তরুণ বয়সের চাহিদাটাই বোধ হয় বেশি। এই চাহিদা পূরণ হল তো অন্য চাহিদার জন্ম হয় সাথে সাথেই। তখন মন খারাপ হয় স্বাভাবিক ভাবেই। এই চাই চাই ভাবটা বেশি হয় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর। বন্ধুদের হাল ফ্যাশনের মোবাইল সেট, লেটেস্ট মোটরবাইক কিংবা ফ্যাশনেবল পোশাক, কিছুই বাদ যায় না চাওয়ার তালিকা থেকে। কিন্তু সেই চাওয়ার অনেকটাই বোধ হয় অপূর্ণ থেকে যায়। আর শুরু হয় মনের ভেতর জ্বালাপোড়া। বন্ধুদের সামনে কিংবা সঙ্গীনির সামনে মুখ দেখাবেন কেমন করে সেটা নিয়েও চলে চিন্তা। কিন্তু একটু সচেতন আর বুদ্ধিমান হলেই আপনার চাই চাই ভাবটা আপনিই কন্ট্রোল করতে পারেন।
যাই দেখি লাগে ভালো
তরুণ মনটাই লাগামছাড়া ঘোড়ার মত। একবার একদিকে যায় তো আরেক বার অন্য দিকে। হয়ত শপিং বা কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ এল। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হল চাওয়ার তালিকার দৌড়। ‘আহা, আমার এই জিনিসটা নেই, ঐ জিনিসটা নেই সব সময়ই এই কথাটা মনের ভেতর ঘুরপাক খায়। কিন্তু হাতে তো টাকা নেই। কিভাবে হাতে আসবে ঐ চাহিদার বস্তু। তাই শুরু হয় বাবা মার প্রতি আবদার। অনেকে হয়তো বুঝতেই চায় না তার বাবা মার আবদার পূরণ করার মত সামর্থ্য আছে কি না।
কি করি কি করি
মনের ভেতর চাওয়া আর চাহিদা আসতেই পারে। কিক্তু সেটা কন্ট্রোল করার দায়িত্ব কিন্তু আপনারই প্রথমেই ভেবে দেখতে হবে আপনি যে চাওয়াটা চাচ্ছ সেটা যুক্তি সঙ্গত কিনা। যদি বেশি দরকারি হয় তবে সেটা মেটাতে চেষ্টা করুন। আর যদি বেশি ইচ্ছে করে তবে মনটাকে বোঝান যে মানুষের চাওয়া আকাশ ছোঁয়া। মনের ঘুড়ির সুতো যদি আপনার কাছে না থাকে তবে ঘুড়ি কিন্তু উড়ে যাবে। বিনিময়ে কষ্টগুলো সইতে হবে আপনাকেই। নিজের যে চাহিদাগুলো নিজে পূরণ করতে পারেন, সেগুলো নিজেই পূরণ করুন। আর যে চাহিদাগুলো একটু ব্যয়বহুল সেগুলো পূরণের জন্য অভিভাবকের কাছে অন্তত দু’তিন মাস আগে বলে রাখুন। কেননা আপনার বাবা মায়েরও একটা প্রস্তুতির দরকার আছে চাহিদা মেটানোর জন্য। তবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে চাহিদার তালিকাটা যত ছোট হয় ততই ভালো। কেননা অতিরিক্ত চাহিদাই মানষের অস্থিরতার কারণ। ভবিষ্যতে বিপথেও টেনে নিতে পারে অতিরিক্ত চাহিদা। তবে শখ বা চাহিদা যাই করেন না কেন সেটা যেন আপনার পরিবার ও পরিবেশের সাথে মানানসই কিনা সেদিকটাও ভেবে দেখবেন। তবে অভিভাকের সাথে রাগ কখনই করা উচিত হবে না আপনার। কেননা অভিভাবকের সামর্থ্যও আপনাকে বুঝতে হবে। সব সময়ই মনের ভেতর একটা বিশ্বাস রাখতে হবে, আমি যা তাই নিয়েই খুশি আছি। অতিরিক্ত চাহিদা কখনই নিজেকে অন্যের কাছে স্মার্ট প্রমাণ করে না। সবচেয়ে বড় কথা হল চাহিদা পূরণের জন্য চাই সঠিক প্ল্যানিং। আর সব কিছু যদি আপনার কন্ট্রোলে থাকে, তবে আপনি একদিন আপনার স্বপ্নটাকে স্পর্শ করবেনই।
সাবেরা সাথী
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ফেব্রুয়ারী ২৪, ২০১০
Leave a Reply