হাইলাইটস
- আরশোলা (cockroach) দেখলে আমরা অনেকেই ভয়ে ছুটোছুটি শুরু করে দিই।
- জানেন হয়তো চিনের (cockroach) মানুষ তা করেন না। তাঁদের খাদ্যাভাসে আরশোলার (cockroach) বিশেষ স্থান রয়েছে।
- তবে জানেন কি শুধু খাবার নয়, আরশোলা (cockroach) দিয়ে বানানো ওষুধও কিনে খান তাঁরা!
বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো জীবন্ত প্রাণী। বিশ্ব এদিক থেকে ওদিক থেকে হয়ে যাক, বিশ্বের সকলে মিলে একসঙ্গে পটল তুলুক, তাও আরশোলার (cockroach) শুঁড়ের একটা রোমও বাঁকবে না। পিলপিল করে দিব্যি নিজেকে সামলে নেবে এই খুঁদে শয়তানের দল। শয়তান বললে ভালো দেখায় না। আসলে আরশোলা কিন্তু আদতে বিশেষ কোনও ক্ষতি করে না। শুধু এদিক ওদিক লালা মাখিয়ে ত্বকে সংক্রমণ বা পেট খারাপ করায়। আসলে ময়লা আবর্জনা কানা ঘুপসি ছাড়া আরশোলারা বাসা বাঁধতে ঠিক পছন্দ করে না। কিন্তু ওই খয়েরি রঙের গা গিনগিনে দেড় ইঞ্চি সাইজের পোকাটা দেখে গা সিরসিরিয়ে উঠবেই।
লোকে বলে শ্রীদেবী হোক বা ফুলন দেবী আরশোলা (cockroach)দেখলে সকলেই নাকি সকলে কুপোকাত। অতি বড় বীর মহীয়সীও আরশোলা (cockroach) দেখলে মুচ্ছো যান। মানে মহিলাদের সঙ্গে পৃথিবীর এই আদিম জীবটির সঙ্গে একটা আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক আছে। মহিলারা আরশোলাকে দুচক্ষে দেখতে পারেন না।
ছোটোবেলা থেকেই সকলে শুনে আসছে যে চিনাম্যানরা আরশোলা (cockroach) খায়। স্বয়ং টেনিদা একথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন। আমরা তো কোন ছাড়। অনেকে অবশ্য চিনাদের এই আরশোলা খাওয়ার গল্পকে গুজব বলেও গা ঝাড়া দিয়ে ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু আজকের গ্লোবালাইজেশনের যুগে সেসব গুজবের বাস্তব অস্থিত্ব প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্ববাসী জানতে পেরেছেন যে চিনারা আরশোলা খান।
অবশ্য চিন একা নয় তাদের দলে আরও কয়েকটি দক্ষিণ এশিয় দেশ রয়েছে। ছাঁকা তেলে আরশোলা ভেজে দিব্যি খেয়ে নেন তাঁরা। মনে করুন আপনি তাঁদের বাড়ি গেলেন, বিকেলের চায়ের সঙ্গে টা হিসেবে এক প্লেট মশলা দেওয়া আরশোলা ভাজা আপনার সামনে রাখা হল। মজাই হবে কিন্তু।
ভাজা, তরকারি, চচ্চরির কথা বাদ দিলাম। আপাতত স্যুপ আর শরবত নিয়ে কথা বলা যায়। দক্ষিণ চিনের মর্নিং পোস্ট-এর খবর অনুযায়ী চিনের শাংচান শহরে প্রতি বছরে একটি বিল্ডিং-এ কম করে ৬০০ কোটি আরশোলা পালন করা হয়। বিল্ডিং-এর আয়তন দুটি বড় ময়দানের সাইজের। বাড়িটিতে আলোর প্রবেশ নিষেধ। এবং সেখানকার তাপমাত্রা আরশোলার বেঁচে থাকা ও বংশ বিস্তারের পক্ষে উপযুক্ত। বাড়িটির ভিতরে আরশোলাগুলি নিজের ইচ্ছে মতো ঘুরে বেড়াতে পারে এবং বংশ বিস্তার করতে পারে। সেগুলির বাইরে বেরোনোর সুযোগই নেই।
আরশোলার শরবত এবং স্যুপ (cockroach juice)
বাড়িটির ভিতরে আরশোলাগুলিকে খাইয়ে দাইরে তাগড়া করা হয়। তারপর সেগুলিকে চিপে রস তৈরি করা হয়। তা দিয়ে তৈরি হয় শরবত কিংবা স্যুপ। প্রাচীন চিনা চিকিৎসা অনুযায়ী আরশোলার রস খেলে পেট খারাপ সারে, বমি বন্ধ হয়, পেটের আলসার এবং নিঃশ্বাসের কষ্ট দূর হয়।
চিনের শানডং কৃষি বিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি, আরশোলা নিজেই একটি জলজ্যান্ত ওষুধ। এর ভেষজ গুণ যথেষ্ট। প্রাচীন চিনা চিকিৎসাশাস্ত্রে আরশোলার ব্যবহার রয়েছে। আজও দেশের প্রৌঢ় অধিবাসীরা শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত আরশোলা খেয়ে থাকেন। নিজেদের চিকিৎসায় আরশোলা ব্যবহার করেন। গবেষকদের দাবি, আরশোলার তৈরি ওষুধ পশ্চিম দেশের ওষুধের তুলনায় অনেক সস্তা। চিনের সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্প অনুযায়ী সেদেশের হাসপাতালে আরশোলার তৈরি ওষুধের ব্যবহার হচ্ছে। অবশ্য চিনের অনেক গবেষক এবং চিকিৎসকও আবার এই আরশোলার চিকিৎসাকে সমর্থন করেন না। তাঁরা বিজ্ঞানসম্মত ওষুধেরই সমর্থক।
চিনাম্যানদের বাদুড় খাওয়ার ফল গত প্রায় দুই বছর ধরে গোটা বিশ্বের মানুষ ভোগ করে চলেছেন। করোনার দাপটে সুখ, শান্তি, স্বাস্থ্য, অর্থ সবকিছুই ধ্বংসের মুখে। এবার আর আরশোলা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করাই ভালো। বাদুড় থেকে করোনা হয়েছে আরশোলা খেয়ে না জানি কী হয়।
সে যাই হোক চিনারা আরশোলা খাক। আপনি বরং ঘরে আরশোলা মারার স্প্রে রেখে দিন। না হলে ময়লা আবর্জনাতে “গার্বেজ বাথ” নিয়ে খাবারে মুখ দিলে বাড়িতে নতুন সমস্যা তৈরি হবে। আরশোলা খেলে চিনাদের হয়তো বমি পেট খারাপ সেরে যায়, কিন্তু আপনার আমার বাড়ির লোকেদের বমি পেট খারাপ শুরু হয়ে যাবে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-06-27 11:38:31
Source link
Leave a Reply