ক্রনিক সাইনুসাইটিস একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ। নাকের চারপাশে হাড়ের বাতাসপূর্ণ কুঠুরি থাকে, যেগুলোকে সাইনাস বলা হয়। সাইনুসাইটিস হলো সাইনাসের ব্যাকটেরিয়াজনিত প্রদাহ।
সাইনাসের প্রদাহের কারণঃ সাইনাসের প্রদাহের মধ্যে ম্যাগজিলারি সাইনাসের প্রদাহ সবচেয়ে বেশি হয়। একিউট সাইনুসাইটিস ও শ্বাসনালির ওপরের অংশের প্রদাহ, এলার্জি, অপুষ্টি, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে থাকলে, দীর্ঘদিন ধরে দাঁতের রোগ থেকেও প্রদাহ হতে পারে। শ্বাসনালির ছিদ্র সরু হলেও এরকম হতে পারে। তবে বেশির ভাগ সাইনাসের প্রদাহ নাকের প্রদাহ থেকে হয়ে থাকে।
লক্ষণঃ নাকের পাশে অনবরত ব্যথা, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মাথাব্যথা হতে পারে। সব সময় নাক বন্ধ থাকা। কোন স্বাদ ও ঘ্রাণ বুঝতে না পারা। সাধারণত বিমর্ষতা, অস্থিরতা ও অনীহা জাগা। মাঝেমধ্যে জ্বর আসা। মিউকোসার আবরণ পাতলা হয়ে যাওয়া।
চিকিৎসাঃ সাইনাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের জন্য প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। এ ছাড়া ধুলাবালি, ধূমপান, এসব থেকে বিরত থাকতে হবে। দাঁতের ক্ষয় এবং অন্যান্য পচনশীল পদার্থ থেকে দাঁতকে রক্ষা করতে হবে। ব্যথার জন্য ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। যেহেতু ক্রনিক সাইনুসাইটিস একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত অসুখ, সুতরাং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হয়।
ওষুধের মাধ্যমে ভালো না হলে, সাইনাস পরিষ্কার করতে হবে। অনেকের ভুল ধারণা আছে, একবার সাইনাস ওয়াশ করলে বারবার করতে হবে। ধারণাটা সঠিক নয়। ব্যাকটেরিয়াজনিত সাইনুসাইটিস ওয়াশ করে উপযুক্ত মাত্রা ও নিয়মে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে রোগী সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়।
বর্তমানে সাইনাস রোগের চিকিৎসায় এন্ডোসকোপিক সাইনাস সার্জারি করা হয়। এর মাধ্যমে এন্ডোসকোপ ও মনিটরে দেখে সাইনাসের সব ধরনের সার্জারি করা যায়। এটা সাইনাসের সব রোগের আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসা। এর অপারেশনে বেশি কাটা-ছেঁড়া করতে হয় না। যার ফলাফল খুবই ভালো হয়। বাংলাদেশের বড় বড় হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়মিত এন্ডোসকোপিক সাইনাস সার্জারি হচ্ছে।
অধ্যাপক ডা· এম আলমগীর চৌধুরী
বিভাগীয় প্রধান, নাক-কান ও গলা বিভাগ, মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন অ্যান্ড হসপিটাল· উত্তরা, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ১৮, ২০০৯
Leave a Reply