শিল্পের সঙ্গে প্রকৃতিও যেন একাত্মতা ঘোষণা করেছিল। ফ্যাশন ডিজাইনার মাহিন খান ও চিত্রশিল্পী আফরোজা জামিলের উদ্যোগে বাংলাদেশ আর্ট কাউন্সিল আয়োজন করে ‘বসন্তকালীন চিত্রকলা মেলা ২০১০।’ ১৩ মার্চ ঢাকার উত্তর গুলশান লেক পার্কে দিনব্যাপী এ মেলা চলে। গেটের বাইরে থেকেই বাঁশির সুর ভেসে আসছিল। বাংলাদেশের ৩০ জন শিল্পী তাঁদের চিত্রকলা নিয়ে এসেছিলেন। এখানে শিল্পীরা পুকুরে ফুল ছিটিয়ে দেন। অনেকে স্টলে বসেই আঁকছিলেন। কেউ করছিলেন গ্লাস পেইন্ট, কেউবা মিক্সমাধ্যম, অ্যাক্রিলিক ও জলরং ব্যবহার করেন। এক পাশে মৃিশল্পী তৈয়বুজ্জামান তপু তাঁর পোড়ামাটির জিনিসপত্র নিয়ে ছিলেন। সেখানে চাকার সাহায্যে যে কেউ কাঁদা দিয়ে জিনিসপত্র বানানোর সুযোগ পান।
ধামরাই ‘মেটাল ক্রাফট’ নিয়ে বসেছিল নান্দনিক কারুকাজের জিনিসপত্র। কানের দুল, হাতের বালা, মোমদানি, কাঁসার থালা নজর কেড়েছিল। অন্যপাশে ফ্যাশন হাউস ‘চন্দন’ তাদের নানা জিনিসের পসরা সাজিয়েছিল। হাতপাখা, বটুয়া হাতা, ওড়না, বসার টুল মোড়া কী নেই সেখানে। অনেক শিল্পীর চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়। পিছিয়ে ছিল না ছোটরাও। বাবা-মায়ের দেখাদেখি তারাও আঁকতে শুরু করে। এ মেলায় উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদ। তিনি জানান, ‘ভালো লাগছে এখানে এসে। অনেক শিল্পীর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। শিল্পীদের মিলনমেলা যেন।’ বাংলাদেশ আর্ট কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মাহিন খান জানান, অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম এ ধরনের একটি আয়োজনের কথা। চিত্রশিল্প কেমন যেন গ্যালারিভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া অনেক শিল্পী হারিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা কাজ দেখানোর সুযোগ পাচ্ছেন না। সে কারণে পর্বভিত্তিক এমন আয়োজন আরও করতে চাই।
বাংলাদেশ আর্ট কাউন্সিলের সভাপতি আফরোজা জামিল বলেন, ‘প্রকৃতির কাছাকাছি শিল্পকে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছে। যাতে তা মানুষের কাছেও পৌঁছাতে পারে।
মেলায় ফ্যাশন হাউস মায়াসিরের জিনিসপত্রও প্রদর্শিত হয়। তাদের তৈরি কাপড়ের ব্যাগগুলো কিনেছিলেন অনেকেই। পাশাপাশি ছিল সবজি, মিষ্টি, পাপড়ি চাট, কাবাবরোল খাওয়ার ব্যবস্থা। এ মেলায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চিত্রশিল্পী কালিদাস কর্মকার, কনকচাঁপা চাকমাসহ অনেকে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ১৬, ২০১০
Leave a Reply