বিজ্ঞানীরা বলেন, আমাদের বেশির ভাগ মনের আবেগ আসে মাথা থেকে। ফলে কাব্যজগতে বুকের অবস্থান দুর্বল হয়ে গেছে। আগে ভাবা হতো, বুকের মাঝে হ্নদয় ওরফে হার্ট, এ হার্ট ওরফে হৃদয় হতে আসে সব আবেগ। ফলে কারো প্রেম ভেঙে গেলে আমরা বলি বুক ভেঙে খান খান। তার সঙ্গে হ্নদয়খানও। তবে বুকের ব্যথা (প্রেমঘটিত নয়) মোটেও হেলাফেলার জিনিস নয়। সেখান থেকেই হয় হার্ট অ্যাটাক। যার মধ্য দিয়ে মানুষ তার জীবন হারিয়ে ফেলে। প্রেমিকদের কাছে হ্নদয়ের ব্যথা অনেক কাব্যিক কিন্তু বাস্তবে তা ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক। হ্নদয় ভেঙে গেলে মন ভেঙে যায়, তার বেচে কি লাভ। কিন্তু ডাক্তাররা এ রোমান্টিকতার ঘোর বিরোধী। বিশেষ করে হার্টের ডাক্তাররা। কারণ তাদের মতে, হ্নদয় যদি আক্রান্ত হয় মানে হার্ট অ্যাটাক হলে মানুষের বেচে থাকার সম্ভাবনা কঠিন এবং তাকে অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয়। এ কারণে হার্টের ডাক্তাররা বলেন, কেউ যদি মনে কষ্ট পুষে রাখে এবং চিন্তায় পড়ে যান তাহলে তার হার্টের সমস্যা হতে পারে। এর জন্য অবশ্য উদ্বিগ্ন আর অহেতুক টেনশন দূর করার চিকিৎসা করা জরুরি। মানে মনকে ভালো রাখতে হবে আর কি।
অনেকের মতে, হ্নদরোগে কোলেস্টেরল কমাতে হবে এবং আরো ব্যায়াম করতে হবে। ফলে কিছু সমস্যার সমাধান হয় বটে কিন্তু এতে হার্টের ব্যথার পুরো চিত্রটি মেলে না। বেশি বেশি চিন্তার কারণেও হার্টের সমস্যা তৈরি হওয়া শুরু হতে থাকে। কাজেই হার্টের জন্য অন্তত চিন্তামুক্ত থাকার শুরু করুন। এর জন্য যোগব্যায়াম এবং রিলাক্সেশন শুরু করুন। এতে মন বলে বিজ্ঞানীদের কাছে যে জিনিসের অস্তিত্ব নেই তা ভালো থাকবে।
যদি আমরা সবাই জানি চিন্তাকে দূরে রাখতে বললেই চিন্তা চলে যায় না। চিন্তা আসে কোথা থেকে।
আমাদের চারপাশের নানা কর্মকা- এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তার উদ্ভব হয়। চিন্তা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে নষ্ট করে। একদিকে চিন্তা থেকে মেন্টাল ডিসঅর্ডার বা মানসিক জটিলতা তৈরি হয় অন্যদিকে এর মধ্য দিয়ে তৈরি হচ্ছে বুকের ব্যথা। আমাদের দেশে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা কম নয়। এদের বেশির ভাগই চিন্তাযুক্ত জীবন কাটায়।
চিন্তা থেকে যে ভয় তৈরি হয় তা মোটেও ভালো কিছু নয়। বিজ্ঞানীর চিন্তার মাধ্যমে উদ্বিগ্নতা তৈরি হওয়াকে অ্যাংজাইটি অ্যাটাক বলে মনে করেন।
এ ধরনের অ্যাংজাইটি অ্যাটাকের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কয়েকটি টিপস। তবে পাঠক এসব টিপসের মানে এই নয় যে এগুলো প্র্যাকটিস করার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উদ্বিগ্ন হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এগুলো যদি কেউ প্রতিদিন চর্চা করে তাহলে অহেতুক উদ্বিগ্ন হওয়ার পরিমাণ কমে যাবে আশা করি ।
গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম মানুষের চাপ যাকে ইংরেজিতে আমরা বলি স্ট্রেস সেটা কমাতে সাহায্য করে। তবে চিন্তা যেমন বেশি করা ভালো নয় ব্যায়ামও তেমনি বেশি করা ভালো নয়। বেশি ব্যায়াম মনের চাপ কমালেও শরীরের ওপর আবার চাপ তৈরি করতে পারে। ব্যায়াম করতে হবে এবং তা প্রতিদিন করতে হবে। সকালে ব্যায়াম করতে পারলে সবচেয়ে ভালো। কারণ তা মনকে সারাদিন সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
