বিভিন্ন সময় আমাদেরকে রুগীর জীবন রক্ষার্থে রক্ত পরিসঞ্চালিত করতে হয়। রক্ত পরিসঞ্চালন মানে হচ্ছে, একজনের দেহ থেকে রক্ত নিয়ে সেই রক্তের গ্রুপ ও আর এইচ ফ্যাক্টর দেখে এবং ক্রস ম্যাচিং করে একই গ্রুপধারী অন্য কোনো ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করানো। একজন সুস্খ সবল ব্যক্তি যার বয়স ১৮-৫০ এর মধ্যে তিনি প্রতি চার মাস অন্তর এক ব্যাগ রক্ত মুমূর্ষু ব্যক্তির জীবন বাঁচাতে দান করতে পারেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, এ ব্যাপারে আমাদের দেশের মানুষ ততটা সচেতন নয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আমাদের দেশে প্রতিবছর রক্তের চাহিদা প্রায় ৪ লাখ ব্যাগ। এই চাহিদার বেশ বড় একটা অংশই যোগান দেয় পেশাদার রক্ত বিক্রেতারা। এসব লোক থাকে নেশাগ্রস্ত এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। এরা অত্যন্ত নিচু শ্রেণীর অর্থনৈতিক লোক হওয়ায় এদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও কম থাকে। এদের রক্ত দিলে রক্ত পরিসঞ্চালিত করে বহু লোক আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন এইডস, হেপাটাইটিস, সিফিলিস, ম্যালেরিয়াসহ বিভিন্ন রোগে।
এ জন্য বিশ্ব স্বাস্খ্য সংস্খা বা (WHO) রক্ত পরিসঞ্চালনের আগে এর পাঁচটি স্ক্রিনিং টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে। এই টেস্ট পাঁচটি হচ্ছেঃ
(১) Hhs Ag (হেপাটাইটিস বি আছে কি না দেখার জন্য)।
(২) HCV (হেপাটাইটিস সি আছে কি না দেখার জন্য)।
(৩) VDRL ( সিফিলিসের জীবাণু আছে কি না দেখার জন্য)।
(৪) HIV (এইডসের জীবাণু আছে কি না দেখার জন্য)।
(৫) MP (ম্যালেরিয়া আছে কি না দেখার জন্য)।
তাই, রক্ত পরিসঞ্চালনের আগে উপরোক্ত পাঁচটি স্ক্রিনিং টেস্ট করানো হয়েছে কি না তা অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নেবেন। স্ক্রিনিং ছাড়া কখনো রক্ত নেবেন না, এমন কি আপনার অতি আপনজনেরও যদি হয় তাহলেও না । কারণ তার রক্তেও যুক্ত থাকতে পারে মারণঘাতী কোনো রোগের জীবাণু, যা সে নিজেও জানে না হয়তো বা। তাই, দূষিত রক্ত গ্রহণকে না বলুন, নিরাপদ রক্ত গ্রহণকে হ্যাঁ বলুন।
উৎসঃ দৈনিক নয়াদিগন্ত, ২৫শে নভেম্বর ২০০৭
লেখকঃ ডা. এম এম নওশের
Leave a Reply