হাইলাইটস
- চাকরি সূত্রে ম্যাথুর সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর।
- বন্ধুত্ব গাঢ় হয়।
- একটি বিচ হলিডে কাটাতে গিয়ে এক রোম্যান্টিক মুহূর্তে অ্যাশলেকে বিয়ের জন্য প্রোপোজ করেন ম্যাথু
গোড়া থেকেই বলা যাক। অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা অ্যাশলে প্রায় তিরিশ বছর পর্যন্ত বিন্দাস জীবন কাটিয়েছেন। চাকরি করতেন। স্বাধীন জীবন। সময় পেলেই বিশ্বের নানা দেশ ঘুরে বেড়াতেন। প্রায় ২০টি দেশ একাই ঘুরে বেড়িয়েছেন অ্যাসলে। বিয়ে থা করে সংসার করার ইচ্ছেই ছিল না তাঁর। ঘুরে বেড়িয়ে, আনন্দ করে, খেয়ে দেয়ে, পার্টি করেই দিন কাটানোর প্ল্যান ছিল তাঁর। যে দেশে বেড়াতে যেতেন সেখানেই কিছু দিনের জন্য একটা চাকরি খুঁজে নিতেন। তাতে দেশ ভ্রমণের খরচটাও উঠে যেত।
তিরিশ বছরের জন্মদিনে বাড়ি ফেরেন। দেখেন তাঁর কয়েকজন বান্ধবী সংসার পেতে সুখে আছেন। মনে মনে প্রেম ভাব জেগে ওঠে অ্যাশলের। যাযাবর জীবন থেকে সংসার শুরু করাটা তো খারাপ কিছু নয়।
প্রায় এক বছর পর ম্যাথু নামে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় অ্যাশলের। চাকরি সূত্রে ম্যাথুর সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। বন্ধুত্ব গাঢ় হয়। একটি বিচ হলিডে কাটাতে গিয়ে এক রোম্যান্টিক মুহূর্তে অ্যাশলেকে বিয়ের জন্য প্রোপোজ করেন ম্যাথু। বলা বাহুল্য অ্যাশলেও হ্যাঁ বলতে দেরি করেননি। এরপর শুরু হয় ভবিষ্যতের নানা প্ল্যান। আলোচনায় ছিল মূলত বেড়াতে যাওয়ার নানা প্ল্যান। কোথায় যাবেন, কখন যাবেন, সেখানে গিয়ে কী কী করবেন এসব নিয়ে আলোচনা করতে করতেই ঘণ্টা তিনেক কেটে যায়। তখনই ম্যাথু বলেন যে সন্তান হলে তো আর বেড়াতে যাওয়া হবে না। তাই যে কোনও একটি দিক বাছতে হবে। হয় সন্তান নয় ভ্রমণ। অ্যাশলে ভ্রমণকেই বেছে নেন। ম্যাথু তো বটেই।
যথা সময় দুজনের বিয়ে হয়। প্রায় চার বছর সংসার এবং পর্যটন দুটিই চালিয়ে যান তাঁরা। এরপর অ্যাশলের মনে ফের পরিবর্তন আসে। বন্ধুদের সন্তানদের দেখে নিজেরও মা হতে ইচ্ছে করে। নিজের ইচ্ছের কথা স্বামী ম্যাথুকে জানান। আর তারপরেই হয় সমস্যা।
সন্তানের কথা শুনেই চটে যান ম্যাথু। শুরু হয় কথা কাটাকাটি। অ্যাশলেকে তিনি সটান জানিয়ে দেন সন্তান ছাড়া জীবনযাপনের সমস্ত প্ল্যান তিনি করে ফেলেছেন। এখন আর সন্তানের প্রয়োজন নেই। তাঁর সাফ কথা সন্তান তিনি চান না। তাছাড়া তাঁরা দুজনে মিলেই ভবিষ্যতে সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিযেছিলেন। এখন অ্যাশলের এই মত পালটানোর কোনও মানে হয় না।
বেশ কয়েক সপ্তাহ ঝগড়া চলার পর শেষে অ্যাশলের ইচ্ছেকেই সম্মান জানান ম্যাথু। শুরু হয় সন্তান ধারণের চেষ্টা। প্রায় ছয় মাস ধরে অনেক চেষ্টার পর কোনও লাভের লাভ হয়নি। ডাক্তারের কাছে যান অ্যাশলে। অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পরও কোনও লাভ হয় না। ডাক্তার বলেন যে, অনেকেরই দেরি হয় চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু এক বছর কেটে যাওয়ার পরও সন্তান আসার কোনও সম্ভাবনা তৈরি হয় না।
অ্যাশলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে থাকেন। অবশেষে সত্যিটা প্রকাশ করেন ম্যাথু। অ্যাসলেকে বিয়ে করার আগে তিনি আরেকটি বিয়ে করেছিলেন। যেটা দ্বিতীয় স্ত্রীকে জানাননি। প্রথম স্ত্রীর সন্তান ধারণে প্রবল অনীহা ছিল। তাই একরকম জোর করেই ম্যাথুকে অপারেশন করে নির্বীজকরণ করতে হয়। তখন তাঁর বছর ২৫ বছর।
ম্যাথুর-এই স্বীকারোক্তি শুনে স্তব্ধ হয়ে যান অ্যাশলে। একে প্রথম বিয়ের কথা গোপন করা এবং তার উপর নির্বীজকরণ করে সন্তান ধারনে অক্ষম হয়ে পড়ার বিষয়টি না বলার জন্য ম্যাথুকে ক্ষমা করতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ডিভোর্স করার সিদ্ধান্ত নেন অ্যাশলে।
উপরের বিবরণটি সত্যি ঘটনা। অ্যাশলে নিজের মুখে এক আন্তর্জাতিক পোর্টালকে এই কথা জানিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে ম্যাথু যখন স্বীকার করেছিলেন তখন এতটা কঠোর না হলেও পারতেন অ্যাশলে। অ্যাশলের পাল্টা প্রশ্ন, একই কাজ যদি তিনি করতেন তাহলে সকলে ম্যাথুকে কি একই উপদেশ দিতেন?
উত্তরটা স্পষ্ট। “না”। ম্যাথু পুরুষ মানুষ। তাঁর কঠোর সিদ্ধান্তে কোনও দোষ হত না।
মানসিকভাবে বিধ্বস্ত অ্যাশলে এখন নিয়মিত মনোবিদের কাছে যান। ফের বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করছেন তিনি। নতুন করে সবকিছু শুরু করতে চান। পাশাপাশি সমস্ত মহিলাদের সাবধান করে দিয়েছেন। তাঁর মতো যেন কাউকে এভাবে প্রতারিত হতে না হয়। আর সন্তান হচ্ছে না বলে শুধু নিজেরই নয়, সঙ্গীর ডাক্তারি পরীক্ষাও করান। সবসময় চোখ কান খোলা রাখুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-21 20:50:07
Source link
Leave a Reply