বিয়ের আয়োজনকে আরও উত্সবমুখর করতে সেদিন সবাই বিয়ের অনুষ্ঠানে আত্মীয়স্বজনকে পাশে রাখতে চায়। তা ছাড়া বিয়েতে বর-কনের জন্য আশীর্বাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমন্ত্রিত আত্মীয়স্বজন বর-কনেকে আশীর্বাদ করে থাকেন। আর এ কারণেই তাঁদের নিমন্ত্রণ বা দাওয়াত দেওয়া হয়। একটা সময়ে আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত দেওয়া হতো মুখে মুখে। কিন্তু এখন শহর থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত সব জায়গায়ই কার্ড বা দাওয়াতপত্রের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিয়ের দাওয়াতপত্র বর্তমানে এক ধরনের ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।
তবে যা-ই হোক না কেন, দাওয়াতপত্র হওয়া চাই শৈল্পিক ও নান্দনিক। একটি নান্দনিক দাওয়াতপত্রের মাধ্যমেও ফুটে ওঠে মানুষের ব্যক্তিত্ব। দাওয়াতপত্র বানানোর ক্ষেত্রে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, কার্ডটি শৈল্পিক করতে গিয়ে এমন কিছু করা যাবে না, যা দৃষ্টিকটু হয়। সাবলীল ভাষার ক্ষেত্রে খুবই নজর দিতে হবে। রঙের কাজ করলে তা একটু হালকা করাই ভালো।
দাওয়াতপত্র বানানোর জন্য সবচেয়ে উপযোগী জায়গা হচ্ছে পুরানা পল্টন। কারণ, দাওয়াতপত্র বানানোর বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এখানেই। তাই এখানে খুব সহজেই গায়ে হলুদ, বিয়ে ও বৌভাতের জন্য নানা রকম আকর্ষণীয় দাওয়াতপত্র পাওয়া যাবে। কার্ড-প্রতি খরচ হবে সর্বনিম্ন পাঁচ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা।
আজাদ প্রোডাক্টসের কার্ড বিভাগের সুপারভাইজার এহতেশাম আহমেদ বলেন, ‘আমরা এবার সাতটি নতুন কার্ড বাজারে এনেছি। প্রতি সপ্তাহেই আমাদের নতুন নতুন কার্ড আসে। এবার যে কার্ডগুলো এসেছে, তার দাম ৪০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। এ কার্ডগুলোতে আমরা সোনালি ও রুপালি ডিজাইনের শাইনিং ফয়েলের কাজ করেছি। কোনো কোনো কার্ডে আবার সাদা পাথরের কাজও করা আছে।’ এ ছাড়া তাঁদের পুরোনো অজস্র কার্ডের সমারোহও আছে। কেউ চাইলে আজাদ প্রোডাক্টস থেকে নিজের পছন্দমতো কার্ড বানিয়ে নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে কার্ডের সংখ্যা কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ হতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের ১০ দিন আগেই তাঁদের জানাতে হবে। তাঁরা লাল, সাদা ও মেরুন রঙের হেলমেট বোর্ড, সুইডেন বোর্ড, এমবোস বোর্ড দিয়ে বিয়ের দাওয়াতপত্র বানিয়ে থাকেন।
এ ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠান বিয়ের দাওয়াতপত্র হাতে বানিয়ে থাকে। ঢাকার ইস্টার্ন প্লাজায় ক্রিয়েশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান হাতে বানানো কাগজ দিয়ে দাওয়াতপত্র তৈরি করে। তারা ডিমের খোসা দিয়ে বানানো এক ধরনের বোর্ড দিয়েও কার্ড তৈরি করে। ঢাকার ধানমন্ডির নন্দন কুটিরও হাতে বানানো দাওয়াতপত্র তৈরি করে। তাদের অর্ডার দিয়ে নিজেদের পছন্দমতো কার্ডও বানিয়ে নেওয়া যায়।
আজাদ প্রোডাক্টস ছাড়াও পুরানা পল্টনে আইডিয়াল প্রোডাক্টস ও হ্যাপি প্রোডাক্টস বিয়ে ও বৌভাতের দাওয়াতপত্র বানিয়ে দেয়। এ ছাড়া বাংলাবাজার, নীলক্ষেত ও কাঁটাবনেও বেশ কিছু দাওয়াতপত্র বানানোর দোকান আছে, যেখান থেকে সস্তা দরে দাওয়াতপত্র বানানো যায়।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ০৫, ২০১০
Leave a Reply