হাইলাইটস
- ভারসাম্যপূর্ণ হরমোন শরীররে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এই Hormone ব্যক্তির ক্ষিদে, ঘুম, দুখ, আনন্দ, যৌনজীবন—সকলকে প্রভাবিত করে।
- শুধু তাই নয়, আপনার weight যদি বাড়তে থাকে এবং শত চেষ্টার পরও তা নিয়ন্ত্রণ করতে না-পারেন,
- তা হলে তার পিছনেও এই Hormone-ই দায়ী হতে পারে।
একাধিক কারণে Hormone ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। পিউবার্টি, প্রেগনেন্সি, কিছু ওষুধের কারণে Hormone ভারসাম্যহীন হয়ে পড়তে পারে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব পড়ে, পাশাপাশি weight বৃদ্ধির সমস্যাও দেখা দিতে পারে। শুধু তাই নয় হরমোনের পরিমাণে তারতম্য ঘটলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই ওজন বৃদ্ধি করতে পারে এমন হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। কোন কোন হরমোনের কারণে ওজন বাড়তে পারে, তা জেনে নেওয়া যাক—
Thyroid Hormone
টি৩, টি৪ ও ক্যাল্সিটনিন উৎপাদন করা এই Hormone কাজ। শরীরের মেটাবলিজম বজায় রাখে এই হরমোনগুলি। শরীরে এই হরমোনের ক্ষরণ কম হলে ব্যক্তি হাইপোথায়রয়ডিজমের শিকার হয়। এর ফলে ব্যক্তির weight বাড়তে শুরু করে।
কী করবেন?
১. নিয়মিত Thyroid টেস্ট করান। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে থাকুন।
২. কাঁচা সবজি খাবেন না।
৩. খাবার-দাবারে আয়োডাইজড নুনের ব্যবহার করুন।
৪. নিজের খাদ্যতালিকায় জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার-দাবার অন্তর্ভূক্ত করুন। কুমড়োর বীজ ও অয়েস্টার জিঙ্কের উল্লেখযোগ্য উৎস।
৫. ফিশ অয়েল ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।
৬. চিকিৎসেকর পরামর্শে থায়রয়েডের ওষুধ নিয়মিত খান।
ইনসুলিন
প্যানক্রিয়াজ থেকে এই হরমোনের ক্ষরণ হয়। গ্লুকোজকে কোষ পর্যন্ত পৌঁছে দেয় এই হরমোন। এই গ্লুকোজই আমাদের শরীরে এনার্জির জোগান দেয়। শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ কমে গেলে গ্লুকোজ শরীরের অন্যান্য অংশে পৌঁছতে পারে না। এর ফলে শরীর কাজ করার শক্তি সঞ্চয় করতে পারে না। শরীরের ব্লাড সুগার লেভেল প্রভাবিত হয় এবং ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকে।
কী করবেন?
১. রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়মিত চেক করতে থাকুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
২. ব্যালেন্সড ও লো কার্ব ডায়েট গ্রহণ করুন।
৩. স্ট্রেস মুক্ত থাকুন।
৪. বেশি করে ফল ও সবজি খান।
৫. সিগারেট ও মদ এড়িয়ে চলুন।
৬. লেট নাইট স্ন্যাকিং বর্জন করুন।
৭. যোগ-ব্যায়াম ইনসুলিনের স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৮. আট ঘণ্টার ঘুম অবশ্যই নেবেন। কম ঘুমালে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। বিশেষত ইনসুলিন স্তরে এর প্রভাব পড়ে।
অ্যাস্ট্রোজেন
এই হরমোনের স্তর বেড়ে গেলে বা খুব বেশি কমে গেলেও ওজন বাড়তে পারে। গর্ভাশয়ের কোষ থেকে এই হরমোন অধিক পরিমাণে উৎপাদিত হয়। এ ছাড়াও অ্যাস্ট্রোজেন সমৃদ্ধ খাবারের কারণেও এই হরমোনের স্তর বৃদ্ধি পায়। সুস্থ শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন উৎপন্ন করে। যার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে শরীরের যে কোষগুলি ইনসুলিন উৎপাদন করে, সেই কোষগুলিই আবার অধিক পরিমাণে অ্যাস্ট্রোজেন উৎপন্ন করে। এর ফলে শরীর ইনসুলিন রেজিস্টেন্ট হয়ে পড়ে, গ্লুকোজের স্তর বেড়ে যায় এবং ওজন বৃদ্ধি পায়। অন্য দিকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কম অ্যাসস্ট্রোজেনের সমস্যা দেখা দেয়। কারণ বয়স বৃদ্ধির কারণে অ্যাস্ট্রোজেন উৎপাদন কমতে থাকে। ফ্যাটি সেল্সের সাহায্যে শরীর অ্যাস্ট্রোজেন উৎপন্ন করে। এ সময় সমস্ত এনার্জিকে ফ্যাটে পরিণত করে এবং ওজন বৃদ্ধি পায়।
কী করবেন?
