বর্তমানে লোভনীয় চাকরির মধ্যে অন্যতম মার্চেন্ডাইজিং। এদেশে চাকরির প্রচুর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেবল উন্নত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাবে ব্যাপক সংখ্যক শিক্ষার্থী এই চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। প্রশিক্ষণের জন্যে ভাল এবং পেশাদারী ইনস্টিটিউট বেছে নিতে হবে। কেননা চাকরিদাতা নিয়োগ দিয়ে থাকে কাজ ও এর আউটপুট পাবার জন্যে। এজন্যে প্রয়োজন হয় দক্ষতার, প্রশিক্ষণ ভিত্তিক জ্ঞানের। পাশাপাশি এ জন্যে এই শিল্পের পণ্য ও অন্যান্য বিষয়ে মানগত বিষয়ে দক্ষতা বিচারের ও কিছু প্রসঙ্গ থাকে। যে কারণে দক্ষ লোকের অভাবের জন্যে আমাদের দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে অনেক বিদেশী দক্ষ লোক কাজ করে। তবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে এদেশের ব্যাপক সংখ্যক তরুণ শিক্ষিত শ্রেণী উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ পেতে পারে।
প্রতিটি পোশাক কারখানাতেই অভিজ্ঞ মার্চেন্ডাইজার দরকার রয়েছে। এ কারণেই মার্চেন্ডাইজিং চাহিদাসম্পন্ন একটি পেশা। এ পেশায় রয়েছে যথেষ্ট আয়ের সুযোগ। তাই এ পেশার ব্যাপারে সবার দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। মার্চেন্ডাইজার ও মার্চেন্ডাইজিং তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য খুবই গুরশুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা। তাঁর দায়িত্ব অপরিসীম। সোজা কথায় পণ্যের উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রি পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াগুলো নিপুণ দক্ষতার সঙ্গে যিনি তত্ত্বাবধান করে থাকেন তিনিই মার্চেন্ডাইজার। আর এ প্রক্রিয়া বা পেশাকেই বলা হয় মার্চেন্ডাইজিং। এটি যথেষ্ট সম্মানজনক ও আকর্ষণীয় এবং এর বেতনও অন্যান্য পেশার তুলনায় অনেক বেশি। পেশাটি যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং এবং এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের কদরই বেশি। চাকরির ক্ষেত্রে তৈরি পোশাক শিল্পকে একটা লাইফলাইন বলা যায়। কারণ, মার্চেন্ডাইজিংয়ের প্রধান চাকরির ক্ষেত্র হলো আরএমজি খাত। দেশের দক্ষতাসম্পন্ন জনশক্তি এ ক্ষেত্রে বেশি প্রয়োজন। বর্তমানে আমাদের দেশে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি তৈরি পোশাক কারখানা আছে। অতএব খুব নিশ্চিত করে বলা যায়, কারও যদি এই বিষয়ে ডিগ্রি এবং প্রশিক্ষণ থাকে তাহলে শুরুতেই আকর্ষণীয় বেতন-ভাতা নিয়ে যেকোনো পোশাক কারখানায় চাকরি পাবে। তা ছাড়া দ্রুত পদোন্নতির সম্ভাবনাও রয়েছে। বাইরের দেশগুলোও আমাদের দেশ থেকে এ খাতে কাজ করার জন্য জনশক্তি রপ্তানি করে থাকে। সে ক্ষেত্রে উচ্চ বেতনে বাইরের দেশগুলোতেও এধরনের জনশক্তি কাজ করার সুযোগ পেতে পারে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে আমাদের দেশের গার্মেন্টস পোশাকের ভালো চাহিদা থাকায় এবং কোটা প্রথা উঠে যাওয়ায় বেশিরভাগ লোক এখন এধরনের কাজের দিকে মনোনিবেশ করছে। আর ক্রমেই বাড়ছে মার্চেন্ডাইজারদের চাহিদা।
মার্চেন্ডাইজিংয়ে পেশা গড়ার জন্যে ডিপ্লোমা এবং সার্টিফিকেট কোর্সই অনেক ভালো। কেননা চাকরি এবং কর্মক্ষেত্রে কাজের দক্ষতাকে বেশি মূল্যায়ন করা হয়। এ পর্যায়ে বিশেষজ্ঞরা এমবিএ বিবিএ প্রভৃতি নাম সর্বস্ব ডিগ্রি অর্জনকে বিরাট অর্থ ও সময় নষ্ট বলে মনে করে থাকে। এদেশে লংকান ক্লোথিং ম্যানেজমেন্ট ইনষ্টিটিউট (এলসিএমআই) দীর্ঘদিন ধরে এধরনের ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্সে ডিগ্রি প্রদান করে আসছে। এখানে ফ্যাকাল্টি হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন দেশের খ্যাতনামা শিক্ষকগণ যাদের প্রায় সবারই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী রয়েছে। যে কারণে শিক্ষার্থীরা প্র্যাকটিক্যালসহ বাস্তব ও প্রকৃত শিক্ষা পাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা ক্যারিকুলাম কর্মপোযোগী হবার কারণে ডিগ্রীধারীদের চাহিদা ক্রমে বেড়ে চলেছে।
প্রতিষ্ঠানটি ইন্ট্রোডাকশন টু মার্চেন্ডাইজিং, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, টেক্সটাইল ফাইবার এন্ড ইয়ার্ন, ওভেন ফেব্রিক্স, নিটওয়্যার ফেব্রিক্স, সোয়েটার ডিজাইন, টেক্সটাইল ফিনিশিং, প্রিন্টিং এন্ড টেষ্টিং, প্যাটার্ন মেকিং, কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট, প্রডাকশন প্লানিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট, সোস্যাল কমপ্লায়েনস, কমার্সিয়াল প্রসিডিউর, কন্জামসশন এন্ড গার্মেন্টস কষ্টিং প্রভৃতি বিষয়ের উপর ডিগ্রি প্রদান করছে। আরো জানতে, ফোন-০১৭১৩০৪৭১১৫, ০১৫৫২২০১৭৮১।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জানুয়ারী ০২, ২০১০
Leave a Reply