মধুমেহ আক্রান্ত মায়েরা স্তন্যপান করালে, কী সুবিধা লাভ করতে পারেন?
মা ও শিশু উভয়ের পক্ষেই স্তন্যপান সুফল দিতে পারে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী উপকারিতা লাভ করা যায় এবং মা ও শিশুর উভয়ের কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে আনে। মধুমেহ আক্রান্ত মায়েরা স্তন্যপান করানোর মাধ্যমে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এমনকি ভবিষ্যতে যাতে কোনও জটিল প্রক্রিয়ায় না-জড়িয়ে পড়ে, সে বিষয়ে রোধশক্তি গড়ে তোলা যায়।
মহিলাদের জন্য স্তন্যপান করানোর উপকারিতা
স্তন্যপান করালে মহিলাদের নানান রোগের ঝুঁকিও কমে যায়। যেমন–
১. হৃদযন্ত্রের সমস্যা।
২. মেদ বহুলতা।
৩. ডায়বিটিস মেলিটাস।
৪ হৃয়ুমাটয়েড আর্থ্রাইটিস।
৫. অস্টিওপরোরোসিস
৬. ব্রেস্ট ক্যান্সার।
৭. ওভারিয়ান ক্যান্সার।
৮. ইউটেরিন ক্যান্সার।
নানান রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি স্তন্যপান করালে মহিলারা অক্সিটোসিন ক্ষরণ বাড়াতে পারে, যা নতুন মায়েদের স্বস্তি দেয় ও পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনের ঝুঁকি কম করে।
মধুমেহ আক্রান্ত মহিলারা স্তন্যপান করালে যে উপকারিতা পেতে পারেন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ‘মাতৃদুগ্ধ শিশুদের সর্বশ্রেষ্ঠ আহার’, যা মহিলাদের স্তন্যপান করাতে উৎসাহিত করে। মধুমেহ আক্রান্ত মায়েদেরও নিজের সন্তানকে স্তন্যপান করানো উচিত। এর ফলে মা ও সন্তানের মধ্যে শুধুমাত্র দৃঢ় সম্পর্কই তৈরি হয় না, বরং মায়ের ওজনও কমে। ওজন কমলে মধুমেহ নিয়ন্ত্রণে সুফল পাওয়া যায়। ওজন কমানো ছাড়াও এর ফলে অতিরিক্ত ক্যালরিও পোড়ানো সম্ভব হয়। আবার মধুমেহ আক্রান্ত মহিলাদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তাও কমানো যায়। এমনকি স্তন্যপান করালে মেনস্ট্রুয়াল সাইকেল পুনরায় শুরু হওয়ার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করে। ঋতুস্রাব দেরিতে শুরু হলে হরমোনের পরিবর্তন প্রতিরোধ করা যায় এবং এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়ে হড়ে।
স্তন্যপানের সময় মধুমেহ আক্রান্ত মায়েদের কোন কোন বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি রাখতে হবে?
স্তন্যপানের একাধিক উপকারিতা থাকলেও, মধুমেহ আক্রান্ত মহিলাদের এ সময় বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত। স্তন্যপান করালে ক্যালরি ঝরে থাকে, শরীরের শর্করার পরিমাণ যাতে অস্বাভাবিক হারে কমে না-যায়, সে বিষয় মধুমেহ আক্রান্ত মহিলাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। এ ছাড়াও মধুমেহ রোগে গ্রস্ত থাকলে, সেই স্তন্যপান করিয়ে থাকা মহিলাদের মধ্যে ম্যাসটিটিস বা স্তনের প্রদাহের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এই ঝুঁকি কম করার জন্য দুটি স্তন দিয়েই শিশুকে দুগ্ধ পান করানো উচিত। কোনও ধরনের সংক্রমণ লক্ষ্য করলেই নিজের চিকিৎসককে জানিয়ে রাখতে হবে।
স্তন্যপানকারী শিশুর মধ্যেও কী মধুমেহ স্থানান্তর করা যায়?
না! তা এক্কেবারেই সম্ভব নয়। এর পরিবর্তে বলা যেতে পারে যে, স্তন্যপান তাঁদের নিরাপত্তা প্রদান করে। শিশুর খাদ্যবস্তু হিসেবে মাতৃদুগ্ধ সর্বশ্রেষ্ঠ। এমনকি স্তন্যপান করিয়ে থাকলে, সেই শিশুর মধ্যে পরবর্তী কালে মধুমেহ আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতাও কম দেখা যায়। এ ছাড়াও স্তনদুগ্ধ নানান সংক্রমণ ও অন্যান্য রোগের হাত থেকে নিরাপদ রাখে।
স্তন্যপানে সুবিধার জন্য মধুমেহ আক্রান্ত মায়েদের জন্য কিছু টিপস
অনেক সময় স্তন্যপান করানো চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়ে, বিশেষত মধুমেহ আক্রান্ত মহিলাদের ক্ষেত্রে। স্তন্যপানে সুবিধার জন্য মধুমেহ আক্রান্ত মায়েদের জন্য এ ক্ষেত্রে কিছু টিপস দেওয়া হল—
১. স্তন্যপান করানোর আগে ও পরে হাল্কা বা স্ন্যাক জাতীয় কিছু খান।
২. যেখানে বসে আপনি নিজের সন্তানকে দুগ্ধপান করিয়ে থাকেন, সেখানে একটি এমারজেন্সি স্ন্যাক রেখে দিন।
৩. শিশুকে দুধ পান করানোর আগে নিজের রক্তে শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করে দেখুন।
৪. চাপমুক্ত থাকুন।
৫. হাইড্রেট থাকার জন্য প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন।
৬. সন্তান প্রসবের পরই স্তন্যপান করানো শুরু করে দিন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-03 10:10:07
Source link
Leave a Reply