প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় সময়কে নিয়ন্ত্রণ করে চলতে হয় সবার। সময়ের সেই বল্গা হরিণকে পোষ মানাতে হয় প্রতিটি ক্ষেত্রে। তাই কোনো পারিবারিক আয়োজনে কিংবা অফিস যাত্রায় নিজেকে প্রস্তুত করতে হয় দ্রুত সময়ে। সময়ের সেই বেড়াজালে নিজের সৌন্দর্যকে আরো শাণিত করতে চাই এমন কিছু টিপস্ যা আপনার রূপ সৌন্দর্যের প্রকাশকে ত্বরান্বিত করবে সহজ উপায়ে। আমাদের আজকের আয়োজনে থাকছে সেই দিকগুলো নজর রেখে সহজাত কিছু ট্রিকস।
সকালের রূপ রুটিন
সকালের রূপ পরিচর্চায় এক সাধারণ লাবণ্য ছড়িয়ে থাকে এমনিতেই। তবে সেই লাবণ্যে বাড়তি নজর দাবি করে চোখের সৌন্দর্য। তাই সকালের মেকআপে প্রথমেই নজর দিন চোখে। ব্লটিং অন প্রাইমার লাগান, এর ফলে চোখের আই কালার বেশিক্ষণ থাকবে। পাশাপাশি ন্যাচারাল ব্রাউন রঙের আইশ্যাডও ব্যবহার করুন। মোটামুটি সব রঙের ত্বকের সঙ্গেই এই আইশ্যাডোটি সামঞ্জস্য তৈরি করে। সকালের প্রস্তুতিতে ব্রাউজ রঙের কাজল পরুন আর ট্রান্সপারেন্ট মাস্কারা ব্যবহার করতে পারেন। কখনো কখনো চোখের পাতার মাঝের অংশে একশেড লাগান এবং চোখের পাতার উপরের অংশে আইশ্যাডো গাঢ় করে লাগান। সকালের প্রস্তুতিতে ফাউন্ডেশন কম ব্যবহার করুন। হালকা কমপ্যাক্ট ব্যবহার করতে পারেন। চিকবোনে হালকা ব্রাশ লাগাতে পারেন। তবে দিনের বেলায় ব্লাশঅন না ব্যবহার করাই ভাল। ঠোঁটে যেমন ন্যাচারাল কালারের লিপস্টিক ব্যবহার করবেন পাশাপাশি পিচ রঙের গ্লস লাগাতে পারেন। হাতের নখ ভাল করে কেটে ন্যাচারাল কালারের নেইল পালিশ লাগান।
সন্ধ্যার মেকআপ
সকালের মেকআপে লাবণ্য যেমন জরুরি তেমনি সন্ধ্যার আয়োজনে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফুটিয়ে তোলা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই সন্ধ্যার বা রাতের মেকআপে রঙের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বয়স ত্রিশের কোঠার মধ্যে হলে ন্যাচারাল এবং ফাঙ্কি কালার যেমন গুরুত্ব পেতে পারে তেমনি বয়স বেশি হলে স্ট্রং অন ন্যাচারাল কালার ব্যবহার করতে পারেন। যাদের ব্লু ফ্রস্ট আইশ্যাডো কিংবা পার্পল লিপ কালারের খানিকটা উগ্রতা প্রকাশ পায় তারা ন্যাচারাল কালারিংয়ে নজর দিন। মনে রাখতে হবে, রাতের মেকআপে চোখ হবে ডার্ক, ড্রামাটিক এবং স্মোকি। এধরনের চোখের জন্য বারগান্ডি, চকলেট ব্রাউন কিংবা ডিপ গ্রে আদর্শ রঙ। রাতের মেকআপে চোখের পাতার উপরের অংশ ও লোয়ার আইরিম হাইলাইট করুন। সঙ্গে সঙ্গে আপার ল্যাশ লাইন বাড়িয়ে নিন। আর লোয়ার ল্যাশে ব্রাউজ মাসকারা লাগান। রাতে গালের যে অংশটা হাসিতে ফুলে উঠে সে অংশে অর্থাৎ চিকবোন, অ্যাপেল এবং ট্যাম্পল অংশ ব্লাশ লাগান। ঠোঁটের সাজে সরু ঠোঁট হলে ডার্ক শেড এবং পুরো ঠোঁটে হালকা শেডের লিপস্টিক বেছে নিন। স্কিনটোন, আইকালার, টিথ কালারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লিপ কালার বাছুন। হলুদ স্কিন টোনের অরেঞ্জ লিপ কালার বা গালের রঙ লালচে হলে পিঙ্ক শেডের লিপ কালার লাগাবেন না।
মেকআপ চেকলিস্ট
ঝটপট মেকআপে যে জিনিসগুলো অনেক সময়ই নজর এড়িয়ে যায় তা কিন্তু একটু সাবধানতা অবলম্বন করলে শুধরানো যায়। যেমন-
০ ঘন ঘন হাত দিয়ে মেকআপ টাচ করবেন না। এতে মেকআপ নষ্ট হয়ে যায়।
০ মুখের সব অংশের বিশেষ করে ঠোঁটের খুঁত বা আকৃতি পরিবর্তন করতে যাবেন না।
০ ন্যাচারাল লিপ লাইনের অতিরিক্ত অংশকে খুব বেশি বড় করার চেষ্টা করবেন না।
০ নিজের ত্বকের স্বাভাবিক রঙ
বদলানোর জন্য ফাউন্ডেশন বা কালার কারেক্টার ব্যবহার করবেন না।
০ ব্লাশ ও ফাউন্ডেশন ভাল করে ব্লেন্ড করুন।
০ ফ্রেশ ভাব আনার জন্য মেকআপের উপর টোনার বা পানি স্প্রে করবেন না।
০ চিক কালার ব্যবহার করা হয় ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য।
০ রাতের মেকআপ মানেই লাউড হবে এমন নয় বরং ব্যালেন্স রাখার চেষ্টা করুন।
০ চোখে ড্রামাটিক লুক রাখলে লিপস্টিক একশেডের হালকা করে লাগান।
তাড়াতাড়ি মেকআপ
০ প্রথমেই ময়শ্চারাইজার লাগান। বেজ কন্ডিশনের উপর খেয়াল লাখুন।
০ স্কিন টোনের সঙ্গে ম্যাচিং পাউডার ফাউন্ডেশন লাগান ব্রাশের সাহায্যে।
০ চকচকে ভাব দূর করতে হালকা কমপ্যাক্ট লাগান।
০ তাড়াতাড়ির সময় পাউডার ব্লাশ ব্যবহার করা সহজ। তাই মেকআপ কিটস-এ পাউডার ব্লাশ রাখুন।
০ নাখ ও টিজোনে পাউডার লাগান। আইপেন্সিল দিয়ে লোয়ার আইলাইন হাইলাইট করুন।
০ ঠোঁটে লিপগ্লস লাগান।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জানুয়ারী ১৯, ২০১০
Leave a Reply