জেনে বা না জেনে গড়ে তোলা অভ্যাস ওজন বাড়ানো, অসুস্থতা এমনকি ত্বকে বয়সের ছাপও ফেলতে পারে।
মানুষ অভ্যাসের দাস। আর সেই দাসত্ব যদি শরীরে বাজে প্রভাব ফেলে তবে সেখান থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করাই হবে মঙ্গল।
অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া: মিষ্টি খাবার খাওয়া মানেই বাড়তি ওজন ও চেহারায় বয়সের ছাপ যোগ হওয়া।
‘ক্লিনিকাল ডার্মাটোলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণার বরাত দিয়ে ‘ইট দিস নট দ্যাট’ ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানান হয়, মিষ্টি খাবার ত্বকের ‘কোলাজেন’ ও ‘ইলাস্টিন’ ক্ষতিগ্রস্ত করে। যা ত্বকের তারুণ্যভাব কমায়।
বয়সের ছাপ এড়াতে মিষ্টি পানীয় ও প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
‘আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি’র পরামর্শ অনুযায়ী, বয়সের ছাপ এড়াতে প্রচুর তাজা সবজি ও ফল খাওয়া উপকারী।
সমিক্ষা থেকে তাদের পরামর্শ “অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি বা অন্যান্য পরিশোধিত শর্করাযুক্ত খাবার বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করতে পারে।”
অপর্যাপ্ত ঘুম: দেহ ও মনকে নতুনভাবে সক্রিয় করতে ঘুমের প্রয়োজন।
‘ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টাল ডার্মাটোলজি’তে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যায়, যে সকল নারী পর্যাপ্ত ঘুমায় তাদের ত্বক ৩০ শতাংশ ভালো, সুরক্ষিত ও পুনরুজ্জীবিত হয়। আর তাদের মাঝে বলিরেখা পড়ার ঝুঁকিও কম থাকে।
এছাড়াও, পর্যাপ্ত ঘুম দীর্ঘস্থায়ী হৃদরোগ, ক্যান্সার, স্মৃতিভ্রংশ ইত্যাদি থেকে সুরক্ষিত রাখে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন’ দৈনিক সাত থেকে নয় ঘন্টা ঘুমানোর পরামর্শ দেয়। ঘুমাতে না পারলে বা ঘুমে কোনো সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
অতিরিক্ত মদ্যপান: অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ দেহের ভেতরে ও বাইরে ক্ষতি করে। ত্বকে পানি শূন্যতা, প্রদাহ, সূক্ষ্ম নালীর ভাঙন ইত্যাদি সমস্যা এমনকি হৃদপিণ্ড ও যকৃতের ক্ষতি করে ও কাজে বাঁধা দেয়।
অকালে বয়সের ছাপ দূর করতে, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে বিশেষজ্ঞরা অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন।
পর্যাপ্ত শরীরচর্চার অভাব: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে এবং অকালে বয়সের ছাপ দূর করতে সহায়তা করে শরীরচর্চা।
‘আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি (এএডি)’ অনুযায়ী সাধারণ পরিমাণে শরীরচর্চা রক্ত সঞ্চালন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে ত্বকে তারুণ্য বৃদ্ধি পায়।
‘দ্যা আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন’ দৈনিক ৩০ মিনিট সাধারণ মাপের শরীরচর্চার করার পরামর্শ দেয়। এতে হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে। আর ত্বকের তারুণ্য বজায় থাকে।
ধূমপান: সিগারেটের ধোঁয়ায় প্রচুর ‘টক্সিন’ বা বিষাক্ত পদার্থ থাকে যা রক্তনালীগুলোকে সংকুচিত করে তোল এবং ত্বকে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছাতে বাধা দেয়।
এএডি’র তথ্যানুসারে, “ধূমপান দ্রুত ত্বকে বুড়োটেভাব নিয়ে আসে। এর ফলে ত্বকে বলিরেখা, মলিন ভাব, ফোলাভাব ইত্যাদি দেখা দেয়।”
এছাড়াও, এর বিষাক্ত পদার্থ রক্তনালী, হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, যকৃত ও কিডনির ক্ষতি করে।
‘জেএএমএ’ সাময়িকীতে প্রকাশিত ক্লিভল্যান্ডের ‘ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটি’র সমীক্ষা অনুসারে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন যে, ধূমপায়ীদের তুলনায় অধূমপায়ীদের বলিরেখা পড়ার সম্ভাবনা থাকে তিনগুন বেশি।
সুস্থ থাকতে ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ধূমপান থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এম ইউ/১৫ জুন ২০২১
স্বাস্থ্য | DesheBideshe
2021-06-15 22:16:25
Source link
Leave a Reply