আচ্ছা, অতীত কালে তো ডাক্তার ছিল না। আর ছিল না নামকরা ব্রান্ডের পেস্ট ব্রাশ দাঁত মাজার জন্য। তাহলে কি তখন মানুষের দাঁত থাকতো হলদেটে আর দাগে ভরা? মোটেই না। মানুষের কাছে তখন ছিল হরেক রকম ঘরোয়া টিপস। আর তেমনই একটা হচ্ছে কলার খোসা দিয়ে দাঁত সাদা করা।
কলার খোসায় আছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান। বিশেষ করে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম আর ম্যাঙ্গানিজ। আর এরাই হচ্ছে দাঁতকে সাদা করে তুলবার প্রধান হাতিয়ার। এছাড়াও কলার খোসায় আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি, যারা কিনা দাঁতকে মজবুত করে তোলার পাশাপাশি খনিজ উপাদান গুলো শোষণ করতেও সহায়তা করে। কলার খোসা নিঃসন্দেহে সাদা করে তুলবে আপনার দাঁত, তবে ব্যবহার করতে হবে সঠিক পদ্ধতিতে। এবং অবশ্যই নিয়ম মেনে। জেনে নিন বিস্তারিত পদ্ধতি।
১) প্রথমেই বেছে নিন সঠিক কলা। দাঁত সাদা করার জন্য ঠিক ভাবে পাকা কলা হওয়া জরুরী। খুব বেশি পাকাও নয়, খুব বেশি কাঁচাও নয়। এমন কলা বেছে নিন যারা কিনা এখন নিচের দিকে একটু একটু সবুজ। কেননা এই ধরনের কলায় পটাশিয়াম থাকে উচ্চ মাত্রায়। আর এই পটাশিয়ামই দাঁত সাদা করার দায়িত্ব নেবে।
২) কলা উলটো করে ছিলে নিন। হ্যাঁ, যেভাবে আপনি ছিলে থাকেন কলা ঠিক তার উলটো দিক থেকে ছিলে নিন। দেখবেন যে কলার গায়ে লম্বা লম্বা সুতার মতন আঁশ থাকে। উলটো করে ছিলে নিয়ে এই আঁশ গুলো থাকবে খোসার সাথেই।
৩) খোসা থেকে চারকোনা করে দুটি টুকরো কেটে নিন। আপনার সুবিধা মতন আকারেই কেটে নিন। চাইলে এই কাটা খোসা ফ্রিজেও সংরক্ষণ করতে পারেন।
৪) এবার সকালে দাঁত ব্রাশ করবার পূর্বে এই কলার খোসার ভেতরের অংশটি দিয়ে আপনার দাঁত খুব ভাল করে ঘষুন। প্রথম টুকরোটি দিয়ে পুরো এক মিনিট ঘষুন। তারপর সেটা বদলে দ্বিতীয় টুকরোটি দিয়ে আরও এক মিনিট। অর্থাৎ পুরো দুই মিনিট দাঁতকে ঘষুন। দাঁতের প্রত্যেকটি অংশে যেন পৌছায় এমন ভাবে ঘষতে হবে।
৫) দাঁত ঘষা হলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট করতে পারলে ভালো। এই সময়ে পানি বা অন্য কিছু খাবেন না, কিংবা কুলি করবেন না। সময়টা পেরিয়ে গেলে আপনার নিয়মিত ব্যবহারের টুথ পেস্ট দিয়ে দাঁত মেজে নিন।
এবার আয়নায় তাকিয়ে দেখুন তো, লাগছে না দাঁত একটু বেশি পরিষ্কার? ৪/৫ দিন এমন করার পরেই দেখবেন আগের চাইতে অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে আপনার দাঁত। হলদে ভাব যেমন কমে গেছে, তেমনি কালো ছোপটাও অনেকটাই সরে গেছে। যারা ধূমপান বা মদ্যপান করেন, তাদের ক্ষেত্রেও কাজ করবে এই পদ্ধতি। তবে ব্যবহার করতে হবে বেশ দীর্ঘদিন। এবং সঠিক নিয়েম মেনে।
অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে-
১) এটা কোনও ম্যাজিক নয়। তাই ভালো ফল পেতে নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে হবে।
২) অবশ্যই কমপক্ষে ২ মিনিট ঘষতে হবে। এই সময়টা জরুরি। বেশি ঘষলে আরও ভালো।
৩) ঘষার পর অবশ্যই সময় দিতে হবে খনিজ গুলো দাঁতে শোষিত হবার।
৪) যাদের দাঁত মদ্যপান, ধূমপান বা অসুস্থতার কারণে হলুদ তাদের ক্ষেত্রে একটু সময় লাগবে।
৫) কলার খোসায় প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। তাই অবশ্যই দাঁত খুব ভালভাবে মেজে নিতে হবে। এবং এই কারণেই দিনে ১ বারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না।
৬) যাদের দাঁত খুব একটা বেশি হলুদ নয়, তারা সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।
এস সি
স্বাস্থ্য | DesheBideshe
2021-07-24 20:35:54
Source link
Leave a Reply