নিজেকে নিয়ে ভাবতে ভালোবাসে না এমন মানুষ জগতে খুঁজতে যাওয়াই বেকার। কিন্তু দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের ভাবনাটা ঠিক গঠনমূলক হয় না। কি পেলাম আর কি পেলাম না এই হিসাবটা নিয়ে আমরা যতো সময় নষ্ট করি তার কতোটুকুই বা নিজেকে শানাতে ব্যয় করি! বরং নিজেকে নিয়ে ভাবতে গেলে ইতিবাচক ভাবনাটাই ভালো নয় কি? আসুন এমন ভাবনায় কথা শোনা যাক যা বদলে দিতে পারে আমাদের চলমান জীবন পদ্ধতিকে-
০ এমন একটা সময় ছিল যখন মনে করা হতো যাদের বুদ্ধিশুদ্ধি শূন্যের কোঠায় কেবল তারাই সাজ-গোজ নিযে পড়ে থাকে। যারা ফ্যাশনেবল পোশাক পড়তো তাদের জুটে যেতো পাঙ্কু উপাধি। বেকার আর অকর্মারাই সাজ-ফ্যাশন নিয়ে পড়ে থাকে এমন ধারনাই বদ্ধমূল ছিল অনেকের মনে। এখন সে ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে অনেক। ঝরঝরে স্মার্ট থাকার দিন এখন। ধোপদুরস্ত পোশাকে থাকলে অন্যেই শুধু মুগ্ধ হবেন, নিজের কাছেও নিজেকে ভালো লাগবে। এই আত্মতৃপ্তির দামটাতো মোটেও মূল্যহীন নয়। নিজের দুর্বলতা অনেকটাই ঢেকে যায় পোশাকের আড়ালে।
০ ‘কালো-সেতো জগতের আলো’। অথচ কালো বলেই নিজের উপরে কতো গোস্বা আপনার। কালো হয়েছেন বলে কেন নিজেকে পিছিয়ে পড়া ভাবছেন? গায়ের রঙে কি দুনিয়াটা চলছে? মোটেও না। দুনিয়া চলছে মেধাবী আর পরিশ্রমী মানুষের প্রচেষ্টায়। আপনি যদি নিজেকে সেই কাতারের মানুষ মনে করেন তবে তো রঙ নিয়ে আপনার দুশ্চিন্তা থাকবারই কথা নয়। টিভি পর্দায় যে রঙ ফর্সাকারী ক্রীমের গাদা গাদা এ্যাড দেখানো হয় সেগুলো যে একদম রাবিশ তা তো এতোদিনে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন। তবে আর রঙের জন্য আফসোস করে লাভ কি! কিন্তু আপনি আপনার ত্বকে বেশ একটা চেকনাই ভাব নিয়ে আসতে পারেন বিভিন্নভাবে। রঙ ফর্সা করার আশা ছেড়ে দিয়ে নিজের ত্বকটাকে কিভাবে সুস্থ রাখবেন তার দিকে মন দিন।
০ আপনার ফিগার সালমান খানের মতো হোক আর প্রীতি জিনতার মতোই হোক সেই ফিগারকে আমলে আনবার লোক এখন খুব কমই আছেন। নিজেকে যদি লোকের সামনে বুদ্ধিমান বলে প্রমাণ করতে না পারেন তবে আপনাকে কেয়ারই করবেনা কেউ। কথাবার্তা আচার-আচরণে বুদ্ধিমতার ঝিলিক দেখাতে না পারলে শুধু চেহারা দিয়ে খুব বেশি দূর এগোনো যাবে না। এই সময়ে চেহারা কিংবা ফিগারের মূল্য সামান্যই। যদি ফিগার থাকে, যদি চেহারা থাকে সেটা হতে পারে প্লাস পয়েন্ট। বুদ্ধি ও কৌশলের মাধ্যমে সকলের মন জয় করতে হবে।
০ কান দিয়ে শুনুন আর চোখ দিয়ে দেখুন। ভাবছেন কান দিয়েই মানুষ শোনে আর চোখ দিয়েই তো দেখে। না, সেই শোনার কথাও বলা হচ্ছে না সেই দেখার কথাও বলা হচ্ছে না। মানুষের সঙ্গে কমিউনিফেশনের একটা খুব ভাল রাস্তা হচ্ছে চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা। এর একটা চমৎকার মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। আমরা যখন কথা বলি তখন চাই যার সঙ্গে কথা বলছি সে যেন আমার কথা মন দিয়ে শোনে। এর ফলে চোখে চোখ রেখে কথা বললে খুব সহজেই জনপ্রিয়তা পাওয়া সম্ভব। এ জন্য অন্যের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন। তাতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। তখন আপনাকে যদি কেউ প্রশ্ন করে ‘কেমন আছেন’, তবে আপনি নির্ভয়ে বলতে পারবেন ‘আমি ভালো আছি’।
জিমি সুলতানা
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ফেব্রুয়ারী ২৪, ২০১০
Leave a Reply