হাইলাইটস
- মিরিক শব্দটি এসেছে লেপচা শব্দ মির-ইওক থেকে। বাংলার এর অর্থ অগ্নিদগ্ধ স্থান।
- নামের অর্থ যতই ভয়ানক হোক না কেন ছোট্টো এই শহরটি কিন্তু খুব সুন্দর দেখতে।
- আগুন, ছাই, পোড়া কোনোকিছুর অস্থিত্বই এখানে পাবেন না। মধ্যবিত্ত বাঙালির সস্তায় সাহেবি ভ্রমণের ঠিকানা দার্জিলিং।
এখানকার আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং যাতায়াতের সুব্যবস্থার জন্য ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয়। মিরিকের প্রধান আকর্ষণ সুমেন্দু হ্রদ। এই হ্রদের একদিকে রয়েছে সাবিত্রী পুষ্প উদ্যান নামে বাগান এবং অন্যদিক পাইন গাছের জঙ্গল। হ্রদ মধ্যস্থ খিলান সাঁকো ইন্দ্রেনি পুল দিয়ে বাগান থেকে পাইন বন এবং পাইন বন থেকে বাগানে পায়ে হেঁটে চলাচল করা যায়। সাবিত্রী থাপা এবং ইন্দ্রেনি থাপা উভয়েই ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আইএনএ-এর সংগ্রামী। এখান থেকে কাঞ্জনজঙ্ঘার অপূর্ব দৃশ্য মনকে স্নিগ্ধ করে দেয়। সুমেন্দু হ্রদের জলে চলে নৌকাবিহারও।
দার্জিলিং জেলার অন্ততম প্রধান ব্যবসায়িক কেন্দ্র হল এই মিরিক। মিরিক বাজারে আশপাশের গ্রাম এবং চা বাগানের মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাবেচা করেন। সুমেন্দু হ্রদের পাশের বাগানটি ছিল ব্রিটিশদের পোলো গ্রাউন্ড।
মিরিকের জলবায়ু সারাবছরই বেজায় মনোরম। গ্রীষ্মকালে খুব বেশি হলে এখানকার তাপমাত্রা হয় ৩০° সেলসিয়াস এবং আর শীতে তা নেমে দাঁড়ায় ১° সেলসিয়াসে।
বাগডোগরা বিমান বন্দর থেকে মিরিকের দূরত্ব প্রায় ৫২ কিলোমিটার। মিরিকের সবচেয়ে কাছের রেল স্টেশনটির নাম নিউ জলপাইগুড়ি। শিলিগুড়ি এবং দার্জিলিং থেকে বেশ কয়েকটি বাস মিরিকে যায়। রয়েছে শেয়ার ট্যাক্সির ব্যবস্থা। স্বাচ্ছন্দ্যে মিরিক ঘুরতে গেলে গাড়ি ভাড়াও মেলে।
– মিরিক আদতে একটি পাহাড়িয়া মফঃস্বল। একে ঘিরে রয়েছে সৌমিরিনি, থার্বো, গোপালধারা এবং ফুগুরি চা বাগান।
– মিরিকের খুব কাছেই অবস্থিত বোকার গুম্ফা। তিব্বতিরা এখানে ভগবান বুদ্ধের আরাধনা করেন। এটি একটি শান্ত এবং নিস্তব্ধ এলাকা। চারধারের পাইন গাছের জঙ্গল মিরিকের সৌন্দর্যকে আরও রহস্যময় করে তোলে। আর রামিতে দারা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য তো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় দেখার জায়গার কমতি নেই মিরিকে।
– মিরিকের প্রধান আকর্ষণ ‘সুমেন্দু লেক’। লেকের উপর একটি ৮০ ফিট দীর্ঘ সাঁকো দিয়ে হাঁটাচলা, জলে নৌকাবিহার এবং টাট্টু ঘোড়ায় চেপে লেকের চারপাশ প্রদক্ষিণ করার ব্যবস্থা রয়েছে।
– রামিতে দারা ভিউ পয়েন্ট থেকে চারপাশের পাহাড় ও বিস্তীর্ণ সমভূমি অঞ্চল দেখতে পাওয়া যায়। মিরিকের পানীয় জলের প্রধান উৎস ও পিকনিক স্পট রাই ধাপে একবার অন্তত ঘুরে আসা উচিত। সুমেন্দু লেকের কাছেই টিলার উপর অবস্থিত হিন্দু মন্দির দেবীস্থান।
– টিংলিং ভিউপয়েন্ট এখান থেকে চা-বাগানগুলির ৩৬০ডিগ্রি প্যানারমিক ভিউ পাওয়া যায়।
– মিরিকে কমলালেবু জগৎ বিখ্যাত। মিরিক বস্তি, মুরমা ও সৌরেনি বস্তি অঞ্চলে কমলালেবুর ফলন হয়। সেই বাগানগুলি ঘুরে আসা যায়।
– আন্তর্জাতিক ফুলের বাজারের মিরিকের অর্কিডের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশ্বের অন্যতম দামি অর্কিড সিমবিডিয়াম চাষের জন্য মিরিকের জলবায়ু খুবই উপযোগী। মিরিকের রাতো মেট-এ এরকমই একটি সিমবিডিয়াম অর্কিডের বাগান রয়েছে যার নাম “দার্জিলিং গার্ডেন্স প্রাইভেট লিমিটেড”।
– বানকুলুং বা জয়ন্তী নগর অঞ্চলে ইকোট্যুরিজমকে জনপ্রিয় করার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়। এখানে রয়েছে অনেকগুলি হোমস্টেও।
– শপিং করতে চাইলে নেপালের পশুপতিনগর আদর্শ জায়গা। এটি নেপাল সীমান্তবর্তী একটি জামাকাপড়, ইলেকট্রনিক্স এবং ঘরোয়া সামগ্রীর বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র।
– মিরিকের ডন বসকো স্কুলের কাছেই অবস্থিত ডন বস্কো ক্যাথলিক চার্চ দার্জিলিং জেলার অন্যতম সুন্দর এবং বড় ক্যাথলিক চার্চ।
নিরিবিলিতে থাকতে গেলে মিরিকের সুইস কটেজ বা মোটেল দারুণ জায়গা। শহরের ভিড় থেকে দূরে মিরিকের সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত একটি খুবই সুন্দর লজ। বিভিন্ন বাজেটের থাকার জায়গা। রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্যুরিস্ট লজও। খাঁটি বাঙালি খাবার যেমন পাবেন তেমনই নেপালি গোর্খা তিব্বতি পদও মেলে এখানে। মিরিক লেকের কাছেই গরম গরম ফাস্ট ফুড পরিবেশন করে বেশ কয়েকটি দোকান। তবে সূর্য ডোবার পর দোকানের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায়।
মিরিক থেকে রিশপ, সিটং, লাভা, চটকপুর, গজলডোবা সহজেই যাওয়া যায়।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-01 16:41:17
Source link
Leave a Reply