মাছি ব্যাকটিরিয়া এবং নানান ক্ষতিকর জীবাণু বহন করে থাকে। উল্লেখ্য, ময়লা, আবর্জনা, নর্দমা, মল-মূত্র ইত্যাদি বিভিন্ন নোংরা স্থানে মাছি গিয়ে বসে। পরে সেই মাছিই খাবার-দাবাররে ওপরে বসলে এবং আমরা সেই খাবার খেলে শরীরে নানান ব্যাক্টিরিয়া ও জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে।
ফলে উপস্থিত শর্করা মাছিকে আকৃষ্ট করে। অতিরিক্ত পাকা বা পচা ফলে বসে মাছি। পচা কলা, আম, আপেল, আঙুর বা যে কোনও বেশি পাকা ফল, বিশেষত যেগুলি ফেলে দেওয়া হয় বা ফ্রিজের বাইরে রাখা হয়, সেগুলির ওপর মাছি বসে।
বাড়ি থেকে মাছি দূর করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল ঘরদোর পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন রাখা। বাড়ি পরিষ্কার থাকলে, পচা, গলা ফল না-থাকলে এবং খাদ্যবস্তু ভালো ভাবে ঢাকা থাকলে মাছির উপদ্রবও ধীরে ধীরে কমে যাবে।
রোগ, জীবাণু বহনকারী এই পতঙ্গের উৎপাত থেকে মুক্তির নানান উপায় রয়েছে। সেগুলিই এখানে জেনে নেওয়া যাক–
১. ফল, শাক, সবজি ভালোভাবে ধুয়ে রাখুন। আবার খাওয়ার বা রান্নার আগে দু-তিনবার ধুয়ে নিতে হবে। অনেক সময় অন্যান্য পচনশীল ফলের সঙ্গে লেগে অন্য ফলের উপরিভাগ চ্যাটচ্যাটে হয়ে পড়ে। এমন কিছু চোখে পড়লে সেই ফল ও সবজিগুলিকে ভালো ভাবে ধুয়ে নিন। বাড়িতে বেশি পাকা ফল থাকলে তা সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলুন, সামান্য পচন ধরলেও বাড়িতে না-রেখে তা ফেলে দিন। অধিক পাকা ফল মাছিদের সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে।
২. বাড়ির বাইরে আবর্জনার স্তূপ থাকলে তা ঢেকে রাখতে হবে। ঘন ঘন আবর্জনা সরিয়ে ফেললে মাছির উপদ্রব কম করা যায়। মাছি এই আবর্জনার স্তূপেই ডিম পাড়ে। তাই আবর্জনা জমতে না-দেওয়াই ভালো। এর ফলে মাছির বংশবিস্তার কমবে। আবার বাড়িতে আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিন থাকলেও, সেটিও ঢাকা দিয়ে রাখবেন।
৩. প্রতিদিন ভালোভাবে রান্নাঘর পরিষ্কার করুন। ফ্রিজের নীচে বা আশপাশে পরিষ্কার রাখুন, যাতে এখানে কোনও ভাবে খাবার পড়ে না-থাকে বা পাকা ফলের রস লেগে মাছিদের আকৃষ্ট করতে না-পারে। রান্নাঘরে গ্যাস ওভেনের ওপরেও রান্নার সময় খাবার-দাবার লেগে যায়। এই সমস্ত স্থানই মাছিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকে। অতএব প্রতিবারের ব্যবহারের পর গ্যাস ওভেন পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। এ ছাড়া বাসন মাজার ভেজা স্পঞ্জ, ঘর মোছার কাপড়, রান্নাঘর থেকে দূরে রাখুন। ফলের রস বা কৃত্রিম রং ও গন্ধযুক্ত খাবারের পাত্র সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে নিন।
৪. মশার মতো হাত দিয়ে মাছি মারা যায় না। যতক্ষণে মাছি মারার জন্য হাত তুলবেন ততক্ষণে সে ফুরুৎ হয়ে যায়। তবে ফাঁদ পেতে এদের সায়েস্তা করতে পারেন। এর জন্য একটি গ্লাসে সামান্য অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিন। ভুলেও গ্লাস ভর্তি ভিনিগার নেবেন না। এর পর গ্লাসের মুখটি সেলোফেন পেপার দিয়ে মুড়িয়ে দিন। এবার একটি টুথপিক দিয়ে সেলোফেন পেপারের মাঝে একটি ফুটো করুন। এই ফুটোর মধ্যে দিয়ে একটি মাছি গলে যেতে পারে, তেমন বড় ছিদ্র করুন। লক্ষ্য রাখবেন, ফুটো এমন হবে, যার মধ্যে দিয়েমাছি ঢুকতে পারে, কিন্তু বেরোতে না-পারে। ভিনিগারের মিষ্টি গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে ভিতরে ঢুকে আটকে যাবে মাছি। যে স্থানে সবচেয়ে বেশি মাছির আনাগোনা লেগে থাকে, সেখানে এটি রাখুন।
৫. মাছি দূর করা ও মেরে ফেলার অন্যতম কার্যকর উপায় হল কাগজের চোঙা। একটি লম্বা জলের পাত্র বা ফুলদানিতে যে কোনও তরল পদার্থ ভরে নিন। এর পর কাগজ দিয়ে চোঙা বানিয়ে ওই পাত্রে রাখুন। তরল পদার্থের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে মাছিগুলি কাগজের চোঙা দিয়ে ভিতরে ঢুকবে কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না। মাছি বংশবিস্তারের স্থানে ফাঁদ পাতুন।
উল্লেখ্য, এমনই কোনও পাত্রে তরলের পদার্থের সঙ্গে সাবান ঘোলা জল বা গরম জল ব্যবহার করতে পারেন। এতে মাছি মারা যাবে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-28 16:15:59
Source link
Leave a Reply