হাইলাইটস
- স্বাভাবিক নিয়মে সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে স্পার্ম কাউন্টিং-এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- লক্ষ লক্ষ শুক্রাণুর মধ্যে একটিমাত্র শক্তিশালী শুক্রাণুই ডিম্বাণুর সঙ্গে নিষেকের মাধ্যমে নতুন প্রাণ তৈরিতে সক্ষম হয়।
স্পার্ম কাউন্ট কী? তা জানার আগে জানা দরকার যে মানবজীবনে এই sperm count-এর গুরুত্ব কী?
স্পার্ম কাউন্টের সাধারণ মাত্রা প্রতি মিলিলিটার সিমেনে দেড় কোটি থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ কোটি পর্যন্ত। আর এই সংখ্যাটা দেড় কোটির কম হওয়া মানেই sperm count কম। এমনকি বীর্যপাতের সময় সেই সংখ্যা ৩ কোটি ৯০ লক্ষের কম হওয়ার অর্থও স্পার্ম কাউন্ট কম। এই কম স্পার্ম কাউন্টকে বলাহয় অলিগস্পার্মিয়া।
নিজের sperm count কীভাবে জানবেন?
Semen পরীক্ষা করেই স্পার্মের সঠিক সংখ্যা জানা যায়। এই পরীক্ষাগুলি হল-
– স্পার্মের সংখ্যা গণনা (ঘনত্ব)
– স্পার্মের আকার
– স্পার্মের গতিবেগ বা ‘স্পার্ম মটিলিটি’
স্পার্ম কাউন্টিং বাড়ি এবং ল্যাবেরটরি উভয় জায়গাতেই করা যায়। তবে বাড়িতে এই পরীক্ষা করলে শুধুমাত্র শুক্রাণুর সংখ্যা জানা যায়। তার আকার এবং গতিবেগ জানা যায় না। অথচ পুরুষের বন্ধ্যাত্বের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্য়া, আকার এবং গতিবেগের ভূমিকাই সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেকারণেই চিকিৎসকরা পরীক্ষাগারে শুক্রাণু গণনার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
sperm countগুরুত্বপূর্ণ কেন?
স্বাভাবিক নিয়মে সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে স্পার্ম কাউন্টিং-এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ লক্ষ শুক্রাণুর মধ্যে একটিমাত্র শক্তিশালী শুক্রাণুই ডিম্বাণুর সঙ্গে নিষেকের মাধ্যমে নতুন প্রাণ তৈরিতে সক্ষম হয়। সেক্ষেত্রে স্পার্ম কাউন্ট কম হলে সেই সম্ভাবনাও কমতে থাকে। আর স্পার্ম কাউন্ট যথেষ্ট থাকলে সন্তান ধারণের প্রবণতাও যথেষ্ট হারে বৃদ্ধি পায়।
সংখ্যার বাড়-বাড়ন্ত
– বিভিন্ন কারণে স্পার্ম কাউন্ট কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কুখ্যাত কারণটি হল ওজন বৃদ্ধি।
– দেহে চর্বির পরিমাণ বেড়ে গেলে, অতিরিক্ত ভুঁড়ি হলে কিংবা রক্তচাপ অধিক হারে বৃদ্ধি পেলে স্পার্ম কাউন্ট কমতে থাকে।
– এমনিতে ডায়াবিটিস, মানসিক চাপ, হার্টের অসুখ বা স্ট্রোকের কারণেও স্পার্ম কাউন্ট কমে যায়।
বন্ধ্যাত্বে স্পার্ম কাউন্টের ভূমিকা
স্পার্ম কাউন্ট কমে গেলে সন্তান ধারণের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। তা বলে বন্ধ্যাত্বের জন্য সবসময় স্পার্ম কাউন্টকে দায়ি করা চলে না।
– বন্ধ্যাত্ব আসতে পারে নারীদেহের ডিম্বাণুর কার্যক্ষমতা বা নিঃসরণ কম হলে।
– ফ্যালোপিয়ান টিউব ব্লক থাকলে
– এন্ডোমেট্রিসিস থাকলে
– এমনকি সন্তান ধারণ সংক্রান্ত সচেতনতা কম থাকার কারণেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
– ৩৫ বছরের থেকে বেশি বয়স হলেই সাধারণত চিকিৎসকরা স্পার্ম কাউন্টের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
চিকিৎসা
বিভিন্ন কারণে স্পার্ম কাউন্ট কম হতে পারে
– বংশগত
– পুরোনো কোনও সার্জারি
– শারীরিক অসুস্থতা
– যৌনরোগ
রোগের চিকিৎসা করা হয় তার কারণ অনুযায়ী।
– শুক্রাণু নির্গমণের পথে কোনও বাধা থাকলে তা অপারেশ করে ঠিক করে দেওয়া যায়।
– সংক্রণের কারণে স্পার্ম কাউন্ট কমে গেলে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হয়।
– নির্দিষ্ট ওষুধ এবং কাউন্সেলিং-এ সাহায্যেও স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি করা সম্ভব।
– হরমোন ট্রিটমেন্ট করেও স্পার্ম কাউন্ট বাড়ানো হয়।
– স্পার্ম কাউন্ট বাড়াতে জীবনযাত্রার মানে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
– ওজন কমিয়ে সমস্যার সমাধান এক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
– ভিটামিন সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমেও স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধির চিকিৎসা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে রোগীর শরীরের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদির ভারসাম্য ঠিক থাকলে স্পার্ম কাউন্টিং-এ উন্নতি হয়।
– স্পার্ম কাউন্ট বাড়াতে অ্যালকোহল, মাদক এবং তামাকজাত দ্রব্য সম্পূর্ণ বর্জন করা অত্যন্ত জরুরি।
– পরিবর্তন আনতে হবে অন্তর্বাসেও। এক্ষেত্রে পুরুষদের ঢিলেঢালা সূতির অন্তর্বাস পরার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
আগে পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কথা বিশ্বাসই করতেন না কেউ। বন্ধ্যাত্ব মানেই যেন তা নারীর এক চেটিয়া দোষ। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান প্রমাণ করে দিয়েছে যে স্ত্রী হোক বা পুরুষ বন্ধ্যাত্বের শিকার হতে পারেন যে কেউ। সমীক্ষা বলছে বর্তমান সময়ের জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস, কাজের চাপ, মানসিক চাপ ইত্যাদি নানা কারণে পুরুষের বন্ধ্যাত্বের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ যত আধুনিক হচ্ছে ততই পরবর্তী প্রজন্মের জন্মের সম্ভাবনা কমতে থাকছে। কিন্তু সেটা তো চলতে পারে না। মানবসভ্যতাকে সুস্থভাবে টিকিয়ে রাখতে গেলে বংশগতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই হবে। আর তার জন্য সচেতন হতে হবে পুরুষকেও। অতএব সন্তান ধারণের আগে বা কোনও সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-02 16:01:07
Source link
Leave a Reply