হাইলাইটস
- ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে হলুদের অবস্থান বেশ সম্মানজনক।
- শুধু আয়ুর্বেদই আর বলি কেন রন্ধনশিল্পেও তো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ধরে রেখেছে হলুদ।
- শুভ কাজে Turmeric-এর চাহিদাও ব্যাপক।
- যদিও আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র অনুযায়ী Turmeric হল মূলত প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক।
Covid 19-এর দৌড়াত্ম্যে যখন চারদিকে হায় হায় অবস্থা তখন থেকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপর জোর দিতে শুরু করেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে ভ্যাক্সিনের প্রয়োগ পুরোদমে চললেও সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ থেকে তাঁরা সরে আসেননি। এখনও শরীরের ভিতরে স্বাভাবিক নিয়মে রোগ প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। আর এক্ষেত্রে একটি দারুণ ভেষজ পানীয় হল Turmeric Water। প্রাচীনকালে ভারতীয় মুনি ঋষিরা এই পানীয়কে চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করতেন। আজকাল ফাস্ট ফুডের বাজারে সেই প্রাচীন হেল্থ ড্রিঙ্ককে আধুনিক প্রজন্ম অবশ্য পাত্তা দিতে নারাজ। অথচ বিজ্ঞানের পূজারীরা এই প্রাচীয় ভারতীয় ভেষজ হেল্থ ড্রিঙ্কের উপর সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করেন। আধুনিক ডায়টিশিয়ানরা নিয়মিত হলুদ-জল পান করার পরামর্শ দেন।
হলুদে থাকে করক্যুমিন নামের একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি ত্বকের সমস্যা দূর করতে দারুণভাবে কাজ দেয়। অভিনেত্রীরা ত্বক সুন্দর রাখতে নিয়মিত হলুদ-জল পান করে থাকেন। দেখে নিন Health Benefits of Turmeric।
কীভাবে বানাবেন হলুদ-জল?
উষ্ণ গরম জলে এক চিমটি হলুদ দিয়ে গুলে নিন। মিহি করে কাঁচা হলুদ বাটা দিতে পারেন আবার হলুদ গুঁড়োও দিলে পারেন। প্রথম প্রথম হলুদ দেওয়া জলের স্বাদ হয়তো একেবারেই ভালো লাগবে না। কিছুদিনের মধ্যেই তা অভ্যাসে পরিণত হবে। তখন আর খারাপ লাগবে না। হলুদের করক্যুমিন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বৃদ্ধি করে। শরীরকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখে।
হলুদ জলের উপকার
ব্যথা-জ্বালা দূর করে- হলুদে থাকে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি গুণ। এটি ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে শরীরের জয়েন্টের ব্যাথা নিয়মিত হলুদ-জল সেবনে সেরে যায়।
লিভার ইনফেকশন- লিভারের সমস্যা হলে নিয়মিত হলুদ-জল পান করা উচিত। প্রাকৃতিক উপায়ে লিভারকে সুস্থ করতে সহায়তা করে এটি। শরীরে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে এটি। এছাড়াও লিভারের সংক্রমণ দূর করতেও ওস্তাদ এই হলুদ-জল।
হজমশক্তি বৃদ্ধি- নিয়মিত হলুদ-জল পান করলে হজম শক্তি বাড়ে। হলুদের অ্যান্টি ইনফ্লেমেটেরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্যাস, অম্বল, বদহজমের সমস্যা দূর করতে দারুণ কার্যকরী।
ত্বকের খেয়াল- স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য হলুদ-জল একেবারে ধন্বন্তরী। ত্বকের ব্রণ, ফুসকুরির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এই জল। লেবুর রস এবং মধুর সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে মুখে মাখুন। ত্বকের সমস্যা চলে যাবে। হলুদ-জল শরীরের যাবতীয় বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে দারুণ কাজ দেয়। ত্বকের বলিরেখা দূর করে। ত্বকে কালোভাব হালকা করে দেয় ধীরে ধীরে।
পিরিয়ডের সমস্যার সমাধান- শুধু অ্যান্টিসেপ্টিক বা পেটের সমস্যাই নয় হলুদ পিরিয়ডের ফ্লো স্বাভাবিক করতেও দারুণ কার্যকরী। হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে হলুদ। পিরিয়ডের যন্ত্রণাও কম করে। প্রতিদিন গরম দুধে বা জলে অর্ধেক চামচ হলুদ এবং সামান্য মধু বা গুড় মিশিয়ে খান। কিছুদিনের মধ্যেই ফলাফল দেখতে পাবেন।
মেলানিন দূর করে- ত্বকের মেলানিন দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করতেও হলুদের জুড়ি মেলা ভার।
হলুদ দুধের মতো দারুণ উপকারী হলুদ দুধও।
সকালে বা রাতে যে কোনও সময়ই এই দুধ পান করা যায়। তবে ডায়টিশিয়ানদের মতে রাতে পান করার ভালো। কারণ রাতে হলুদ-দুধ পান করার পর কয়েক ঘণ্টার ঘুমের ফলে শরীর সম্পূর্ণ বিশ্রাম পায়। এর ফলে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। ভালো ঘুম হয়, সকালে শরীর-মন তরতাজা থাকে। সারাটা দিন কাজে উৎসাহ মেলে। বিশেষ করে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন তাঁদের রাতেই হলুদ-দুধ পান করা উচিত। সর্দি-কাশি-জ্বরের হাত থেকেও এই হলুদ-দুধ শরীরকে রক্ষা করে। রাতে নিয়মিত এই দুধ খেয়ে ঘুমোলে ওজন কমে।
কীভাবে বানাবেন এই হলুদ দুধ?
দুধ ফুটিয়ে নিয়ে তাতে এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো, এক চিমটে দারচিনি গুঁড়ো এবং এক চিমটি গোলমরিচ গুঁড়ো ভালো করে গুলে নিন। মিনিট দশেক মিশ্রণটি রেখে দিন। উষ্ণ থাকতে থাকতেই চিনি, মধু বা গুড় মিশিয়ে দুধটা খেয়ে নিন। তবে চল্লিশোর্ধদের চিনি বর্জন করার উপদেশ দেশ চিকিৎসকরা।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-03 10:54:45
Source link
Leave a Reply