কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান, সিকিম
হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা শৃঙ্গের অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা তো সকলেই জানেন। প্রথম দেখা হোক বা বার বার কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখে প্রেমে পড়েননি এমন প্রকৃতিপ্রেমীর খোঁজ মেলা ভার। আর কাঞ্চনজঙ্ঘা শৃঙ্গের মতোই সুন্দর কাঞ্চজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান। অনেকেই হয়তো জানেন না যে সিকিমের এই অভয়ারণ্যটি ভারতের প্রথম মিশ্রিত হেরিটেজ সাইট। এই অরণ্যেই বাস করে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এবং সবচেয়ে সুন্দর পর্বত শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। সমুদ্রতম থেকে এর উচ্চতা ৮৫৮৬ মিটার। বিশাল অভয়ারণ্যটির আয়তন প্রায় ১৭৮৪ বর্গ কিলোমিটার। এই অরণ্যে রয়েছে তুষার পায়রা, তিব্বতি তুষার মুরগি, সবুজ পায়রা, ঈগল, মুরাল, মাছ মুরাল, হিমালয় শকুন, দাঁড়িওয়ালা শকুন, জেবর, পান্না কোকিল, মরাল, সানবার্ডের মতো ৫০০-রও বেশি প্রজাতির পাখি আছে। রয়েছে বিখ্যাত তুষার লেপার্ড, হিমালয়ান মাস্ক হরিণ, থর হরিণ, তহর, ধোলে, শ্লথ বিয়ার, উল্লুক, কালো ভল্লুক, লাল পান্ডা, তিব্বতি বুনো গাধা, হিমালয়ের নীল ভেড়া, গোরাল, টাকিন, সেরো, চন্দ্রবোড়া সাপ, ধামিন সাপের মতো নানা জানা অজানা পশু এবং সরীসৃপ। অরণ্যের মধ্যেই আছে থলং মনেস্ট্রি। জঙ্গলের ভিতর কিছু লেপচা প্রজাতির জনবসতিও রয়েছে। এখানে এলে মনে হবে যেন আদিম যুগে পা রেখেছেন।
আগ্রার কেল্লা, উত্তরপ্রদেশ
দিল্লির লাল কেল্লার নাম তো সবাই জানেন। কিন্তু আগ্রার লাল কেল্লার কথা কেউ জানেন কি? আগ্রা ফোর্টেরই আরেক নাম আগ্রার লাল কেল্লা। তাজমহল দেখার উৎসাহে অনেকেই মাত্র আড়াই কিলোমিটার দূরের আগ্রার লাল কেল্লাকে অবজ্ঞা করে চলে যান। কিন্তু এই উত্তরপ্রদেশের এই কেল্লাটির মোগল সাম্রাজ্যের অসাধারণ স্থাপত্যের নিদর্শন। যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত এই কেল্লাটি UNESCO-র বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় জায়গা পেয়েছে সেই ১৯৮৩ সালে। সেখানে লালকেল্লার নাম উঠেছে ২০০৭ সালে। আগ্রা দুর্গের স্থাপত্য অপূর্ব সুন্দর। কেল্লার নির্মাণ কাজ শুরু হয় ষোড়শ শতাব্দীতে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে। শেষ হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে ঔরঙ্গজেবের সময়। জাহাঙ্গীর এবং শাহজাহানের রাজত্বকালে দুৰ্গের বহু নতুন স্থান নিৰ্মিত হয়। দুৰ্গের অভ্যন্তরে উল্লেখযোগ্য দৰ্শনীয় স্থানসমূহ হল – খাস মহল, শিশ মহল, অষ্টভূজাকৃতির মুহম্মন বুৰ্জ, দেওয়ান-ই-খাস, দেওয়ান-ই-আম, মোতি মসজিদ, নাগিনা মসজিদ ইত্যাদি। কেল্লার স্থাপত্যের কাজে ‘তিমুরিদ পারসিক’ শিল্পকলা এবং ‘ভারতীয় শিল্পকলা’র অনবদ্য মিশ্ৰণ দেখা যায়।
চণ্ডীগড় ক্যাপিটল কমপ্লেক্স, চণ্ডীগড়
১০০ একর জায়গায় গড়ে ওঠা চণ্ডীগড় ক্যাপিটল কমপ্লেক্সটি UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্যতম। বিশ্ববিখ্যাত স্থপতি লি করবাসিয়ারের সৃষ্টি এটি। চণ্ডীগড়ের সেক্টর 1-এ অবস্থিত এই কমপ্লেক্সের প্রধান বিল্ডিং-এর সংখ্যা তিন। সেগুলি হল বিধানসভা ভবন, সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং এবং হাইকোর্ট। দিল্লি বা সংলগ্ন এলাকায় বেড়াতে গেলে এই ক্যাপিটল বিল্ডিং পরিদর্শন না করলে একটা বড় মিস হতে পারে।
ভিমবেটকা প্রস্তরক্ষেত্র, মধ্যপ্রদেশ
বছর ২০ আগেও মধ্যপ্রদেশের ভিমবেটকার খোঁজ কেউ রাখত না। এখনও অবশ্য অনেকেই এর নাম জানেন না। কিন্তু এই ভীমবেটকাই ভারতবর্ষের সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন। ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের রায়সেন জেলার আবদুল্লাগঞ্জ শহরের কাছে রাতাপানি ব্যাঘ্র অভয়ারণ্যের মধ্যে এটি অবস্থিত। সাতপুরা পর্বতমালা প্রস্তরক্ষেত্রটিতে আছে সাড়ে সাতশোরও বেশি গুহা। কোনো কোনো গুহায় প্রায় ১ লক্ষ বছর আগে হোমো ইরেক্টাসের বসতি ছিল। প্রস্তরক্ষেত্রের গুহায় রয়েছে আগিম মানুষদের হাতে আঁকা নানা গুহাচিত্র। সেগুলির সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার কাকাড়ু জাতীয় উদ্যান, কালাহারি মরুভূমির বুশম্যান-দের গুহাচিত্র এবং ফ্রান্সের লাস্কো গুহাচিত্রের অবিশ্বাস্য মিল রয়েছে। কোনও কোনও গুহাচিত্রের বয়স আনুমানিক ৩০,০০০ বছর। সমগ্র অঞ্চলটি ঘন বনাঞ্চলের অন্তর্গত, প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ।
চম্পানের-পাওয়াগড় প্রত্নতাত্ত্বিক পার্ক, গুজরাট
গুজরাটের পাঁচমহল জেলার ঐতিহাসিক শহর চম্পানের পাওয়াগড় প্রত্নতাত্ত্বিক উদ্যানে একবার ঢুকলে বেরোতে ইচ্ছে করবে না। প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে রয়েছে অনেক প্রাচীন নিদর্শন। এই অঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন অংশটি মোগল সাম্রাজ্যের অসাধারণ নিদর্শনে পরিপূর্ণ। এখানে গেলে দেখতে পাবেন জামি মসজিদ, কেভাদা মসজিদ, নাগিনা মসজিদ, শহর কি মসজিদ, প্যাঁচালো কুয়ো, শকর খান দরগা, কসবিন তালাব, পাওয়াগড় পাহাড়ের চূড়ার জৈন মন্দিরের মতো অঢেল স্থাপত্য।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-05 18:39:05
Source link
Leave a Reply