হাইলাইটস
- অফিসে থাকতেই চোখ কটকট করার সমস্যা ছিল সুভদ্রার। চোখ দিয়ে প্রায় জল পড়ত।
- উত্তেজিত হয়ে গেলে বা জোরে হাসলেও চোখ দিয়ে জল পড়তে শুরু করে। এতে বড্ড বিপদে পড়ে যেত সে।
- চোখের কাজল বা মেক আপ নষ্ট তো হতোই তার উপর কাজের সময় বা সহকর্মীদের কাছে নিজেকে খানিকটা অপদস্ত বলে মনে হত।
চিকিৎসক শুধু জানিয়ে দেন যে অনবরত কম্পিউটারের স্ক্রিন বা স্মার্ট ফোনের ব্যবহারের ফলে চোখের স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমে যায়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। ভয়ের কিছু নেই। আইড্রপের সাহায্যেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। কিন্তু সারাক্ষণ যদি চোখ কটকট করে, স্নানের পর চোখ লাল হযে যায় বা কথায় কথায চোখ দিয়ে জল পড়ে তাহলে তো খুব বিরক্তিকর।
এখন ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলছে। ফলে কাজের সময় আরও বেড়েছে। আট ঘণ্টার পরিবর্তে ১৪-১৫ ঘণ্টাও কাজ করতে হচ্ছে অনেককে। অবসর সময় কাটছে স্মার্টফোনে স্ক্রল করে। মানে চোখের উপর চাপ পড়ছে ক্রমাগত। বাড়িতে সুভদ্রা খেয়াল করল একই সমস্যা মেয়ে এবং স্বামীরও আছে। ওদের চোখের আরও কোনও সমস্যা নেই শুধু জল পড়া আর চোখ লাল হওয়া। চিকিৎসক ওদেরও বলেছেন চোখের শুষ্কতার কথা। এসির অত্যাধিক ব্যবহার এবং বাতাসের দূষণের কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। অবশ্য শারীরিক কোনও সমস্যার কারণেও চোখ শুষ্ক হতে পারে।
সুভদ্রাদের মতো এই সমস্যা আজকাল ১০ জনের মধ্যে ৭ জনেরই আছে। মধ্যবয়স্ক এবং বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। বয়স্কদের চোখ শুষ্ক হয় সাধারণত বয়সজনিত কারণে। চোখের জলের গ্ল্যান্ড যখন চোখের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয় তখনই চোখের শুষ্কতা দেখা দেয় এবং চোখে অস্বস্তি ও ব্যথা দেখা যায়। চোখ দিয়ে জল পড়ে।
চোখের যত্ন নিলে সমস্যা কিছুটা দূর হয় বটে। আর তার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি ঘরোয়া উপায়ও।
– চোখের আর্দ্রতা সারাতে অনবদ্য ওষুধ হল জল। দিনে প্রচুর পরিমাণে জল খান। জল খেলে শরীরের অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ স্বাভাবিক থাকে। ফলে শরীরের সমস্ত তরল পদার্থ সঠিকভাবে শরীরে সরবরাহ হয়। শরীর আর্দ্র থাকলে চোখের জল, শরীর মধ্যস্থ তেল স্বাভাবিকভাবে বাহিত হয়। অতিরিক্ত কফি অ্যালকোহল এবং ক্যাফিনযুক্ত অন্যান্য পানীয় শরীরের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। সেগুলি পান করা নিয়ন্ত্রণ করুন। প্রচুর পরিমাণে জলযুক্ত ফল যেমন তরমুজ, শসা, স্ট্রবেরি, পিচ ইত্যাদি খান।
– ডায়েটে রাখুন ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার। এর প্রাকৃতিক তেল চোখের আর্দ্রতা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। ডিম, শিয়া বীজ, তেলযুক্ত মাছ, আখরোট, ফ্লেক্স বীজ ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা 3 অ্যাসিড থাকে।
– এক নাগাড়ে অনেক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখ তাড়াতাড়ি আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। তাই এক নাগাড়ে না তাকিয়ে অনরবত চোখের পাতা ফেলতে থাকুন। এতে চোখের জল সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। মিনিটে ১৫-৩০ বার চোখের পাতা পিটপিট করা প্রয়োজন। যদিও বেশিরভাগ মানুষই তা করেন না। কম্পিউটারে কাজ করার সময় এক নাগাড়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকেন। এটা চোখের পক্ষে খারাপ। ২০ সেকেন্ডের বেশি চোখ খোলা রাখবেন না। ২০ মিনিট পর অন্তত কম্পিউটারের মনিটর থেকে চোখ সরিয়ে কয়েক সেকেন্ড চোখকে বিশ্রাম দিন। এটি কিন্তু চোখের আর্দ্রতা বজায় রাখার একটি দারুণ উপায়।
– প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে পরিষ্কার জল দিয়ে ভালো করে চোখ ধোওয়ার অভ্যাস করা অত্যন্ত দরকার। মেক-আপ তোলার সময় চোখ খুব ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। একটুও যেন মেক-আপ বা কাজল চোখে লেগে না থাকে। মেকআপ তোলার জন্য চোখ, চোখের পাতা, চোখের পল্লব ইত্যাদি পরিষ্কার করতে বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করে পারেন। চোখ ধোওয়ার পর শুকনো নরম কাপড় দিয়ে চোখ মুছতে হবে।
– কম্পিউটারে কাজ করার সময় চোখে আই প্রোটেক্টর স্পেক্টিক্যাল ব্যবহার করুন। চোখের শুষ্কতা দূর হবে।
– বাইরে বেরোলে চোখে অবশ্যই ভালো মানের রোদ চশমা পড়ার অভ্যাস করুন। বাইরের দূষণের হাত থেকে চোখকে বাঁচাতে এটি দারুণ কাজ দেয়। তবে রাস্তার ধারের সস্তার সানগ্লাস পরলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সানগ্লাস কেনার সময় অতিবেগুনি রশ্মি রোহিত চশমা কিনবেন। চোখ ভালো থাকবে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-15 18:00:22
Source link
Leave a Reply