হাইলাইটস
- বিশেষজ্ঞদের মতে, জেস্টেশনাল ডায়বিটিজ গর্ভবতী মহিলার পাশাপাশি গর্ভস্থ শিশুকেও প্রভাবিত করে।
- যে কোনও বয়সের ব্যক্তিদের মধুমেহ হতে পারে।
- উল্লেখ্য জেস্টেশনাল ডায়বিটিজের কারণে ভবিষ্যতে টাইপ ২ ডায়বিটিজ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জেস্টেশনাল ডায়বিটিজ গর্ভবতী মহিলার পাশাপাশি গর্ভস্থ শিশুকেও প্রভাবিত করে। যে কোনও বয়সের ব্যক্তিদের মধুমেহ হতে পারে। উল্লেখ্য জেস্টেশনাল ডায়বিটিজের কারণে ভবিষ্যতে টাইপ ২ ডায়বিটিজ হতে পারে।
রক্তে শর্করার পরিমাণ কত হওয়া উচিত
গর্ভবতী মহিলাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। আমেরিকান ডায়বিটিজ অ্যাসোসিয়েশন অনুযায়ী গর্ভবতী মহিলাদের ফাস্টিং শুগারের পরিমাণ ৯৫ এমজি/ডিএল-এর চেয়ে কম হওয়া উচিত। আবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পর ১৪০ এমজি/ডিএল বা তার চেয়ে কম পরিমাণে শর্করার থাকতে হবে রক্তে। অন্য দিকে খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর গর্ভবতী মহিলাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ হতে হবে ১২০ এমজি/ডিএল।
যে বিষয়গুলি লক্ষ্য রাখবেন
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভধারণের ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে মধুমেহে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই প্রতি তিন মাসে এক বার রক্তে শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করে দেখা উচিত। আবার জেস্টেশনাল ডায়বিটিজের রোগীদের দিনে অন্তত চার বার শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করা উচিত।
জেস্টেশনাল বা গর্ভকালীন ডায়বিটিজের লক্ষণ
সাধারণত গর্ভকালীন মধুমেহর কোনও বিশেষ লক্ষণ হয় না। তাই রক্ত পরীক্ষা করিয়ে এ বিষয় নিশ্চিত হওয়াই ভালো। তবে অত্যধিক তৃষ্ণা ও বার বার প্রস্রাব পাওয়া এর লক্ষণ হতে পারে।
কোন কারণে গর্ভকালীন মধুমেহর সম্ভাবনা থেকে যায়
বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভবতী মহিলার ওজন বেশি হলে মধুমেহ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। পাশাপাশি প্রথম গর্ভাবস্থায় মধুমেহে আক্রান্ত হলে বা প্রথম গর্ভাবস্থায় ৪ কেজির বেশি সন্তান প্রসব করলেও এই মধুমেহর ঝুঁকি থেকে যায়। এ ছাড়াও গর্ভবতীর মা, বাবা বা ভাইয়ের টাইপ-২ ডায়বিটিজ থাকলে বা গর্ভবতী পলিসিস্টিক ওভারিতে আক্রান্ত হলেও জেস্টেশনাল ডায়বিটিজ হতে পারে। আবার কোনও মহিলার রক্তে শুগারের পরিমাণ বেশি থাকলেও গর্ভাবস্থায় তাঁরা জেস্টেশনাল মধুমেহর শিকার হতে পারেন।
গর্ভবতী মহিলাদের ডায়বিটিজ হলে কোন কোন সমস্যা দেখা দিতে পারে?
মধুমেহে আক্রান্ত মহিলাদের মধ্যে প্রি-এক্লেমপ্সিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই সময় গর্ভবতী মা উচ্চ রক্তচাপের শিকার হতে পারেন। এমনকি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রোটিন বেরিয়ে যেতে পারে।
অন্য দিকে সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী গর্ভধারণকালে মায়ের রডায়বিটিজের কারণে শিশুর ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে, এর ফলে প্রসবের সময় নবজাতকের মধ্যে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। শিশুর মধ্যে সেরিব্রাল পালসির আশঙ্কাও বেড়ে যায়। জেস্টেশনাল ডায়বিটিজের কারণে বাচ্চাদের হৃদরোগের ঝুঁকিও থাকে।
কী ভাবে মধুমেহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন?
গর্ভবতী মহিলাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকা অত্যন্ত জরুরি। গর্ভবতী মহিলাদের নানান সময় নানান কিছু খেতে ইচ্ছে করে, এটি স্বাভাবিক। তবে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়টি মাথায় রেখে খাবার খান। সেই বুঝে নিজের খাদ্য তালিকা তৈরি করুন। চিনাবাদাম, ফুল মাখানা, গ্রিক ইয়োগার্ট বা স্যান্ডউইচের মতো স্ন্যাক্স খেলে ডায়বি়টিজের আশঙ্কা কমানো যায়।
গর্ভাবস্থায় মধুমেহ হলে কী খাবেন
টাটকা ফল
এ সময় জাম খেলে উপকার পেতে পারেন। এ ছাড়াও আমলকি, লেবু, কমলালেবু, টমেটো, তরমুজ, নাশপাতি ইত্যাদি খাওয়া উচিত। এ সময় প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম ফল খাওয়া উচিত।
সবুজ শাক সবজি
মেথি, পালক, উচ্ছে, বথুয়া ও সরষের শাক, আঁতা, শশা, শিমলা লঙ্কা, ভেন্ডি, সিম, ছোলার শাক, গাজর ইত্যাদি খাওয়া উচিত। রসুন শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ফাইবার ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার
ব্রাউন বা পলিশ না-করা চাল, চোকার মেশানো আটা। সোয়াবীন, গোটা ছোলা, রাজমা, লোবিয়া ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করুন। সারা দিনে ৪-৫ কাপ সবজি খাওয়া উচিত।
ঘি ও তেল
তিসি, সোয়াবীন, সরষে, সূর্যমুখীর তেল এ সময় খাওয়া উচিত। তবে সারা দিনে ১৫-২০ গ্রামের বেশি ফ্যাট খাবেন না। এ সময় মাসে আধ লিটার তেলই পর্যাপ্ত।
দুগ্ধজাত দ্রব্য
দুধ, দই ও পনীর খেতে পারেন। তবে লো ফ্যাট অপশানই বেছে নিন। চিনি ছাড়া ২-৩ কাপ চাও পান করতে পারেন। এ সময় ছাঁছ বা দইয়ের ঘোল পান করলে সুফল পেতে পারেন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-16 13:08:44
Source link
Leave a Reply