১. প্রোসেসড মিট খাবেন না।
২. অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
৩. নিয়মিত যোগ-ব্যায়াম করুন। অবসাদমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।
৪. গোটা শস্য, সবজি ও ফল নিজের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভূক্ত করুন।
৫. চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন।
টেস্টোস্টেরন
একে সাধারণত মেল বা পুরুষ হরমোন মনে করা হয়। তবে মহিলাদের শরীরেও এর ক্ষরণ হয়। যৌন আকাঙ্খা মেনটেন, ফ্যাট বার্ন, হাড় ও মাংসপেশীকে মজবুত করে এই হরমোন। তবে বয়স বৃদ্ধি, স্ট্রেস ইত্যাদি কারণে এর স্তর কমতে শুরু করে। এর ফলে ওজন বাড়তে দেখা যায়।
কী করবেন?
১. চিকিৎসদের পরামর্শ অনুযায়ী টেস্টোস্টেরন স্তরের পরীক্ষা করে দেখুন।
২. তিসি, কুমরোর বীজ, গোটা শস্য নিজের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভূক্ত করুন। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করলে ওজন কমানো যাবে।
৩. নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে টেস্টোস্টেরন স্তরে উন্নত হবে এবং মেটাবলিজমও বুস্ট হবে।
৪. ভিটামিন সি, প্রোবায়োটিক ও ম্যাগনেশিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন।
৫. মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।
৬. জিঙ্ক ও প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট নিন। এর ফলে টেস্টোস্টেরনের স্তর ঠিক থাকবে।
প্রোজেস্টেরন
শরীর যাতে সুষ্ঠু ভাবে কাজ করতে পারে, তার জন্য প্রোজেস্টেরন জরুরি। তবে অনেক সময় অবসাদ, মেনোপজ বা গর্ভনিয়ন্ত্রক ওষুধের কারণে এর স্তর কমে যায়। এর ফলে ওজন বাড়তে শুরু করে।
কী করবেন?
১. গায়নেকোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
২. চিকিৎকদের পরামর্শ মতো কনস্ট্রাসেপটিভ ওষুধ খান।
৩. প্রোসেসড মিট খাবেন না।
৪. নিয়মিত এক্সারসাইজ ও প্রাণায়াম করুন।
৫. স্ট্রেস মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট থেরাপির সাহায্য নিন।
হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করার পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণে আর কী কী করতে পারেন—
লাইফস্টাইল
নিজের জীবনযাপন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনুন। ব্যস্ত রুটিন থেকে সময় বার করে ব্যায়াম করুন।
জাঙ্ক ফুড
জাঙ্ক ফুড পুরোপুরি বাতিল করতে না-পারলে, এর স্বাস্থ্যকর বিকল্প খুঁজে বার করুন। সপ্তাহ বা মাসে এক বা দুদিন জাঙ্কফুড খাওয়ার দিন নির্ধারণ করুন। এর চেয়ে বেশি জাঙ্ক ফুড খাবেন না।
সময়ের অভাব
ব্যস্ত জীবনে রেডি টু ইট খাবারের প্রতি ঝোঁক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধরনের খাবারের ফলেও ওজন বৃদ্ধি হয়। তবে কম সময়ের মধ্যেও স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করা যায়। সুপ, স্যালাড, দালিয়া, ওটস ইত্যাদি কম সময়ে তৈরি হয়ে যেতে পারে।
স্ট্রেস
অবসাদও ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অবসাদে অনেক সময় আমরা বেশি খাবার খেয়ে ফেলি। চিন্তিত হয়ে পড়লে এক গ্লাস জল পান করুন। আবার অবসাদমুক্ত হওয়ার এক্সারসাইজ করুন।
নিদ্রাভাব
বেশি রাত পর্যন্ত জেগে থাকা এবং ঘুম পুরো না-হওয়ার কারণেও ওজন বাড়তে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-07-04 10:41:15
Source link
Leave a Reply