বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা অনেক বেশি স্মার্ট। অনেক কাজ করেন তারা। দেখলে অবাক হতে হয় এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়। তবু কর্মদীপ্তময় এই জীবনের মধ্যে অনেককেই খুঁজে পাওয়া যাবে, যাদের গতি হরহামেশাই ম্লান হয়ে যায়। বন্ধু-বান্ধবদের মধ্য থেকে কেউ একটা মজা করে কথা বললে কোথায় যেন হারিয়ে ফেলে নিজেকে। ছোট্ট একটা কথা তার দিনটাই মাটি করে দেয়। অযথাই কষ্টের ভার মনে বইতে হয় তাকে। আর অহেতুক এই টেনশনের নাম ব্রশুডিং। ব্রশুডিংয়ের নানা দিক নিয়ে এবারের আয়োজন-
ব্রুডিং কী
একটা জিনিস নিয়ে ক্রমাগত ভাবতে থাকা, কিংবা তা থেকে না বেরুতে পারার নামই ব্রুডিং। আর এর ফলে যে গোলমাল সৃষ্টি হয় তা কিন্তু বোঝাই যায়। এসব কারণে পড়তে পারেন চিন্তার সাগরে, বাড়তে পারে টেনশন। ব্যাহত হবে স্বাভাবিক জীবন।
নিজেকে মুক্ত করতে
ব্রুডিং এ ভোগার বিষয়টা কিন্তু অনেকটাই নির্ভর করে মানিয়ে নেয়ার মতার উপর। আর যখন ব্রুডিং-এ আক্রান্ত হয় কেউ তখন কিন্তু কিছু অনিয়মও চোখে পড়ে, যেমন পিঠে ব্যথা, খিদে কমে যাওয়া, অল্পেই ক্লান্ত হওয়া, হতাশা, এগুলো সবই হয় মাত্রাতিরিক্ত আত্মনিমগ্ন হওয়ার ফলে এর একটা মজার দিকও আছে। এমন অনেককেই খুঁজে পাওয়া যাবে যাদের চাপের মুখে পড়লে মাথা খুব ভাল কাজ করে। যেমন তাদের পরী ার আগের রাতের প্রস্তুতিটা কাজে লাগে সবচেয়ে বেশি। কারণ তখন সম্পূর্ণ মনোযোগ থাকে পরীক্ষায়। তাই এভাবেই চাপের মধ্যে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।
কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হবেন
অতিরিক্ত চাপ আর মানসিক অস্থিরতা থেকে নিজেকে মুক্ত করার প্রথম শর্ত হল আত্মবিশ্বাস বাড়ান। পারিপার্শ্বিক চাপ যতই থাক আমি ঠিকঠাক মত আমার কাজ করে নেব। এই বিশ্বাস মাথায় রেখে ঠান্ডা মাথায় কাজ করলেই স্বাভাবিকভাবে এগুতে পারবেন। আর মনে রাখতে হবে পারিপার্শ্বিকতা, পরিবর্তন আর সহযোগিতার উপর সম্যক জ্ঞান নিয়েই এগিয়ে যাওয়া যাবে সামনে। নিয়ম মতো কাজ করা, সময় মতো পড়তে বসা, পড়ার সময় ফোনে কথা না বলা। নিজের গোপন বিষয় কখন কার সাথে শেয়ার করবেন এ বিষয়গুলো ঠান্ডা মাথায় ভেবে নিজেই সিদ্ধান্ত নিন। সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে পরে কী হতে পারে তা নিয়ে একটু মাথা খাটালে ভাল হয়। আজ পৃথিবীটা যেমন কাল তেমন নাও থাকতে পারে। এটাই স্বাভাবিক। আপনাকে শুধু এই পরিবর্তনগুলো গ্রহণ করতে হবে আর নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে। সহযোগিতার হাত যেমন আপনাকে রক্ষা করবে, তেমন অন্যের সমস্যায় সমাধানে আপনি অবদান রাখতে পারবেন। আসল কথা পরস্পর শেয়ার করে নেয়াই হচ্ছে চাপ কমানোর চাবিকাঠি।
মানসিক অস্থিরতা কমানো টিপ্স
০ সবকিছু কিন্তু আপনার নিয়ন্ত্রণে নয়। সব সময় একশ ভাগ সফলতা বা কর্ম নিপুণ করার ক্ষমতা কারো হাতেই থাকে না। ভুল হতেই পারে। তা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। এগুতে হবে সামনে।
০ শুধু শুধু হতাশার রাজ্যে তলিয়ে যাওয়ার কোন মানে নেই। নিজেকে নিয়ে কল্পনার রাজ্যে ভেসে বেড়ানো তার চেয়ে ঢের ভাল। নিজেকে রাজকন্যা ভাবেন কিংবা ভাবেন সফল কোন ব্যক্তি। যিনি আপনার আদর্শ। আবার ফিরে আসুন সজীব সুন্দর মন নিয়ে।
০ নিজের জরুরি কাজগুলো রুটিন মাফিক করে ফেলুন। না বলতে শিখুন। কখনো নিজেকে, কখনো অন্যকে প্রয়োজন হলে না বলুন।
০ আগামীতে কী করবেন তা কাগজে কলমে লিখে আর মনের মধ্যে ধারণ করুন। ফলে আপনি সেই মতই প্রস্তুত হতে পারবেন।
০ পরিকল্পনা আর পড়াশোনাগুলো নিয়মিত ব্রাশ-আপ করতে হবে। নইলে ধুলো জমে আবছা হয়ে যাবে।
জিমি সুলতানা
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জানুয়ারী ২৩, ২০১০
Leave a Reply