কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পরিবেশবিজ্ঞানী সম্প্রতি নিউইয়র্ক শহরের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে শিশুদের হাঁপানিতে (অ্যাজমা) আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা নিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। এসব বিশ্লেষণ নিয়ে জার্নাল অব এপিডেমিওলজি অ্যান্ড কমিউনিটি হেলথে একটি নিবন্ধও প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, নিউইয়র্ক শহরের অপেক্ষাকৃত কম গাছপালাসমৃদ্ধ এলাকায় আশির ও নব্বইয়ের দশকে শিশুদের হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ৫০ শতাংশ বেড়েছে। দুঃসংবাদ হচ্ছে, নিউইয়র্কের ১৫ বছরের কমবয়সী যত শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়, এর বেশির ভাগই হাঁপানিতে আক্রান্ত।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ঘনবসতি, পরিবেশদূষণ ও জীবনযাত্রার নি্নমানের পাশাপাশি গাছগাছালির সংখ্যার সঙ্গে হাঁপানির সম্পর্ক রয়েছে। তাঁদের হিসাবে, নিউইয়র্ক শহরে বর্তমানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড়ে ৬১৩টি গাছ রয়েছে। এ অবস্থায়ও শহরের ৯ শতাংশ শিশু হাঁপানিতে আক্রান্ত।
তাঁদের মতে, যদি প্রতি বর্গ কিলোমিটারে আরও ৩৪৩টি করে গাছ থাকত, তাহলে চার থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার হার অর্ধেক কমে যেত।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, শিশুরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঘরের ভেতর বা বাড়ির আঙিনায় গৃহপালিত পশুপাখি, যেমন-কুকুর, বিড়াল, খরগোশ প্রভৃতি নিয়ে খেলাধুলা করে। এসব থেকে হাঁপানির জীবাণু তাদের শরীরে প্রবেশ করে। বৃক্ষশোভিত খোলা প্রান্তর পেলে শিশুরা ঘরের বাইরে খেলাধুলা করতে আগ্রহী হয়। গাছপালাসমৃদ্ধ এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা থাকে কম।
অবশ্য অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, গাছের পুষ্পরেণু কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিশুদের হাঁপানির প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। যা হোক, গবেষক দলের প্রধান ড· জিনা লোভাসি বলেছেন, গাছপালার কিছু নেতিবাচক প্রভাব শিশুদের ওপর পড়লেও সার্বিকভাবে এর উপকারিতা অনেক বেশি।
কাজী ফাহিম আহমেদ
বিবিসি হেলথ অনলাইন অবলম্বনে
সূত্রঃ প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৩, ২০০৮
Leave a Reply