গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে ত্বকের পোড়াভাব বা সান বার্ন হওয়া খুবই স্বাভাবিক। সান বার্ন হলে ত্বকের প্রদাহের পাশাপাশি চুলকানি এবং ব্যথাও হয়। এছাড়াও ত্বকের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে সান বার্ন হয় এবং এর ফলে পরবর্তীতে ত্বকের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা যেমন- ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, ব্রণ হওয়া, দাগ পড়া, বলিরেখা সৃষ্টি হওয়া এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে যদি চিকিৎসা করা না হয়। খুব দ্রুত সান বার্ন এর সমস্যার সমাধান করার কিছু প্রাকৃতিক উপায় আছে। চলুন তাহলে সেই ঘরোয়া প্রতিকার গুলো জেনে নেয়া যাক।
১। নারিকেল তেল ও আপেল সাইডার ভিনেগার
এই প্রক্রিয়াটির জন্য বিশুদ্ধ নারিকেল তেল, আপেল সাইডার ভিনেগার ও ১টি স্প্রে বোতল লাগবে। স্প্রে বোতলে ১ কাপ ঠান্ডা পানি নিয়ে এর সাথে এক কাপের এক চতুর্থাংশ পরিমাণ আপেল সাইডার ভিনেগার মেশান। বোতলটি ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিন যাতে পানি ও আপেল সাইডার ভিনেগার ভালোভাবে মিশে যায়। এবার এই মিশ্রণটি সান বার্ন যেখানে হয়েছে ত্বকের সে স্থানে স্প্রে করুন। অতিরিক্ত ও গড়িয়ে পড়া পানি একটি তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। স্প্রে করার কিছুক্ষনের মধ্যেই আপনি সানবার্নের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন। আপেল সাইডার ভিনেগার শুকিয়ে গেলে আক্রান্ত স্থানে কয়েক ফোঁটা নারিকেল তেল লাগিয়ে আস্তে আস্তে ঘষুন। নারিকেল তেল ত্বকে শোষিত হতে সময় লাগবে তাই আপনাকে আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ার জন্য। যদি আপনি রাতে এটি প্রয়োগ করেন তাহলে অপেক্ষা না করে ঘুমিয়ে যেতে পারেন। তবে শোয়ার আগে চাদরের উপর তোয়ালে দিয়ে নেবেন যাতে চাদরে তেলের দাগ লেগে না যায়। সাধারণত হালকা থেকে মাঝারি ধরণের সানবার্নের ক্ষেত্রে এক রাতেই ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তীব্র সানবার্নের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি ২-৩ বার করার প্রয়োজন হতে পারে। তাছাড়া আপনার ত্বকের সংবেদনশীলতার উপরও এর প্রভাব নির্ভর করে।
২। ব্ল্যাক টি
ব্ল্যাক টি নিরাময় ক্ষমতা সম্পন্ন কারণ এতে প্রচুর ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে এর মাঝে কয়েকটি টি ব্যাগ চুবিয়ে রাখুন যতক্ষণ না পানি পুরোপুরি কালো হয়ে যায়। এই তরলটি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে এতে একটি পরিষ্কার কাপড় চুবিয়ে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান। শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। দ্বিতীয়বার প্রলেপ দিতে পারেন। যদি সম্ভব হয় তাহলে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এটি ব্যবহার করুন এবং সকালে গোসল করে ফেলুন। এই পদ্ধতিটি এক বা দুই বার করলেই সানবার্ন ঠিক হয়ে যায়। সবচেয়ে ভালো কাজ হয় সানবার্ন হওয়ার সাথে সাথে পদ্ধতিটি ব্যবহার করলে। অনেক্ষণ যাবত ভিজিয়ে রাখা সম্ভব নাহলে ভেজা টি ব্যাগ সরাসরি আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন।
৩। লেবুর রস, গোলাপ জল ও শশার প্যাক
শশা ও লেবু প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট এবং সানবার্নের দাগ দূর করতে খুবই কার্যকরী। গোলাপজল ও শশা ত্বককে শীতলতা দান করে। ১ টেবিলচামচ লেবুর রস, ১ টেবিলচামচ গোলাপজল ও ১ টেবিলচামচ শশার রস নিয়ে ভালো করে মেশাতে হবে। এই মিশ্রণটিতে একটি সুতির কাপড় বা তুলা ভিজিয়ে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান। ১০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৪। মধু ও পেঁপের প্যাক
পেঁপেতে ত্বকের জন্য উপকারি এনজাইম থাকে তাই দ্রুত সানবার্ন ঠিক করতে পারে। মধুর পুষ্টি সরবরাহকারী, নিরাময় দানকারী, ত্বক নরমকারী এবং ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য আছে। আধাকাপ পাকা পেঁপে খোসা ফেলে ভাল করে থেঁৎলে নিন। এর সাথে ১ টেবিল চামচ মধু মেশান। এই পেস্টটি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে আধাঘন্টা রাখুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
রাতারাতি সানবার্ন ঠিক করার জন্য উপরের পদ্ধতিগুলোর যেকোনটি ব্যবহার করে দেখুন। দ্রুত ফলাফল পাওয়ার জন্য অরগানিক উপাদান ব্যবহার করা ভালো।
এস সি
স্বাস্থ্য | DesheBideshe
2021-07-18 20:25:30
Source link
Leave a Reply