হাইলাইটস
- কতটা পরিমাণ Chocolate খাওয়া নিরাপদ তা পুরোটাই নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক গঠনের উপর।
- অনেকেই প্রচুর চকোলেট খান। কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা তাঁদের হয় না।
- কেউ আবার সামান্য খেলেই শরীর কষে যায়।
নন্দিনীর মুখে কথাটা শুনে পার্টির প্রত্যেকে চুপচাপ। পিন পড়লেও যেন শব্দ শোনা যায়। Chocolate ভালোবাসে না এমন মানুষ দুনিয়ায় আছে নাকি?
বান্ধবীদের রি-ইউনিয়ন পার্টিতে কথাটা বলেই চুপসে যায় নন্দিনী। আসলে সে চকোলেট খেতে খুবই ভালোবাসে। কিন্তু সমস্যা হল এই সুস্বাদু জিনিসটি খেলেই পরের দিন কোমোডে অনেক্ষণ বসে থাকতে হয় তাকে। কিছুই না। সাদা বাংলায় চকোলেট খেলে নন্দিনীর কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। এবং এই সমস্যা ওর বহুদিনের। চকোলেট কেক, কুকিজও যতটা পারে এড়িয়ে যায় সে। বান্ধবীদের সে কথা লজ্জা লজ্জা মুখ করে বলতে অনেকেই হেসে খুন। কেউ আবার ওর সমস্যাটা বুঝতে পারে। আসলে নন্দিনী একা নয়। চকোলেট খেয়ে পর দিন বাথরুমে সময় নষ্ট করে অফিসে লেট মার্ক অনেকেরই পড়ে। এবং তা স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে।
তাঁদের কথায় শিলমোহর দিয়েছেন অনেক খাদ্য বিশারদও। অত্যাধিক কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS)-এ আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীই Chocolate বা চকোলেট জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন।
কোষ্ঠকাঠিন্যের (Constipation) কারণ
সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন পেট পরিষ্কার হচ্ছে না মানেই আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত। মলত্যাগের সময় পায়ুদ্বারে ব্যথা, শুষ্ক মল ইত্যাদির সমস্যা হয়। পেটের ফোলাভাবও সারাদিন অস্বস্তিকর করে রাখে। দিন পুরো বরবাদ হয়ে যায়। সাধারণ কিছুদিন পর পেট পরিষ্কার হযে যায়। কিন্তু অতিরিক্ত কোষ্ঠকাঠিন্য কিন্তু কোলাইটিজ, অর্শ্বের মতো ভয়ানক রোগের কারণ হতে পারে।
– খাবারে ফাইবারের পরিমাণ কম থাকলে বা জল কম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
– অতিরিক্ত অ্যান্টাসিড, অ্যান্টিসিজিওর ওষুধ, ব্লাড প্রেশারের ওষুধ, আয়রন সাপ্লিমেন্ট, পার্কিনসনের ওষুধ, নার্কোটিক পেইন রিলিভার, অ্যান্টিডিপ্রেশন ওষুধ খেলেও কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
– এছাড়াও ডায়বিটিস, পার্কিনসন, স্ট্রোক, স্পাইনাল কর্ড বা মস্তিষ্কের অসুখ, টিউমার, থাইরয়েডের কারণেও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা যায়।
– অনেক মহিলা গর্ভাবস্থায় Constipation-এর শিকার হন।
– অনেক সময় অতিরিক্ত ভ্রমণ, কম ঘুম, ক্লান্তি কিংবা বয়সজনিত কারণেও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যে এতগুলি কারণের মধ্যে চকোলেট কোথা থেকে এল?
– সমীক্ষা বলছে কোষ্ঠকাঠিন্যের অন্যতম বড় ভিলেন হল চকোলেট। চকোলেটের মধ্যে থাকা কোকোয়া কোষ্ঠাকাঠিন্যের প্রধান কারণ। তবে শুধু চকোলেটই নয় এই কোকোয়া কেক, কুকি, কনডেন্স মিল্কে থাকলেও একই প্রতিক্রিয়া হয়।
– চকোলেটে থাকে ক্যাফেইন। এটি শরীরের জলের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে শরীরকে শুষ্ক করে দেয়। শরীরের জলের ঘাটতি হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া স্বাভাবিক।
– চকোলেটে থাকে প্রচুর পরিমাণে চিনি। অতিরিক্ত চিনি পেটের সমস্যা সৃষ্টি করে।
শরীরের প্রকারভেদে চকোলেটের প্রভাব
– Chocolate-এর প্রভাব একেকজনের শরীরের একেক রকম। যেমন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডায়বেটস্ অ্যান্ড ডায়জেস্টিভ অ্যান্ড কিডনি ডিজিজ-এর সমীক্ষা বলছে চকোলেট খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুলে থাকেন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষ।
– আবার কারও কারও শরীরে দেখা গেছে কোকোয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য সেরে যায়। বিশেষ করে কোকোয়ার ফাইবারের কারণে ছোটোদের ভালোমতো পেট পরিষ্কার হয়।
কতটা চকোলেট খাওয়া নিরাপদ
– কতটা পরিমাণ Chocolate খাওয়া নিরাপদ তা পুরোটাই নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক গঠনের উপর। অনেকেই প্রচুর চকোলেট খান। কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা তাঁদের হয় না। কেউ আবার সামান্য খেলেই শরীর কষে যায়। তাই চকোলেট খাওয়া উচিত নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী। চকোলেট খাওয়ার পর প্রচুর জল খেলে অবশ্য সমস্যার কিছুটা সমাধান হয়। তবে কোষ্ঠাকাঠিন্যে ভয়ানক কষ্ট পেলে চকোলেট না খাওয়াই উচিত। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায়
– প্রচুর জল খান।
– ফাইবারযুক্ত খাবার খান।
– সবুজ শাকসবজি, দানাশস্য এবং খোসাসুদ্ধ ফল খান।
– নিয়মিত শরীর চর্চা করুন।
– প্রতিদিন বাথরুম যাওয়ার অভ্যাস রাখুন।
– বেশি রাত জাগা বন্ধ করুন।
– অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হোমিওপ্যাথি বা আয়ুর্বেদে কোষ্ঠকাঠিন্য নির্মূলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন অব্যর্থ অষুধ আছে।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-04 10:28:26
Source link
Leave a Reply