তি দেখা যায়। যাকে খুশি ভালোবাসো। কিন্তু বয়সে বড় মেয়ে একেবারেই চলবে না।
আগেকার দিনে ৭০ বছরের বৃদ্ধের সঙ্গে ৭ বছরের নাবালিকার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত অনায়াসে। মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার সময় কারও ছিল না। বুড়ো বরের সঙ্গে যে সে সংসার করতে পারবে না সেটা মেয়ের ভাগ্যের দোষ। কারও কোনও দায় নেই। কিন্তু উল্টোটা যদি হত? ৭ বছরের বালকের সঙ্গে ৭০ বছরের বৃদ্ধার বিয়ে হচ্ছে? ধুর্, তা আবার হয় নাকি? সাত সত্তরের ফারাক না হলেও আমাদের দেশেই কিন্তু রাজপুত সহ বেশকিছু জাতির মধ্যে বয়সে বড় মেয়ের সঙ্গে ছোটো বয়সের ছেলের বিবাহের প্রচলন ছিল। এখনও আছে।
কিন্তু সমস্যাটা কোথায়? সঙ্গিনী বয়সে বড় হলে ক্ষতি কী?
নিন্দুকের যুক্তি
স্ত্রী বা প্রেমিকা বয়সে বড় হলে ছিঃ ছিঃ শুনতেই হবে। অবজ্ঞা, হেয় করা, এবং পুরুষটিকে সবসময় শুনতে হবে যে সে জীবনে বিশাল বড় একটা ভুল করেছে।
বন্ধু বান্ধবরা তো সারা জীবন টিটকিরি দেবে। স্ত্রী বা প্রেমিকা যৌনতায় সাড়া দিতে পারছেন কিনা এই প্রশ্ন প্রায় সবসময় শুনতে হবে পুরুষটিকে। এসব এড়াতে গেলে বন্ধু বিচ্ছেদ ঘটবে।
পরিবার কিছুতেই মেনে নেবে না। ফলে পরিবারকেও ছাড়তে হতে পারে।
স্ত্রী বা প্রেমিকা তাড়াতাড়ি বুড়ি হয়ে যাবেন। মুখে বলিরেখা দেখা দেবে। মোটা হয়ে যাবে। পুরুষটির পাশে ক্রমে বেমানান হয়ে পড়বেন। সঙ্গিনীর শরীরে বয়সের ছাপ পড়ে গেলে পুরুষটি প্রতি নিয়ত অস্বস্তি বোধ করবেন। স্ত্রীর সঙ্গে অন্যের পরিচয় করিয়ে দিতে লজ্জা বোধ করবেন। সংসারে অশান্তি শুরু হবে।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের যৌন চাহিদা কমতে থাকে। তাই বড় বয়সের মহিলাকে বিয়ে করলে বেশিদিন যৌন সুখ উপভোগ করতে পারবেন না। তখন পুরুষের মন বাইরের দিকে চলে যাবে। শুরু হবে পরকীয়া।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের গর্ভধারণের ক্ষমতা কমতে থাকে। তাই তাঁরা বিয়ের পর পরই সন্তান ধারণে আগ্রহী হয়ে পড়ে। তুলনায় ছেলেটির বয়স কম থাকায় অর্থনৈতিকভাবে স্থিতু হতে পারে না সে। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই সন্তান হয়ে গেলে সংসার দায়িত্ব কাঁধে করে বয়ে বেড়াতে হয়। যৌবনের আনন্দ চলে যায়।
স্বামী-স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য মানে স্ত্রীর বয়স বেশি হলে চারদিক থেকে এতটাই গঞ্জনা শুনতে হয় যে তাতে মানসিক চাপ বাড়ে। তার প্রভাবে পড়ে সংসারের শান্তি শৃঙ্খলায়।
এমনিতেই মেয়েরা মানসিকভাবে অনেক বেশি পরিপূর্ণ হয়। স্বামী বা প্রেমিকের থেকে বয়সে বড় হলে তাঁর উপর কর্তৃত্ব ফলান। সেটি স্বামী ও তাঁর পৌরুষে আঘাত লাগতে পারে।
এসব তো গেল নিন্দুকের কথা। কিন্তু ওই যে সেই কোন কালে কিশোরকুমার গান গেয়ে গেছেন,
“কুছ তো লোগ কহেঙ্গে, লোগো কা কাম হ্যায় ক্যাহেনা”
*প্রথমেই বলি গত কয়েক বছরে নামজাদা তারকাদের কল্যাণে বয়সে বড় সঙ্গিনীর সঙ্গে বয়সে ছোটো সঙ্গীর সম্পর্কটা এতটাই প্রচার হয়ে গেছে যে আজকের প্রজন্মের অনেকেই বয়স নিয়ে অত ভাবেন না। এমনকি আধুনিক মানসিকতার পরিবারের সদস্যরাও বয়সটাকে সংখ্যা মাত্র বলে উড়িয়ে দেন। বড় বয়সের বউমা কিংবা ছোটো বয়সের জামাইকে সংসারে স্বাগত জানাতে কারও বিশেষ আপত্তি হয় না। গোঁড়া প্রাচীনপন্থীদের কথা অবশ্য আলাদা।
*সমাজতাত্ত্বিক এবং মনোবিদদের সমীক্ষা অনুযায়ী বয়সে বড় মানে ম্যাচুওর মেয়েদের প্রতি আজকাল ছেলেদের আকর্ষণ বাড়ছে। আগেও এটা ছিল। কিন্তু তখন সকলে স্বীকার করার সাহস পেত না। এখন সমাজ অনেক উন্মুক্ত হয়েছে। ফলে প্রেমিকা বা স্ত্রী বয়সে বড় হলেও ছেলেরা লজ্জা পান না। বরং প্রেমিকা বা স্ত্রী বয়সে বড় হওয়ার অর্থ ছেলেটি সম্পর্কের এলিট ক্লাস যুক্ত হয়ে গেছেন। বন্ধুরাও বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেন। পাড়ার লোকের টিটকিরি আধুনিক ছেলে মেয়েরা কানে তোলেন না।
*আধুনিক চিকিৎসার উন্নতির কারণে যৌবন ধরে রাখা বা বেশি বয়সে সন্তান ধারণের সমস্যা রীতিমতো অলীক কল্পনা।
* তাছাড়া আজকাল স্বামী-স্ত্রী উভয়েই কর্মরত হন। মহিলা বয়সে বড় হওয়ার অর্থ তাঁর পেশাগত জীবনেও পুরুষটির চেয়ে এগিয়ে। ফলে পুরুষ সঙ্গী অর্থনৈতিকভাবে নিজেকে নিরাপদ মনে করেন। কেরিয়ার সংক্রান্ত বড় কোনও পদক্ষেপ নিতে ভয় পান না।
*আর বয়সে বড় স্ত্রী বা প্রেমিকার কর্তৃত্ব ফলানোর চেষ্টা? সেটা কম বেশি সব পুরুষই উপভোগ করেন।
তাই লোকের কথায় কান দেবেন না। মন যা বলছে সেটা শুনুন। আর হ্যাঁ, আমাদের সমাজে এখনও কিছু কুচুটে নিন্দুক আছে। তাদের স্বভাব কোনোদিনও পালটাবে না। তা বলে কি আপনি আপনার পছন্দ থেকে সরে যাবেন? তাই তাদের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার জন্য মানসিকভাবে দঢ় থাকুন। কে কী বলল সেটা না ভেবে নিজেদের সংসারের সুখ বজায় রাখুন। সঙ্গিনীকে সুখী করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-06 21:36:04
Source link
Leave a Reply