উত্তরার বাসিন্দা শাহনাজ উর্মি। প্রায় আট বছরের সংসার। ঘরের আসবাবপত্রের প্রতি তাঁর প্রচণ্ড ঝোঁক। এক এক করে আসবাবপত্রে ভরে গেছে তাঁর ফ্ল্যাট। লিভিং রুম, বেড রুম, ডাইনিং রুম, কিচেন রুমের প্রতিটি কোনায় শোভা পাচ্ছে বাহারি সব আসবাবপত্র। বেড, স্টিলের আলমারি, চেস্ট ড্রয়ার, টিভিস্ট্যান্ড, সোফাসেট, শোকেস, ডায়নিং টেবিল, চেয়ার, ডিনার ওয়াগন—কী নেই। ড্রেসিং টেবিল, ওয়ারড্রব, বুকসেলফ, কম্পিউটার টেবিল, ডিসপ্লে সেলফ, আলমারি ইত্যাদি রকমারি আসবাব উর্মির ঘরে। কিন্তু পছন্দের আসবাব নিয়ে পড়েছেন বিবাকে। দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে অনেক আসবাব তাদের সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছে। যেসব আসবাব সৌন্দর্য হিসেবে ছিল, তা আজ অনেকটা সৌন্দর্যহানিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ধীরে ধীরে সংগ্রহ করা এসব আসবাব তো আর চাইলেই পাল্টানো যায় না। তা ছাড়া এতগুলো আসবাব তো আর একসঙ্গে কেনা সম্ভব নয়। সত্যিকার অর্থে উর্মির মতো অনেক গৃহিণী ঘরের আসবাব নিয়ে বিপাকে পড়ে যান। তবে আসবাবে আবার যদি নতুনের আবহ আনা যায় তাহলে কোনো কথা নেই।
কাঠের সাধারণ আসবাবপত্র
আমাদের অনেকেরই ঘরে শোভা পায় বিভিন্ন কাঠের আসবাব। আসবাব জগতে আধুনিক নানা আসবাব এসে জায়গা করে নিলেও কাঠের তৈরি আসবাবের দিকে সবার একটা বিশেষ পছন্দ যেন কাজ করে। কাঠের তৈরি আসবাবের যদি রং নষ্ট হয়, সেগুলো আবার পলিশ করে নিতে পারেন। এতে খুব বেশি খরচ হবে না, আবার জিনিসটা দেখাবে নতুনের মতোই। কাঠের তৈরি আসবাব হাতে পলিশ করতে হবে। এ জন্য আসবাবপত্র তৈরি করে এমন প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করতে পারেন। তাদের নিজেদের রংমিস্ত্রি থাকে। আর যদি আসবাবপত্র বেশি হয় তাহলে আপনি চলে যেতে পারেন পান্থপথে অথবা শেওড়াপাড়ায়। এসব এলাকায় পাবেন পলিশ করার লোক। তাদের সঙ্গে আপনি দুই ভাবে চুক্তি করতে পারেন। দৈনিক হাজিরা হিসেবে বা পুরো কাজের জন্য। দৈনিক হিসেবে প্রতিজন মিস্ত্রিকে দিতে হয় ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। পুরো কাজের জন্য আসবাবপত্রের আকার ও নকশা দেখে মজুরি নির্ধারিত হবে।
লিকার পলিশ
আপনার আসবাব যদি কাঠের না হয় তবে আপনাকে লিকার পলিশ করতে হবে। হাতের চেয়ে লিকার পলিশ একটু ব্যয়বহুল। লিকার পলিশের জন্য লোকও আপনি শেওড়াপাড়া বা পান্থপথ এলাকায় পাবেন। এ ক্ষেত্রে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ না দিয়ে চুক্তিতে দিতে পারেন। আসবাবের ধরন ও আকৃতি অনুযায়ী বড় ধরনের আসবাবপত্রের ক্ষেত্রে লিকার পলিশ করতে খরচ হবে দেড় থেকে তিন হাজার টাকা।
ব্র্যান্ড আসবাব
আপনার ঘরে যদি থাকে অটবি, পারটেক্স, হাতিল বা আখতারের মতো ব্যান্ড, তাহলে তো আপনি সহজেই পলিশ করাতে পারবেন। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের পণ্যের ক্ষেত্রে লিকার পলিশ করে দেয়। এ জন্য আপনাকে তাদের গ্রাহক সেবাকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। তারা আপনার বাসায় লোক পাঠাবে। যদি বাসায় কাজ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে আপনার আসবাবটি তারা তাদের কারখানায় পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ করে বাসায় পৌঁছে দেবে। এসব প্রতিষ্ঠানে পলিশ করতে কোম্পানিভেদে প্রতি বর্গফুটে খরচ হয় ৫০ থেকে ১০০ টাকা। এর বাইরে আপনাকে পণ্য পরিবহন খরচ বহন করতে হবে।
সাইদ আরমান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ২৩, ২০১০
Leave a Reply