চা, কফি বা চকোলেট অনেকেই পছন্দ করে। কিন্তু এ জাতীয় দ্রব্য মানুষের স্নায়ুকে উত্তেজিত করে। বর্তমানে বেশির ভাগ মানুষ এসব জিনিস ছাড়া চলতেও পারে না। যেহেতু এগুলো মানুষ গ্রহণ করে তাই যতোটা কম গ্রহণ করা যায় ততোই উদ্বিগ্ন নিরসনে কার্যকর। চিনি হচ্ছে রিফাইন বা প্রক্রিয়াজাত কার্বহাইড্রেট। এ ধরনের খাবার শরীরে সরাসরি বেশি গেলে তা উদ্বিগ্নতা বাড়াতে পারে।
বেশি পরিমাণ ভিটামিন জাতীয় খাবার শরীরের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি চাপ কমায় এবং ভিটামিন বি নার্ভকে স্বাস্থ্যবান রাখে।
গবেষণায় দেখা গেছে, মাছের তেলে ওমেগা থ্রি আছে। অনেকের মতে, এটা অ্যান্টি-ডিপ্রেসনার বা মানসিক উদ্বিগ্নতার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
অ্যাংজাইটি উদ্বিগ্নতার চেয়ে বড় কিছু নেই, যা আপনাকে ভীত এবং দুর্বল করে দেবে। উদ্বিগ্নতা তৈরি হলে সে সময় কোনো কাজের মধ্যে ডুবে যাওয়া আরো ভালো। বেশির ভাগ উদ্বিগ্নতা আসে নিজের কাজের মধ্যে যদি স্বচ্ছতা না আসে। কেউ যদি অপরাধ করে ফেলে তাহলে সে চিন্তিত হতে থাকে। তাহলে তার মনের মধ্যে অপরাধ বোধ এবং ভয় কাজ করতে থাকে। জর্জ ওয়াশিংটনের কথা মনে করুন। একবার তিনি একটি গাছ কেটে ফেলেছিলেন যেটি ছিল তার বাবার বাগানের প্রিয় গাছ। ওয়াশিংটন বাবার মারের ভয় না করে তাকে সত্য বলেছিলেন। এতে তার বাবা তাকে কোনো শাস্তি দেননি। কাজেই ঘটনা ঘটার পর ভয় না করে সত্যের মুখোমুখি হোন। আলোচনা করুন আপনার ঘনিষ্ঠজনের সঙ্গে যদি তা খুব গোপনীয় ব্যাপার হয় তবুও।
চিন্তা করা মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। তবে দুশ্চিন্তা মানুষের শরীরের ও মনের ক্ষতির কারণ। দুশ্চিন্তা কমিয়ে আনতে থাকুন। আনন্দে থাকুন, ভালো থাকুন।
দৈনিক যায়যায়দিন, ডিসেম্বর ২০০৭
Samrat
আমি regular প্রতিদিন একটা সময় চিন্তা করি আমি কাল থেকে নামাজ পরবো, study করবো। কিন্ত আমি টা পারি না।আমি work করতে like করি। কিন্ত কোন কাজ পাই না।আমার কোন Taka পয়সার Pblem নাই |
আমার বসে থাকতে ভালো লাগে। কোথায় যেতে ভালো লাগে না। আমি এই pblem ও আজ ২ বছর দরে আছি।
Im student of Cox’s Bazar Gov’t College. Honours 3rd year. sub-(ac)
Bangla Health
দুনিয়ায় অন্য মানুষের ভালোর জন্য অনেক কিছু করা যায়। কিছু একটা শুরু করে দিন।
nahid
মারাত্মক এক সমস্যায় পড়েছি। সারাক্ষন মৃত্যুর কথা চিন্তা আসে। রাতেও এই কারনে ঘুমাতে পারি না। আমার কাছে শুধু মনে হয় আমি আর বেশিদিন বাঁচবো না।আমি চাই না এই নিয়ে চিন্তা করতে কিন্তু সারাক্ষন শুধু মৃত্যু চিন্তা আসে। একটা ব্যাপার নিয়ে সারাক্ষন চিন্তা করলে এমনিতেই মানুষ অসুস্থ হয়ে যায়। আমার এখন মনে হচ্ছে আমি একই চিন্তা করতে করতে কোনদিন পাগল না হয়ে যাই। কি করবো বুঝতে পারছি না।
কেউ হেল্প করুন প্লিজ।
Bangla Health
একা একা থাকবেন না। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের লোকজনদের সাথে সময় কাটান। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। কোন ভালো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।