নতুন বছরে অনেকে বাড়ি বদল করেন। নতুন বাসা খোঁজা, জিনিসপত্র স্থানান্তর, নতুন বাসায় আবার গোছানো, টেলিফোন, ডিশ লাইনের ব্যবস্থা ইত্যাদি ঝামেলা এসে দাঁড়ায় সামনে। বেশ কয়েকবার বাসা বদল করেছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে তাই জানানো হলো বাড়ি বদলের সময় কী করতে হবে।
নতুন বাসা
শুধু বাসা সুন্দর আর অভিজাত এলাকায় হলেই চলবে না, জেনে নিন বাসার মালিক সম্পর্কে। এ জন্য কথা বলতে পারেন বাসার অন্য ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে এবং নিরাপত্তাব্যবস্থাও জেনে নিতে হবে। সব মিলিয়ে আপনার পছন্দ হলে বাসায় ওঠার আগে নতুন বাসার সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না তা জেনে নিন। চুনকাম করুন ও বিদ্যুতের সব লাইন ঠিক করে নিন। এক কথায় বাসাটা থাকার জন্য পুরোপুরি তৈরি করে নিন আগে। ফলে পরে আর ঝামেলা পোহাতে হবে না।
বাসার জিনিস গুছিয়ে নিন
বাসা বদল করার সময় অনেক জিনিস খোয়া যায় বা ভেঙে যায়। এ জন্য আপনার বাসার জিনিসপত্রের একটা তালিকা তৈরি করে নিন এবং সে মোতাবেক প্যাক করুন। হালকা ধরনের জিনিস এবং হাঁড়ি-পাতিলগুলো একধরনের বস্তায় গুছিয়ে নিতে পারেন। বাসার টিভি, ফ্রিজ, ওভেন ও কম্পিউটারসহ ছোট অথবা বড় ইলেকট্রনিক জিনিসগুলো সুন্দরভাবে প্যাকেটে ভরে নিতে হবে। আর যেসব জিনিস কাচের বা ভঙ্গুর, সেগুলো খোলা কিছুতে বসিয়ে হাতে হাতে পরিবহন করতে হবে।
পরিবহনের খোঁজ
নতুন বাসায় মালামাল পরিবহনের জন্য নানা ধরনের পরিবহন ব্যবহার করতে পারেন। এটা নির্ভর করে দুই বাসার দূরত্ব আর আপনার ঘরের জিনিসপত্রের পরিমাণের ওপর। কম মালামাল আর দূরত্ব কম হলে ভ্যানগাড়ি, ঠেলাগাড়ি অথবা পিকআপ ব্যবহার করতে পারেন। আর মালামাল ও দূরত্ব বেশি হলে ট্রাকের ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে অবশ্যই আপনার নিকট আত্মীয় বা স্বজনদের দু-চারজনকে বাসা বদলের দিন ডেকে নেবেন। কারণ, ভাড়া শ্রমিকদের সঙ্গে থেকে পরিচালনার প্রয়োজন হতে পারে। নিজেরা দায়িত্ব না নিলে ছোটখাটো অনেক জিনিস হারিয়েও যেতে পারে।
কোথায় পরিবহন পাবেন
মালামাল আনা-নেওয়ার জন্য ভাড়ায় ট্রাক বা পিকআপ বিভিন্ন এলাকায় পাবেন। পিকআপ ভ্যানের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন রাজধানীর সাতরাস্তা, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার, মিরপুর, ঝিগাতলা, গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, খিলগাঁও ও শাহজাহানপুরে। ভাড়া দূরত্ব ভেদে ভিন্ন হয়। আর বেশি মালামালের জন্য ট্রাকের প্রয়োজন। ট্রাকের জন্য আপনি যোগাযোগ করতে পারেন গাবতলী, সায়েদাবাদ ও তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডে।
নতুন সংযোগ
বাসা পাল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে আপনার বাসার টেলিফোন, ডিশ ও ইন্টারনেট লাইনও সরিয়ে নিতে হবে। টেলিফোনের জন্য অবশ্যই টেলিফোন এক্সচেঞ্জে প্রায় দেড়-দুই মাস আগে আবেদন করতে হবে। নতুন সংযোগের পাশাপাশি পুরোনো সংযোগ বন্ধের কথাও আবেদনে তুলে ধরতে হবে। নতুন বাসায় সংযোগ শুধু পুনঃস্থাপন করে দেবে। একইভাবে ডিশ ও ইন্টারনেট সরবরাহকারীকে জানিয়ে দিন বাসা পাল্টানোর কথা। খবর নিন ওই এলাকায় কারা এসব সেবা দিচ্ছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে রাখুন। নতুন বাসায় ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এই সেবা পেতে পারেন।
আপনি যে আশা নিয়ে নতুন বাসায় যাচ্ছেন, তা সার্থক হবে বাসা বদলের পুরো প্রক্রিয়া সুন্দরভাবে শেষ হলে। এ জন্য মালামাল পরিবহন থেকে নতুন বাসায় গুছিয়ে নেওয়া পর্যন্ত প্রতিটি দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখবেন, একটু অসাবধানতা আপনার জন্য বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সাইদ আরমান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৬, ২০১০
Leave a Reply