হাইলাইটস
- বিভিন্ন কারণে শরীরে এই ভিটামিনের অভাব দেখা দিতে পারে।
- তার মধ্যে দুটি অন্যতম কারণ হল নিরামিষ খাবার এবং ওজন কমানোর অপারেশন।
- গাছপালা, শাক-সবজি থেকে ভিটামিন বি12 পাওয়া যায় না
শারীরিক সমস্যা ছাড়া মানসিক অসুখও হতে পারে ভিটামিন বি12-এর ঘাটতির কারণে। এই কারণে হতাশা, বিড়ম্বনা এবং বিভ্রান্তি, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, অসংলগ্নতা, স্বাদ এবং গন্ধের ক্ষতি সহ বেশ কয়েকটি সমস্যা হতে পারে। তাই গন্ধ বা স্বাদ পাচ্ছেন না বলে যে কেউ করোনাতেই আক্রান্ত হয়েছেন তেমন ভাবার কোনও কারণ নেই। শরীরের ভিটামিন বি12-এর অভাব হতে পারে।
শরীরে ভিটামিন বি12-র কী প্রয়োজন?
মানবদেহে ভিটামিন বি12-এর উপস্থিতি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।এর সাহায্যে আমাদের শরীরের লোহিত রক্তকণিকা উৎপন্ন হয়। এছাড়াও স্নায়ু, ডিএনএ সহ একাধিক ক্ষেত্রে এটির গুরুত্ব অশেষ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে দিনে ২.৪ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি12-এর প্রয়োজন হয়। শরীরের মধ্যে এই ভিটামিন তৈরি হতে পারে না। খাবারের মাধ্যমে এটি শরীরের প্রবেশ করানো হয়।
অনেকের শরীরেই ভিটামিন বি12 পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রবেশ করতে পারে না। অনেকের শরীরের আবার পর্যাপ্ত ভিটামিন বি12 শোষণ করতে পারে না। ফলে শরীরে ভিটামিন বি12-এর ঘাটতি দেখা দেয়। এই সমস্যা প্রধানত দেখা দেয় বয়স্কদের।
ভিটামিন বি12-এর ঘাটতির কারণ
বিভিন্ন কারণে শরীরে এই ভিটামিনের অভাব দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে দুটি অন্যতম কারণ হল নিরামিষ খাবার এবং ওজন কমানোর অপারেশন। গাছপালা, শাক-সবজি থেকে ভিটামিন বি12 পাওয়া যায় না। ডিম, মাংস, পোল্ট্রির খাবার, দুগ্ধজাত খাবার এবং প্রাণীর দেহ থেকে ভিটামিন বি12 সংগৃহীত হয়। সেকারণেই ভেগান বা কঠোর নিরামিষাশী যাঁরা দানাশস্যও খান না তাঁদের শরীরেই ভিটামিন বি12এগর ঘাটতি দেখা দেয়। ভিটামিনের ঘাটতি মেটাতে এঁদের ওষুধ খেতে হয়।
আবার যাঁরা ওজন কমানোর জন্য অপারেশ করে থাকেন তাঁদের শরীরেও ভিটামিন বি12-এর ঘাটতি দেখা যায়। মূলত এই অপারেশনের কারণে শরীরের ভিটামিন বি12 শরীরে প্রবেশ করতে পারে না।
ভিটামিন বি12-এর ঘাটতির লক্ষণ
* ভিটামিন বি12-এর ঘাটতি হলে গাঁটে গাঁটে ব্যথা, সংবেদনশীলতা হারিয়ে যাওয়া, ত্বকের রং হলুদ হয়ে যাওয়া বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা যায়।
*হতাশা, বিড়ম্বনা, বিভ্রান্তি, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, অসংলগ্নতা, স্বাদ এবং গন্ধের ক্ষতি সহ বেশ কয়েকটি সমস্যা হতে পারে।
*হাত-পা কাঁপা, অসাড়তার মতো সমস্যাও হয়।
*হাঁটাচলায় সমস্যা হয়। হাঁটার সময় ব্যালেন্স হারিয়ে যায়।
*রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া, জিভে ফোলাভাব এবং জ্বলুনি দেখা দেয়। শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
*রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় সম্ভব। যাঁরা কঠোরভাবে নিরামিষাশী এবং ভেগান তাঁরা কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে নিয়মিত ভিটামিন বি12 পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। রোগ তাড়াতাড়ি ধরা পড়লে স্নায়বিক এবং রক্তের রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
শরীরের ভিটামিন বি12-এর ঘাটতি মেটানোর উপায়
*ভিটামিন বি12-এর ঘাটতি মেটানো যায় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে নিয়মিত ওষুধ খেলে। মাল্টিভিটামিন থেকেও ভিটামিন বি12-এর ঘাটতি মেটানো সম্ভব।
*ভেগান বা নিরামষাশীদের দানা শস্য যেমন রুটি, মিলেট ইত্যাদি খাওয়া দরকার।
* ডিম, মাংস, পোল্ট্রির খাবার, দুগ্ধজাত খাবার এবং প্রাণীজাত খাদ্য মানবদেহে ভিটামিন বি12-ওর ঘাটতি পূরণ করে।
তবে সব কিছুরই পরেও মনে রাখবেন যে শরীরের কীসের প্রয়োজন বা কোন জিনিসের ঘাটতি মেটাতে হবে তা একমাত্র চিকিৎসকই সঠিকভাব বলতে পারে। তাই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যান। নিজে থেকে ডাক্তারি করতে যাবেন না। এতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অযথা আতঙ্ক ছড়াবেন না। অবহেলা না করে সঠিক সময়ে চিকিৎসা কিংবা রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা হলে যে কোনও রোগকেই নির্মূল করা সম্ভব। তাই সচেতন হন। সুস্থ থাকুন।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-07-16 17:24:17
Source link
Leave a Reply