কেন্নো ধরার ফাঁদ বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারেন। এর সুবিধা হল, এতে কেন্নো ধরা পড়ল কী না, তা বসে দেখতে হয় না। ফাঁদ পাতুন ও কেন্নো ধরুন— এতই সোজা এটি। এর জন্য প্রয়োজন ৬ ইঞ্চি লম্বা ভিনাইল টিউব বা পাইপ, একটি প্লাস্টিক সোডা বোতল, টেপ, ছোট করে কাটা পাকা ফল। কাটা ফলগুলিকে এই সোডা বোতলের মধ্যে রেখে দিন। তার পর একটি টিউব বা পাইপ বোতলের মুখে ভালোভাবে প্রবেশ করিয়ে টেপ দিয়ে আটকে দিন। লক্ষ্য রাখবেন পাইপটি যাতে বোতলের মুখে ভালোভাবে বসে এবং বোতলের কিনারা স্পর্শ করে না থাকে। বোতলের মধ্যে ২ ইঞ্চি পাইপই থাকবে, বাকি অংশ বাইরে রাখুন। এর পর বোতলটিকে শুয়ে দিন। ফল পচতে শুরু করলে কেন্নো এর ভিতরে প্রবেশ করবে এবং বেরিয়ে আসতে পারবে না। কেন্নো জমলে বোতলটি ফেলে দিন।
ম্যানুয়ালি সরিয়ে দিন
ফাঁদ তৈরির ঝক্কি পোহাতে না-চাইলে এগুলিকে ঝাঁটার সাহায্যেই দূর করতে পারেন। তবে পা দিয়ে এদের চাপা দেবেন না, কারণ দুর্গন্ধ বেরোতে পারে। ঝাঁটার সাহায্যে এটিকে ডাস্টপ্যানে তুলে সাবান জলে ছেড়ে দিন। আবার ভ্যাকয়ুম ক্লিনারের সাহায্যেও এদের পরিষ্কার করে ফেলতে পারেন।
ডায়াটোমেসিয়াস আর্থ
এটি একটি ক্রিস্টালিন পাওডার, যা দিয়ে শুধু কেন্নোই নয় বরং নানান ধরনোর পোকামাকড় দূর করা যায়। এই পাওডারের ক্রিস্টালগুলি পোকামাকড়ের শক্ত এক্সোস্কেলিটন ভেদ করে ভিতরে প্রবেশ করে এবং কেন্নোর শরীরে মাইক্রোপাঞ্চার করতে শুরু করে। তার পর ডিহাইড্রেট করে এদেরে মেরে ফেলে। ঘরের সীমানা, দরজার ফাঁকের মধ্যে, বাড়িতে কোনও গাছ থাকলে তার মাটিতে, বাগানের ফেন্সের তলায় এই পাওডার ছড়িয়ে রাখতে পারেন।
বোরিক অ্যাসিড
এটিও ডায়াটোমেসিয়াস আর্থ পাওডারের মতোই। বোরিক অ্যাসিডে এদের শরীর কেটে যায় এবং ধীরে ধীরে ডিহাইড্রেট হয়ে এরা মারা যায়। শুধু তাই নয় বোরিক অ্যাসিড কেন্নোর হজম প্রক্রিয়া নষ্ট করে দেয়। এ ক্ষেত্রে ডায়াটোমেসিয়াস আর্থ পাওডারের তুলনায় দ্রুত কাজ করে বোরিক অ্যাসিড। তবে বাচ্চা বা পোষা জীব থাকলে বোরিক অ্যাসিড ব্যবহার করবেন না।
এসেনশিয়াল অয়েল
এগুলি কীটনাশকের পরিবর্তে রেপিলেন্টের কাজ করে। টি ট্রি অয়েল, পেপারমিন্ট অয়েলের সাহায্যে কেন্নোকে দূরে রাখা যায়। তবে জলের সঙ্গে মিশিয়ে এই তেলগুলি ব্যবহার করা উচিত। ঘরের সীমানা, দরজার ফাঁকের মধ্যে, বাড়িতে কোনও গাছ থাকলে তার মাটিতে, বাগানের ফেন্সের তলায় বা এমন কোনও স্থান যেখানে কেন্নো থাকার সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে এসেনশিয়াল অয়েল ছড়িয়ে দিতে পারেন।
কেয়েন মরিচ
এসেনশিয়াল অয়েলের মতোই এই মরিচটিও রেপিলেন্টের কাজ করে। কেন্নোর পাশাপাশি অন্যান্য পোকামাকড় দূর করতেও এটি ব্যবহার করা যায়। শুকনো লাল লঙ্কার মতো দেখতে এই মরিচগুলি গোটা কিনে এনে বাড়িতেই গুঁড়ো করে ফেলতে পারেন। যে যে স্থানে কেন্নোর আনাগোনা থাকে, সেখানে এটি ছড়িয়ে দিন।
প্রতিরোধ
কেন্নো তাড়ানোর জন্য উপরিউক্ত উপায়গুলি কাজে লাগাতে পারেন। তবে তার চেয়েও বেশি জরুরি কেন্নো যাতে পুনরায় ফিরে আসতে না-পারে তার বন্দোবস্ত করা। কী ভাবে কেন্নোর বিরুদ্ধে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন, তা দেখে নেওয়া যাক—
* আর্দ্রতার প্রতি আকৃষ্ট হয়েই কেন্নো আসে। তাই বাড়ি যত আর্দ্রতা মুক্ত থাকবে, ততই কেন্নো আসার সম্ভাবনাও কমবে। রান্নাঘর হোক বা বাথরুম— অতিরিক্ত আর্দ্রতা মুছে পরিষ্কার করে নিন। বেসমেন্ট ও গ্যারাজ যাতে স্যাঁতস্যাঁতে না-থাকে, সে বিষয় লক্ষ্য রাখুন। কোথাও জল জমলে বা কোনও স্থান স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকলে তা শীঘ্র পরিষ্কার করে ফেলুন। নর্দমা পরিষ্কার রাখুন, ঢালু ও অসম টাইলস এবং জমি সারিয়ে নিনে, যাতে এখানে জল জমে স্যাঁতস্যাঁতে না-হয়ে উঠতে পারে। নিজের বাগানে খুব বেশি জল দেবেন না। আবার সকালের দিকে জল দিন, যাতে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যেতে পারে। লক্ষ্য রাখবেন, কোথাও যেন কোনও ধরনের জল পড়ার সমস্যা না-থাকে।
* বাগান ও বাড়ির আনাচকানাচ পরিষ্কার করুন। শুকনো ও ভেজা পাতা, ঘাস, বোর্ড, বাক্স, পাথর ইত্যাদি রাখবেন না। ঘাস কাঁচা রাখার চেষ্টা করুন, আবার কোনও গাছের ডালপালা, পাতা খুব বেশি বেড়ে গেলে সেগুলি ছাটাই করে নিন। বাগানে অত্যধিক পরিমাণে সার ব্যবহার না-করাই ভালো। নোংরা ও আবর্জনা জমলে তা শীঘ্র পরিষ্কার করে নিন। বাড়িতে কোথাও ভাঙাচোড়া কিছু থাকলে তা সারিয়ে নিতে হবে, পাশাপাশি ওয়ারিং ও প্লাম্বিংয়ে কোনও সমস্যা থাকলে তারও মেরামত করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-19 16:57:50
Source link
Leave a Reply