হাইলাইটস
- এই অতিমারী (Covid) আমাদের কাছে ‘সুস্থ থাকা’ কথাটার সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছে।
- ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং কোভিড-১৯ (Covid 19)আটকানো নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে।
- সংবাদমাধ্যম এবং সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়ার সেরা উপায় সম্বন্ধে গাদা গাদা মেসেজ মানুষের কাছে এসে পৌঁছচ্ছে, যার অনেকগুলোই পরীক্ষিত নয়।
মাংস খেলে করোনা (Covid) হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, দেওয়ালের রঙের কোম্পানি এবং আসবাবপত্রের ব্র্যান্ডগুলো এমন প্রোডাক্ট তৈরি করেছে যা কোভিড-১৯ (Covid 19) ভাইরাস থেকে সুরক্ষার গ্যারান্টি দেয়, মিথানল অ্যালকোহল খেলে করোনাভাইরাস (Coronavirus) সেরে যায় এগুলো হল কয়েকটা মিথ যা হু এবং সিসিএ (কনজিউমার প্রোটেকশন রেগুলেটর) পর্যন্ত খণ্ডন করেছে। অধিকাংশ ভুল তথ্যের এই বিশৃঙ্খল প্রচারের মধ্যে পড়ে মানুষ স্বাস্থ্যরক্ষার মৌলিক বিষয়গুলো থেকেই দূরে সরে গেছে।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, যোগাসন বা ধ্যানের মত ঘরের ভিতরেই করা যায় এমন কোন শারীরিক কসরত আমাদের রুটিনের মধ্যে রাখা — এগুলো আমরা সহজেই করতে পারি অথচ গ্রাহ্য করি না। একইভাবে আমরা জেনেও অগ্রাহ্য করি যে ভিটামিন আর মিনারেলের সুষম আহার হল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করার বিশ্বাসযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য উপায়। বহু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় এ কথা বারবার প্রমাণিত হয়েছে এবং এ-ও প্রমাণিত যে কোভিড-১৯ (Covid 19) প্রতিরোধে এবং চিকিৎসায় ভিটামিন আর মিনারেলের জরুরি ভূমিকা আছে। কিন্তু কোন কোন ধর্ম ভিটামিন আর মিনারেলগুলোকে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক এজেন্টে পরিণত করে?
ভিটামিন আর মিনারেলকে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টও বলা হয়। এগুলো ফিজিকাল ব্যারিয়ার, সেলুলার ইমিউনিটি আর অ্যান্টিবডি উৎপাদনকে সমর্থন করে তিনটে স্তরে শরীরের স্বাভাবিক রক্ষণ তৈরি করে। প্রমাণিত হয়েছে যে জিঙ্ক মানবদেহকে ভাইরাস প্রবেশের হাত থেকে আটকায়। সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে ভাইরাস রেপ্লিকেশন আটকায়, আবার শরীরের ইমিউন রেসপন্সে ভারসাম্যও বজায় রাখে। ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্ট বিভিন্ন ভ্যাক্সিনে শরীরের অ্যান্টিবডি রেসপন্সের উন্নতি ঘটায় বলে দেখা গেছে। ভিটামিন সি শরীরের প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় বলে প্রমাণিত হয়েছে।
একইভাবে ভিটামিন ডি ক্যালশিয়াম ও হাড়ের মেটাবলিজমে সাহায্য করার সঙ্গে সঙ্গে শক্তিশালী ইমিউনো-রেগুলেটর হিসাবেও কাজ করে। এই ভিটামিনগুলোর অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দমে যেতে পারে, ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে, মর্বিডিটি এবং মর্ট্যালিটিও বেড়ে যেতে পারে। অতএব জিঙ্ক, ভিটামিন এ, সি আর ডি আমার রোজকার খাওয়া দাওয়ার অত্যাবশ্যক উপাদান।
এই মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টগুলো সাধারণ খাবার জিনিসেই থাকে। যেমন ডিম, ছোলা আর মসুর ডালে জিঙ্ক থাকে; দুধ আর দইতে থাকে ভিটামিন এ; লেবু জাতীয় ফল আর আলুতে থাকে ভিটামিন সি; আর পালং শাক ও মাশরুমে থাকে ভিটামিন ডি।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শরীরের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের প্রয়োজন কেবল স্বাভাবিক উৎস থেকে মেটে না। তাই একজন ডাক্তার বা ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট নেওয়া দরকার। পরিশেষে বলা দরকার যে শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম তৈরি করার বিশ্বাসযোগ্য এবং কার্যকরী উপায় খুঁজে পাওয়া আগে কখনও এত জরুরি ছিল না। আর এটাও পরিষ্কার যে আমাদের সামগ্রিক ভাল থাকায় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ভূমিকা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে। এই যে একগুচ্ছ উপকারিতার কথা উপরে লেখা হয়েছে, সেগুলো থেকে বোঝা যায় যে স্বাস্থ্যরক্ষার মৌলিক বিষয়গুলোতে আমাদের ফিরে যাওয়া উচিত এবং জিঙ্ক, ভিটামিন এ, সি আর ডি অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের যে সুবিধাগুলো দিতে পারে সেগুলোর উপর জোর দেওয়া উচিত।
ডাঃ কাজল গাঙ্গুলি, সিনিয়র ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-06-20 12:13:14
Source link
Leave a Reply