গ্রীষ্মের প্রখর তাপ, গরম আবহাওয়া থেকে স্বস্তি দিতে আসে বর্ষাকাল। বর্ষা আমাদের প্রচন্ড গরমের হাত থেকে মুক্তি দেয় ঠিকই, তবে সাথে করে বিভিন্ন রোগ-জীবাণু বয়ে নিয়ে আসে। বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতা অত্যাধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পায়, যা বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটায়। বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় এবং মশার উপদ্রবও বৃদ্ধি পায়। তাই এই সময় বাচ্চাদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই শিশু বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকেরা বর্ষাকালে শিশুদের অতিরিক্ত যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বাচ্চা যাতে কোনওভাবে অসুস্থ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে মা-বাবাকেই। তাহলে জেনে নিন, বর্ষাকালে বাচ্চাদের কীভাবে যত্ন নেবেন।
১) শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন বাচ্চাদের প্রতিদিন স্নান অথবা স্পঞ্জিং করুন। গলা, ঘাড়, আন্ডারআর্মস, যৌনাঙ্গ এবং দেহের বিভিন্ন ভাঁজ ভাল করে পরিষ্কার রাখুন। রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে, স্নানের আগে তেল ম্যাসাজ করুন। গা মোছাতে পরিষ্কার নরম তোয়ালে ব্যবহার করুন। আলতো করে গা মোছান।
২) হালকা পোশাক পরান বর্ষাকালে গরম এবং স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া থাকে। তাই শিশুকে সুতির পোশাক পরানোর চেষ্টা করুন। তবে বাচ্চার গায়ে কখনও স্যাঁতস্যাঁতে পোশাক রাখবেন না। এর থেকে বাচ্চার ত্বকে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে।
৩) ডায়াপার কম ব্যবহার করুন বাচ্চাকে সবসময় ডায়াপার পরিয়ে রাখবেন না। এটি বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক হতে পারে। বাড়ির ভেতরে বাচ্চাকে ডায়াপার ছাড়াই রাখুন। তার ত্বক উন্মুক্ত রাখুন। তবে বাড়ির বাইরে বেরোলে ব্যবহার করতে পারেন।
৪) ঘরের তাপমাত্রা ঠিক রাখুন ঘরের তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। তাপমাত্রা যাতে খুব বেশি গরম বা বেশি ঠান্ডা না থাকে। বাচ্চাদের বিছানায় হালকা সুতির কভার ব্যবহার করুন। রাতে যদি বাচ্চার ঠান্ডা লাগে, তাহলে তার গায়ে কিছু চাপা দিতে পারেন।
৫) অবশ্যই জল ফুটিয়ে খাওয়ান বাচ্চাদের যথাযথ হাইড্রেশনের প্রয়োজন, তবে বাচ্চার জল অবশ্যই ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে ব্যবহার করুন। এমনকি বাচ্চাদের খাবার তৈরির ক্ষেত্রেও, এই ফোটানো জল ব্যবহার করুন। আরও পড়ুন :আপনার বাচ্চা কি ঘুমাতে চায় না? এই ৭টি খাবার বাচ্চার ভাল ঘুম হতে সাহায্য করবে!
৬) বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন অপরিচ্ছন্নতা, ধুলো-ময়লা, বাচ্চাদের অসুস্থ হওয়ার মূল কারণ। তাই বর্ষাকালে বাড়ির ভিতর এবং বাহির, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। প্রাকৃতিক উপাদানযুক্ত জীবাণুনাশক ব্যবহার করে ঘর পরিষ্কার করুন। এমনকি অভ্যন্তরীণ নিকাশী ব্যবস্থার প্রতিও যত্ন নিন। বাগান, বাথরুম এবং ছাদ পরিষ্কার রাখুন। কোথাও জল জমতে দেবেন না। যতটা সম্ভব স্যাঁতস্যাঁতে ভাব থেকে দূরে থাকুন।
৭) কীটপতঙ্গ থেকে সাবধান বর্ষাকালে কীটপতঙ্গের উপদ্রব বেশি লক্ষ্য করা যায়। স্যাঁতসেঁতে জলা জায়গায় মশার প্রজনন ক্ষেত্র লক্ষ্য করা যায়। তাই বাড়িতে যেন কোথাও জমা জল না থাকে তার দিকে লক্ষ্য রাখুন এবং যতটা সম্ভব স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ থেকে দূরে থাকুন। আসবাবপত্র, কার্পেট, সোফা এবং ঘরের ধুলো-ময়লা পরিষ্কার করতে ভ্যাকিউম ক্লিনার ব্যবহার করতে পারেন। এমনকি বর্ষা শুরুর আগেই বাড়িতে প্রেস-কন্ট্রোল ট্রিটমেন্টও করাতে পারেন।
৮) ভিড় এড়িয়ে চলুন একে বর্ষাকাল, তার উপর আবার করোনা সংক্রমনের ভয়। তাই বাচ্চাদের যতটা সম্ভব ভিড় থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে বর্ষাকালে বাতাসে সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকে। ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকগুণ বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ভিড় থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।
এম ইউ/২৭ জুন ২০২১
স্বাস্থ্য | DesheBideshe
2021-06-27 13:28:08
Source link
Leave a Reply